সহকারী শিক্ষক
১৬ জুলাই, ২০২১ ০৭:৫০ অপরাহ্ণ
হোমিওপ্যাথি ও এলোপ্যাথি??? গল্পের মত করে বর্ননা , মনে থাকবে ও বুঝাতে সহজ হবে -
হোমিওপ্যাথি ও এলোপ্যাথি???
গল্পের মত করে বর্ননা দিলে, মনে থাকবে ও বুঝাতে সহজ হবে -
দুই ভাই – বড় ভাইয়ের নাম আনিসুজ্জামান, ছোট ভাইয়ের নাম আসাদুজ্জামান তবে শিশুকাল থেকে ছোটকে সবাই বাবু বলে ডাকে, সে থেকে সবাই এখনো তাকে বাবু বলেই চিনে ।আনিসুজ্জামান এলোপ্যাথি ডাক্তার, বাবু হোমিওপ্যাথি ডাক্তার, আনিসুজ্জামানের রুমটা ছোট একটা ল্যাবরেটরির মত বলাচলে, অনেক গবেষণা করেন, একদিন সকালে আনিসুজ্জামান বাবুকে ডেকে
পাঠালেন –
বাবু – ভাইয়া আমাকে ডেকেছ ?
আনিসুজ্জামান – হ্যাঁ, আমি ও আমার দল মিলে গবেষণা করে একটা
রোগের জীবাণু আবিষ্কার করেছি,
অনেক আনন্দ লাগছে, সুধু পারলামনা তোদের ঔষধ খুঁজে বের করতে, তোদের ঔষধে পানি আর স্প্রিট ছাড়া কিছুই
পাইলা-মনা, আমি অনুরুধ করব এই ভুয়া হোমিওপ্যাথি ছেড়ে ব্যবসা কর,
অন্তত মানুষ ঠকানর পেষাটা বাদ দে ।
বাবু – ভাইয়া আমি কিন্তু মনে করি, হোমিওপ্যাথি ও এলোপ্যাথি তার নিজ নিজ অবস্থানে থেকে, মানবতার কল্যাণে অবদান রাখছে । তাই তাচ্ছিল্য
না করে জানতে চেষ্টা কর । হোমিওপ্যাথিকে
তার নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে পরখ কর, তাহলে আসল সত্য বুঝতে পারবে, এলোপ্যাথি দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে হোমিওপ্যাথিকে বিচার করলে তর্কই বাড়বে সত্য উম্মচিত হবেনা ।
আনিসুজ্জামান – এইতো তোদের একটি দোষ, তোরা কথা এড়িয়ে
যেতে পারিস, তাইনা ? আমার একথাটার জবাব দিতে পারবি ? আমি একদিন বিবিসির একটি প্রতিবেদনে দেখেছি হোমিওপ্যাথির ৩০ শক্তির ঔষধের পরিমাণ হল – পৃথিবীর আকাশ, সমুদ্র, ভূপৃষ্ঠ ও ভূতলে যত পানি রয়েছে তার মাঝে ১ ফোটা মিশানোর সমান । তার মানে এই
পরিমাণ পানিতে ১ ফোটা পেয়াজের রস মেশালে ঔষধের
নাম হবে “এলিয়ামসিপা ৩০” আর তা দিয়ে সর্দি, হাঁচি, হেফিভার ভালো হবে ? তোর মত পাগল ও
হোমিওপ্যাথিক প্রতারক ডাক্তার ছাড়া কে বিশ্বাস করবে ? কথাটি শেষ করতেই কাজের বোয়া চলে এলো ।
ময়না (কাজের বোয়া) – ভাইজানেরা চা খান । বড় ভাইজান আপনেরে একটা প্রশ্ন করমু বইলা ভাবতাছি, আমার প্রশ্নডা হোনবেন ?
