Loading..

খবর-দার

০৬ জুলাই, ২০২১ ০৮:৫৭ পূর্বাহ্ণ

ইংল্যান্ডে জুলাইয়েই মুক্ত জীবনের আশা দেখাচ্ছেন বরিস জনসন

সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি আগামী ১৯ জুলাই ইংল্যান্ডে কোভিড-১৯ মহামারীর সব ধরনের বিধি-নিষেধ তুলে দেওয়ার ঘোষণা দেন বলে বিবিসি ও রয়টার্স জানিয়েছে।

সিদ্ধান্ত নিলেও চূড়ান্ত ঘোষণা আগামী ১২ জুলাই সর্বশেষ পরিস্থিতি দেখে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন জনসন।

টিকার উপর ভর করে জনসন মহামারী ঠেকানোর সব বাধা সরিয়ে ফেলার এমন সিদ্ধান্ত নিতে চাইলেও করোনাভাইরাসের ডেল্টা সংক্রমণের দাপটের মধ্যে তা আগেভাগে হয়ে যাচ্ছে বলে অনেকে সতর্ক করেছেন।

এমনকি জনসনের সঙ্গে থাকা ইংল্যান্ডের প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা অধ্যাপক ক্রিস হুইট বলেছেন, তিনি মাস্ক পরা ছাড়বেন না।

২০১৯ সালের শেষে নতুন করোনাভাইরাস চীন থেকে ছড়িয়ে বিশ্বে মহামারী বাঁধিয়ে দেওয়ার পর গত বছর এই সময়ে ইংল্যান্ডে ছিল চরম বিপর্যয়কর অবস্থা।

মহামারী নিয়ন্ত্রণে অন্য সব দেশের মতো ইংল্যান্ডকেও মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, অতিথি নিয়ন্ত্রণসহ নানা বিধি-নিষেধ আনতে হয়। ফলে মানুষের জীবনযাপন, চলাচল গণ্ডির মধ্যে আবদ্ধ হয়ে পড়ে।

বিশ্বচিত্র ২০২০: ত্রস্ত, তটস্থ, অচেনা পৃথিবী

বছর গড়িয়ে যুক্তরাজ্যসহ ইংল্যান্ডে পরিস্থিতির বেশ উন্নতিই হয়েছে বলা চলে; যদিও ভারতে উদ্ভূত করোনাভাইরাসের ডেল্টা ধরন সংক্রমণ আবার বাড়িয়ে তুলেছে।

সোমবারও যুক্তরাজ্যজুড়ে ২৭ হাজার ৩৩৪ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে, নয় জনের মৃত্যুর খবর এসেছে। দেশটিতে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৪৯ লাখ ৪৭ হাজার ২৭৪ জন।

এর মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন মানুষকে স্বাভাবিক জীবনযাপনে ফেরার রোডম্যাপ নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসেন।

তিনি যে রূপরেখা দিয়েছেন, তাতে ১৯ জুলাইয়ে বিধি-নিষেধ তুলে দেওয়ার পর জনসমাগমস্থলে কেউ ভদ্রতাবশত মাস্ক পরতে পারবেন, তবে কোনো বাধ্যবাধকতা থাকবে না।

সামাজিক দূরত্ব মানার বাধ্যবাধকতা তুলে দেওয়া হলে এক ঘরে ছয়জনের বেশি মানুষ আবার থাকতে পারবে।

বিধি-নিষেধ কিছু শিথিলে এই চলাচল লন্ডনের অক্সফোর্ড স্ট্রিটে; এখন সব বিধি-নিষেধই তুলে দিতে চাচ্ছেন বরিস জনসন। ছবি: রয়টার্স

বিয়ে কিংবা শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠান স্বাভাবিক সময়ের মতোই করা যাবে। যে কোনো অনুষ্ঠান সীমিত সংখ্যক অতিথি নিয়ে আয়োজনের বাধ্যবাধকতাও থাকবে না। কেয়ার হোমে কাউকে দেখতে যাওয়ার ক্ষেত্রে বিধি-নিষেধ থাকবে না।

তাহলে দেড় বছর পর ইংল্যান্ডের বারগুলো আবার মুখর হবে। গণপরিবহণেও কঠোর বিধি-নিষেধগুলো আর থাকবে না।

মহামারীকালে নানা বিধি-নিষেধ আরোপে স্থানীয় প্রশাসনে ক্ষমতাও বাতিল হবে। স্কুল পরিচালনা, ভ্রমণ, আইসোলেশন নিয়েও নতুন পরিকল্পনা আসবে।

কোনো অনুষ্ঠানে অংশ নিতে টিকার সনদ কিংবা কোভিড পরীক্ষা করিয়ে আসার বাধ্যবাধকতা না থাকলেও বেসরকারি কোনো প্রতিষ্ঠান তার মতো করে এই সংক্রান্ত নিয়ম করতে পারবে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।

কোভিডের সংস্পর্শে আসায় আইসোলেশনে কেট মিডলটন  

মুক্ত জীবনের আশার সুর শোনানোর পাশাপাশি সতর্কবার্তাও দিচ্ছেন বরিস জনসন।

এই মাসের শেষ দিকে দৈনিক সংক্রমণ ৫০ হাজারে পৌঁছতে পারে, আর তাতে মৃত্যুর সংখ্যাও বাড়তে পারে বলে সতর্ক করেছেন তিনি।

তবে ব্যাপক হারে টিকাদানের সাফল্যের দিকটি মনে করিয়ে তিনি বলেছেন, “এখন যদি আমরা করতে না পারি, তাহলে কখন করব?”

রয়টার্স লিখেছে, টিকা গ্রহণের পর থেকে কিছুটা ভালো অবস্থানে রয়েছে যুক্তরাজ্য। সোমবার পর্যন্ত ৮৬ শতাংশ প্রথম ডোজ ও ৬৪ শতাংশ দ্বিতীয় ডোজ টিকা গ্রহণ করেছে।

জনসন বলেছেন, ৪০ বছরের নিচের ব্যক্তিদের ১২ সপ্তাহ নয়, ৮ সপ্তাহ পর দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া শুরু হবে। টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে চল্লিশোর্ধ ব্যক্তিদের মত একই নীতি অনুসরণ করা হবে।