আনিসুজ্জামান – হ্যাঁ বল ।
ময়না – হুনছি টেলিভিশনের ছবি নাকি বাতাসে ভাইসসা ভাইসসা আইসে, তাইলে আপনের এই যন্ত্রডি দিয়া বাতাস পরীক্ষা কইরা দেহা যাইব কি, বাতাসের কোন জাগায় কোন ছবি আছে ?
আনিসুজ্জামান – কি করে যে বুঝাই তোমাকে, তোমার তো ইলেক্ট্রনিক্স বিদ্যা জানা নেই, তবে সহজে বোঝে নাও বাতাসে নয় শূন্যে ছবির সংকেত থাকে আর এ সংকেত টেলিভিশনের যন্ত্রে লাগলে, যন্ত্রটি টেলিভিশনের পর্দায় ছবি বানিয়ে দেখায়, কিন্তু বাতাস বা শূন্য স্থানকে পরীক্ষা করে ছবির অস্তিত্ব খুঁজে
পাওয়া যাবেনা ।
ময়না – ঠোট দুটো কেমন যেন ছড়িয়ে দিয়ে বলল, বুঝলামনা, যাই আম্মাজানকে বলি ।
আনিসুজ্জামান – চা খেতে খেতে ভাবছেন বুঝাতে পারলামনা ? আসলে তাকে ফ্রিকোয়েন্সি ও ইথার সম্পর্কে বললে ভালো হত, না সেতো ……… বুঝবেনা, তারতো এ ব্যাপারে প্রাথমিক ধারনাটাও নাই ।
মা – কি করছ তোমরা দুই ভাই মিলে ? মায়ের পিছনে কাজের বোয়াটাও দাঁড়িয়ে আছে ।
বাবু – হোমিওপ্যাথি নিয়ে বিতর্ক করছি মা, শুনবে নাকি ?
মা – ভারী মজাত তাহলে বসি । ময়নাও বসে গেল ।
আনিসুজ্জামান – তাহলে বুঝা তোর যাদুর ঔষধ কি করে রোগ সাড়ায় ।
বাবু – ভাইয়া তুমি বলছিলে হোমিওপ্যাথির ঔষধ “এলিয়ামসিপা ৩০” এর কথা, তাহলে এটাকেই পরীক্ষা করি, একটু বসুন আমি ঔষধটা নিয়ে আসি । এই নাও “এলিয়ামসিপা ৩০” এখান থেকে ১ ফোটা ১ চামচ পানিতে মিশিয়ে
সেবন করবে ।
ভাইয়া গাণিতিক হিসাবটা মিলিয়ে নাওঃ –
* ১। তুমি যে ঔষধ নিয়েছ তাতে পৃথিবীর আকাশ, সমুদ্র, ভূপৃষ্ঠ ও ভূতলে যত পানি রয়েছে তার মাঝে ১ ফোটা পেয়াজের রস মেশালে যা হবে তা
হল “এলিয়ামসিপা ৩০” ।
* ২। “এলিয়ামসিপা ৩০” এর এক ফোটা = ঐ এক ফোটাই পৃথিবীর সমস্ত
পানি তার মাঝে অদৃশ্য পেয়াজের রস ।
* ৩। গাণিতিক হিসাবে “এলিয়ামসিপা ৩০” এর এক ফোটা =1 : 1E+60 প্রায় ।
* ৪। এক চামচ পানি = ৬০ (ষাট) ফোটা প্রায় । (১ চামচ = ৫ ml এবং১ml = ১২ ফোটা)
অতএব, সূত্র মতে,
১ ফোটা “এলিয়ামসিপা ৩০” = ১টি পৃথিবীর সমস্ত পানিতে অদৃশ্য
পেয়াজের রস ।
১ ফোটা “এলিয়ামসিপা ৩০” , ৬০ ফোটা পানিতে
মেশালে হবে (৬০ x ১) = ৬০ টি পৃথিবীর সমস্ত পানিতে
অদৃশ্য পেয়াজের রস ।
ভাইয়া তুমি তো একটি পৃথিবীর পানিতে মেশানো ১
ফোটা পেয়াজের রসের অস্তিত্ব খুঁজে পাওনা তাইনা ? কিন্তু আমি তোমাকে ৬০ টি পৃথিবীর পানিতে মেশানো ১ ফোটা পেয়াজের রসের অস্তিত্ব প্রমাণ করে দিব ।
আনিসুজ্জামান – রাগ হয়ে অণুবীক্ষণ যন্ত্রটা দেখিয়ে বলল দেখা, চাপা মারার জায়গা পাসনা ……… ।
বাবু – ভাইয়া রাগ করছ কেন আগে তো প্রমাণ হোক । তোমিকি পেরেছ বাতাস বা শূন্যস্থান
পরীক্ষা করে টেলিভিশনের ছবি বের করতে ?
আনিসুজ্জামান – কি বলতে চাস ? এটার সাথে ওটার কি সম্পর্ক ?
বাবু – তুমি বলেছিলে বাতাসে বা শূন্যে সংকেত থাকে আর এ সংকেত টেলিভিশনের যন্ত্রে লাগলে, যন্ত্রটি টেলিভিশনের পর্দায় ছবি বানিয়ে দেখায়, কিন্তু বাতাস বা শূন্যস্থান পরীক্ষা করে ছবির অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাবেনা ।
আনিসুজ্জামান – হ্যাঁ বলেছিলাম । এটা তো বিজ্ঞানের কথা । আমি বলেছি মাত্র ।
বাবু – তাহলে এখন বুঝবে আমি কি বলতে চাই, চামচের পানিতে পেয়াজের রস শক্তি ও সংকেতে পরিণত হয়েছে এখন আর পেয়াজের রস নেই, উপযুক্ত যন্ত্রে দিলে তা রোগ বানিয়ে দেখাবে ।
আনিসুজ্জামান – হায়রে …………। যন্ত্রটার নাম কি ?
বাবু – যন্ত্রটার নাম “মানুষ” ।
আনিসুজ্জামান – মানুষ আবার যন্ত্র হয় নাকি ?
বাবু – মানুষ যন্ত্র হয় না, আমি উদাহারন
দিলাম মাত্র ।
মা – আমি কিন্তু বেশ মজা পাচ্ছি, পরিষ্কার করে বলত বাবা ।
বাবু – মা একটু মনোযোগ দিয়ে বুঝার চেষ্টা করো, বর্তমানে আমাদের ৪ জনের কারোই সর্দি ও হাঁচি নেই, আমরা যদি এক
চামচ পানিতে “এলিয়ামসিপা ৩০” এক ফোটা করে মিশিয়ে প্রতিদিন ৪ বার করে খাই, অল্প দিনের মধ্যেই আমাদের সর্দি ও হাঁচি হবে এবং মনে কিছু বিশেষ উপলব্ধি হবে । আর এ সহজ কথাটা ভাইয়া না বুঝে সুধু সুধু হোমিওপ্যাথিকে গালমন্দ করছে । ভাইয়া আমি
তোমাকে অনুরুধ করব ঔষধটা খেয়ে পরীক্ষা করে দেখো । অন্যের কথায় কান না দিয়ে নিজে পরখ করে
দেখ হোমিওপ্যাথির দাবি সত্যি না মিথ্যা ?
আনিসুজ্জামান – ঠিক আছে তোর চাপাবাজির প্রমাণ দেখব । বলেদে কিভাবে খাব ?
বাবু – ১। সকালে ঘুম থেকে উঠে, ২। অফিসে যাওয়ার
সময়, ৩। অফিস থেকে এসে, ৪। রাতে সোয়ার সময়, এ ৪ বার খাবে ।
আনিসুজ্জামান – কতদিন খাব ?
বাবু – ২ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে প্রতিক্রিয়া আসবে আশাকরি । প্রতিক্রিয়া আসার পরে ঔষধ সেবন বন্ধ করতে হবে তা
নাহলে রোগ লক্ষণ ক্রমে বারতে থাকবে ।
মা – কোন সমস্যা হবে নাতো ?
বাবু – না মা ঔষধ খাওয়া বন্ধ করেদিলে আস্তে আস্তে ভালো হয়ে যাবে । যেটা ভাইয়াকে দিয়েছি তা হালকা প্রতিক্রিয়ার
ঔষধ । তবে কেহ যদি “একোনাইট” নামক ঔষধ পরীক্ষা করে তাহলে রোগীর এত কষ্ট অনুভূত হবে যে রোগী বলবে আমি আর বাচবনা । কেহ যদি “কলোসিন্থ” নামক ঔষধ পরীক্ষা করে তাহলে রোগী অসহ্য
পেটের ব্যথা উপভোগ করবে ।
মা – আমার একটি প্রস্তাব আছে, তা হল আমরা ৪ জন
সবাই মিলে পরীক্ষা করব, কারণ অন্তত আমার ফ্যামিলিতে একটা
সত্যকে অকাট্য ভাবে প্রতিষ্ঠা করতে পারব ।
হ্যাঁ মা আমি রাজি, আমিও, আম্মাজান তাইলে আমিও ওষুধ খামু ।
বাবু - তাহলে আগামী কাল সকাল হতে আমরা
সবাই এ পরীক্ষা শুরু করব ।
৩ দিন পরে কাজের বোয়ার সর্দি ও হাঁচি হতে শুরু
করল, ৪ দিন পরে মা, ৬ দিন পরে দুই ভাই সর্দি ও হাঁচিতে আক্রান্ত হল
আনিসুজ্জামান – এটা তো সিজনাল সর্দি হতে পারে যার কারনে সবাই সর্দিতে আক্রান্ত হয়েছে
। তোর ঔষধে সবার সর্দি লেগেছে তার প্রমাণ কি ?
বাবু – অবিশ্বাসীকে বিশ্বাস করানো কঠিন । যাই হোক তুমি ঔষধ সেবন বন্ধ করনা ধীরে ধীরে রোগ বাড়তে থাকবে এবং
এটাই প্রমাণ যে তোমার সর্দি ও হাঁচি ঔষধ সেবন করার কারনে হয়েছে ।
অপরদিকে বাকি সবাই যথাসময়ে ঔষধ সেবন বন্ধ করার
কারনে রোগ কমতে শুরু করেছে ।
আনিসুজ্জামান ভাবছেন আমাদের নাক-কান বিভাগের
স্যর আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসাবে আমন্ত্রণ পাণ, তিনার মত বিশ্ব নন্দিত ডাক্তার সহ অসংখ্য চিকিৎসা বিজ্ঞানীর কথা ভুল হতে পারেনা !!! আমাকে আরো জানতে
হবে আমি ঔষধ চালিয়ে যাব …… । এরপর তিনার
ক্রমান্বয়ে সর্দি হাঁচির সহিত চোখ জলতে শুরু করল, দু হাতে চোখ ডলে অবস্থা আরো খারাপ করে
ফেলেছে, চোখ দিয়ে পানি
পড়ছে, জ্বর, নাক ও গলায় ব্যথা, কথা বলতে কষ্ট ও শ্বাস কষ্ট শুরু হল । এলোপ্যাথি বিভিন্ন ঔষধ সেবন করেও রোগ ভাল হচ্ছেনা
বাবু – ভাইয়া অনেক হয়েছে এবার ঔষধ পরীক্ষা বন্ধ কর। আমি তোমাকে একজন বিজ্ঞ হোমিওপ্যাথি
ডাক্তারের নিকট নিতে চাই ।
আনিসুজ্জামান – মনে হয় তোর কথাই ঠিক, আমি যাব ।
মা – আমিও যাব তোমাদের সাথে, ডাক্তার সাহেবের
নিকট আমার কিছু জানার আছে ।
ডাক্তার সাহেব রোগীর সমস্ত বর্ণনা শুনে বললেন,
ঔষধ পরীক্ষা বন্ধ করেছেন তাতেই আপনি ধীরে ধীরে ভাল হয়ে যাবেন,
তবে দ্রুত সুস্থ হওয়ার জন্য এ এন্টিডোসটি সেবন করবেন ।
মা – ডাক্তার সাহেব আপনিতো শুনলেন আমরা সত্যকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য এ
পরীক্ষা করেছি ।
ডাক্তার সাহেব – আমি অত্যন্ত খুশি হয়েছি যে আপনারা সত্যকে বুঝার জন্য সচেষ্ট হয়েছেন । পৃথিবীতে যত ঝগড়া মারামারি হানাহানি
হয়েছে তার বেশির ভাগই প্রতিপক্ষকে ভালভাবে না জানার কারনে হয়েছে । বর্তমান সভ্য সমাজে কোনোকিছু পুর্নাঙ্গ রূপে না যেনে মন্তব্য করাকে
মূর্খতা, প্রতিহিংসা বা প্রতিহিংসার প্রভাবে প্রভাবিত বলে সংজ্ঞায়িত করা হয়
।
মা – ঠিক বলেছেন মন্তব্য করার আগে জানতে হবে ও পরমত সহিষ্ণু হতে হবে এটাই সভ্য সমাজের দাবি । আমি হোমিওপ্যাথি
সম্পর্কে জানতে চাচ্ছিলাম ।
ডাক্তার সাহেব – হোমিওপ্যাথিতে ৪৪৯৭ টি ঔষধ প্রুভিং হয়েছে, আপনারা যেভাবে পরীক্ষা করেছেন সে ভাবে প্রতিটি ঔষধ সুস্থ মানুষের শরীরে
পরীক্ষা করা হয়েছে
পরীক্ষা চলা অবস্থায় শরীর ও মনে কিছু পরিবর্তন দেখা দিয়েছে এ পরিবর্তন গুলোই পরীক্ষিত ঔষধের প্রুভিং
লক্ষণ যা লিপিবদ্ধ করে রাখা হয়েছে, কোন ব্যক্তির
শরীরে যদি প্রাকৃতিক নিয়মে উক্ত প্রুভিং লক্ষণ প্রকাশ পায়
তাহলে উক্ত ঔষধ যথা নিয়মে সেবন করালে ঐ ব্যক্তি
সুস্থ হবে । এরূপ চিকিৎসা পদ্ধতির নামই হোমিওপ্যাথি ।
আনিসুজ্জামান – হোমিওপ্যাথিতে এরূপ প্রুভিং লক্ষণ কতগুলো আছে ?
ডাক্তার সাহেব – ১৯৯৫ সালের হিসাব মতে ৪৪৯৭ টি ঔষধের ১,৫০,০০০ (এক লক্ষ পঞ্চাশ হাজার) এর বেশি
লক্ষণ রয়েছে ।
আনিসুজ্জামান – হোমিওপ্যাথি ঔষধ পরীক্ষায় ধরা পড়েনা, তাহলে একে বিশ্বাস করি কি করে ?
ডাক্তার সাহেব – কথাটি উদ্দেশ্য প্রনদিত ও ঠাণ্ডা মাথার অপপ্রচার । আমি একটু বিশ্লেষণ করে তার পর প্রমাণ দিব,
প্রথমে আপনাদের বিষয়টি নিয়ে শুরু করি যেমন BTV থেকে ক্রিকেট খেলা সম্প্রচার করা হলে খেলার মাঠের দৃশ্যপটের কোড সম্বলিত সংকেত তরঙ্গের মাধ্যমে
স্যাটেলাইটে যাবে সেখান থেকে ফিরতি তরঙ্গের মাধ্যমে টেলিভিশনের এন্টেনা হয়ে সার্কিটে পৌঁছাবে, টেলিভিশনের সার্কিট ঐ কোড সম্বলিত সংকেত বিশ্লেষণ করে খেলার মাঠের দৃশ্যপট টেলিভিশনের
পর্দায় দেখাবে ।
অপর দিকে হোমিওপ্যাথির মূল ভেষজ এক ফোটা
পেঁয়াজের রসকে হোমিওপ্যাথি ফার্মাকোপিয়া অনুস্বারে বিভাজন করে ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্র তর করা হয়
যেমন এলিয়াম সিপা ঔষধের ৫ নং শক্তির ১ ফোটা
ঔষধে রয়েছে এক হাজার কোটি ভাগের ১ ভাগ পেঁয়াজের রস, বাকি সবটুকুই স্প্রিট । ৬ নং শক্তিতে
রয়েছে একশত হাজার কোটি ভাগের ১ ভাগ পেঁয়াজের রস, বাকি সবটুকুই স্প্রিট । এভাবে প্রতি এক শক্তি বৃদ্ধি = ১০০ গুন ক্ষুদ্রতর হওয়া ।
বিবিসির প্রতিবেদনে প্রকাশ হয়েছে হোমিওপ্যাথির
৩০ শক্তির ১ ফোটা ঔষধ = ঐ এক ফোটাই পৃথিবীর সমস্ত পানি তার মাঝে অদৃশ্য হোমিওপ্যাথির মূল ভেষজ ।
এত সূক্ষ্ম অবস্থায় মূল ভেষজের অস্তিত্ব খোঁজে
পাওয়া যায়না, ভেষজ শক্তিতে রুপান্তরিত হয়, সুস্থ ব্যক্তি ঐ
ঔষধ নির্দিষ্ট নিয়মে কিছুদিন সেবন করলে, শরীরে ও মনের পরিবর্তন দেখা দেয়,
এ পরিবর্তনকে ঔষধ শক্তির বহিঃপ্রকাশ বলে । যেমন আপনাদের
শরীরে এলিয়াম সিপার শক্তি সুস্পষ্ট ভাবে প্রকাশ হয়েছে, আপনাদের বুঝাতে আমার কষ্ট হবেনা,
কারণ আপনারা বাস্তব সত্য নিজ শরীরে উপলব্ধি করেছেন ।
প্রসঙ্গত হোমিওপ্যাথির দাবি
১. যেমন ভাবে টেলিভিশনের সার্কিট ঐ কোড সম্বলিত
সংকেত বিশ্লেষণ করে খেলার মাঠের দৃশ্যপট টেলিভিশনের পর্দায় দেখায় ।তেমন ভাবে হোমিও ঔষধ সুস্থ শরীরে রোগ বানিয়ে দেখায় ।
২. প্রতিটি শক্তি পরীক্ষার আলাদা আলাদা
স্বতন্ত্র যন্ত্র রয়েছে যেমন তাপ পরিমাপের জন্য থার্মোমিটার, ব্লাড প্রেশার পরিমাপের জন্য বিপি মেশিন ও স্টেথোস্কোপ, আলোর গতি মাপার জন্য ফটো-টেলিগ্রাফ ।
৩. যেহেতু হোমিওপ্যাথির প্রতিটি ঔষধ একেকটি
শক্তি সেহেতু একে মাপার জন্য বা প্রতিটা ঔষধের প্রতিক্রিয়া জানার জন্য সুস্থ মানুষের উপরে প্রয়োগ
করে জানতে হবে । এটাই হোমিওপ্যাথি ঔষধ পরীক্ষা পদ্ধতি ।
৪. যেহেতু ঔষধ মানুষের জন্য, সেহেতু এর প্রতিক্রিয়া পরিমাপ কারি মানুষ হলে সর্বাধিক স্বচ্ছতা
প্রতিষ্ঠিত হয় ।
৫. চিনি মিষ্টি এ কথা প্রমাণের জন্য অল্প একটু
চিনি খেয়ে পরীক্ষা করাই যথেষ্ট । কিন্তু কেন মিষ্টি ? কি পরিমাণ
মিষ্টি ? এ প্রশ্নের উত্তর যারা জানে তারা জ্ঞানী যারা জানেনা তারা এ
ব্যাপারে অজ্ঞ । কিন্তু এ অজ্ঞতা দিয়ে চিনির মিষ্টতাকে অস্বীকার করা যেমন মূর্খতা তেমন হোমিও ঔষধের শক্তিকে অস্বীকার করাও মূর্খতা । কারণ আমরা সবাই
হোমিও ঔষধের শক্তিকে নিজ নিজ শরীরে পরীক্ষা করতে পারি ।
৬. বিজ্ঞানের প্রথম কাজ ঘটনাকে স্বীকার করা
যেমন ক. সূর্য পূর্বদিকে উঠে পশ্চিম দিকে অস্ত যায় খ. সমুদ্রে ঢেউ হয় গ. নদীতে স্রোত হয় । এরপর অনুসন্ধান করে বের করা এরূপ কেন হচ্ছে । এটাই বিজ্ঞানের
পরম্পরা । যেহেতু প্রমাণ হয়েছে হোমিও ঔষধ সুস্থ ব্যক্তি খেলে অসুস্থ হয় সেহেতু কেন হয়
তা খুঁজে বের করার দায়িত্ব বিজ্ঞানীদের । আপনারা চেষ্টা
চালিয়ে যান, একদিন অবশ্যই সফল হবেন । যারা উল্টা পথে হাঁটছেন তারা বলুন তো ? কার স্বার্থে বিজ্ঞানের এই পরম্পরাকে ভঙ্গ করছেন ?
ডাক্তার আনিসুজ্জামান সাহেব ? আপনাকে কোন এক ব্যক্তি এসে বলল আমার জ্বর হয়েছে, আপনার অণুবীক্ষণ যন্ত্রটা দিয়ে আমার
জ্বরের তাপমাত্রা মেপে দেন, ২০ টাকা দামের থার্মোমিটার দিয়ে মাপলে হবেনা । আপনার মনে এ ব্যক্তি সম্পর্কে কি ধারণা হবে ? আমাদের মনেও ঠিক একই ধারণা হয় যখন কেহ হোমিওপ্যাথির ঔষধ শক্তিকে অণুবীক্ষণ যন্ত্র দিয়ে মাপতে
আসে । কারণ শক্তিকে অণুবীক্ষণ যন্ত্র দিয়ে মাপা যায়না বস্তুকে মাপা যায় ।
.
আমাদের মেটেরিয়া মেডিকার একটি
রত্ন স্বরূপ আর্সেনিক। এর গুণে মুগ্ধ হয় নি
এমন হোমিওপ্যাথ খুঁজে পাওয়া যাবে
না। একটি কথা বিশেষভাবে মনে
রাখতে হবে যা ডা. কেন্ট বলেছেন।
আর্সেনিকের রোগী এক বিষয় আর
কোনো রোগীতে আর্সেনিকের লক্ষণ
পাওয়া আর এক বিষয়। আর্সেনিকের
রোগী আপনার চেম্বারে প্রবেশ করলে
আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন । বেশ
পরিপাটি সাজানো গোছানো নিরেট
ভদ্রলোক। ক্লিন সেভ, জুতো জোড়া
চকচকে। আপনার চেম্বারে রাখা চেয়ার
ফু দিয়ে ধুলা পরিষ্কার করে সেই
চেয়ারে বসবেন। অন্যদিকে কোনো
রোগে আর্সেনিকের লক্ষণ পাওয়া-
রোগী অভিযোগ করবে যদি সে সকালে
আপনার কাছে আসে, ডাক্তার সাহেব
গতকাল রাত একটা থেকে আমার বমি শুরু
হয়েছে, খেয়ে কিছু রাখতে পারছি না।
বার বার গলা শুকিয়ে আসে সামান্য একটু
পানি পান করে গলা ভিজিয়ে নেই। শীত
করছে। আমি মনে হয় আর বাঁচব না
ইত্যাদি। অস্থিরতার কারণে সে একবার
দাঁড়াবে, একবার বসবে...।