Loading..

মুজিব শতবর্ষ

৩১ আগস্ট, ২০২১ ০৮:৩৩ অপরাহ্ণ

স্কুল থেকে শুরু হোক সমৃদ্ধ জাতির যাত্রা…! ইঞ্জিনিয়ার পলাশ মজুমদার।

স্কুল থেকে শুরু হোক সমৃদ্ধ জাতির যাত্রা

করোনা  ভাইরাস শতাব্দির এক বিশাল মহামারি জন্ম দিয়েছে। এই ভাইরাস আমাদের নতুন করে ভাবতে শিখিয়েছে আমাদের সক্ষমতা কতটুকু। আরো একটি বিষয় পরিস্কার যে আবেক দ্বারা বিবেককে পরিচালিত না করে বিকেক দ্বারা আবেককে পরিচালিত করে শেখা এখন সময়ের দাবি। আজ করোনায় আক্রান্ত আমাদের দেশের প্রতিটি সেক্টর তারই ধারাবাহিকতা গত ১৭ই মার্চ থেকে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে আছে। এতে করে শিক্ষার্থীদের একটি শিক্ষাবর্ষ নষ্ট হতে বসেছে। অথচ ২০২১ সালে আমরা সমৃদ্ধ জাতির যে স্বপ্ন দেখছি তা বাস্তবায়ন করতে হলে আমাদের বিদ্যালয়গুলোকেই কার্যকর ভূমিকায় এগিয়ে আসতে হবে। তৈরি করতে হবে শিক্ষার্থী-শিক্ষক এবং বিদ্যালয় এই তিনটির মৌলিক উপাদানের সাথে মেলবন্ধন। পাশাপাশি প্রয়োজন অভিভাবকের সার্বিক সহযোগীতা। এই অবস্থায় ঠিক করে নিতে হবে শিক্ষার্থীর কাছে আমাদের প্রত্যাশা কী বা তাদের শিখন উদ্দেশ্য কী হবে?

শিখন উদ্দেশ্যগুলো ধারাবাহিকভাবে সাজিয়ে পাই…

·       সামাজিক মূল্যবোধগুলো শিক্ষার্থীর মননে প্রতিষ্ঠিত করা;

·       শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সচেতন করে গড়ে তোলা;

·       শিক্ষার্থীদের আত্মনির্ভশীল করে গড়ে তোলার জন্য দক্ষতা ভিত্তিক শিক্ষা প্রদান করা;

·       শিক্ষার্থীদের শিক্ষা অর্জনের পাশাপাশি দেশপ্রেম জাগিয়ে তোলা।

 

সামাজিক মূল্যবোধগুলো শিক্ষার্থীদের মননে প্রতিষ্ঠিত করতে করণীয়…

যে বিষয়গুলো কোনো সমাজকে সুস্থ, সুন্দর ও সম্প্রীতি ভিত্তিক মূল্যবান সোনালী সমাজে রূপান্তরিত করে, সে বিষয়গুলোর সক্রিয় চেতনাবোধকেই সামাজিক মূল্যবোধ বলা হয়’। সর্বজন স্বীকৃত যেসব ভালো, উত্তম, সুন্দর, চমৎকার, শালীন, সৌহার্দপূর্ণ ও কল্যাণকর বিষয় কোনো সমাজকে কল্যাণময় সোনালি সমাজে পরিণত করে, সেগুলোর চর্চা ও সংরক্ষণের সক্রিয় চেতনাবোধকে সামাজিক মূল্যবোধ বলা হয়। সেই মূল্যবোধগুলোকে শিক্ষার্থীদের মাঝে জাগাতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষক ও অভিভাবকে যে দায়িত্বগুলো নিতে হবে তা নিম্নরূপ-

·       সামাজিকীকরণ শুরু করতে হবে শিক্ষার্থীদের পরিবার থেকে। অভিভাবক ও শিক্ষক মিলে শেখাবেন ছোট ছোট মূল্যবোধগুলো যেমন-সালাম দেওয়া বা সম্মান প্রদর্শণ করা, পারিবারিক রীতিনীতি, সামাজিক রীতিনীতি, বড়দের সাথে আদবের সাথে কথা বলা ও শালীন আচরণ করা ইত্যাদি। শিক্ষার্থীদেরকে ধর্মীয় অনুশাসন, মানবতাবোধ ও মানবিকতার শিক্ষা দান করতে হবে। দয়ামায়া, স্নেহ, ভালোবাসার সম্প্রীতি গড়ে তোলার জন্য বাড়িতে ও সহপাঠীদের সাথে কী ধরনের আচরণ করতে হবে তার গাইড লাইন তৈরি করে দিতে হবে এবং তা চর্চায় তদারকি করতে হবে। অন্যের হিতকামনা, পরোপকার ও মানব কল্যাণে শিক্ষার্থীদের উদ্বুদ্ধ করতে হবে। পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ ও সম্মান প্রদর্শন করতে শিক্ষার্থীর করণীয়গুলো ঠিক করে দিতে হবে। জ্ঞানার্জন ও জ্ঞানচর্চার প্রবল আকাঙ্খা তৈরির জন্য নিয়মিত লাইব্রেরিতে বসতে ও মুক্তালোচনা করতে উদ্বুদ্ধ করা। শালীনতাবোধ ও শালীনতার চর্চা শিক্ষাদানে জন্য মুক্ত সামাজিক মাধ্যমগুলোর ব্যবহার বিধি শেখানো এবং যুক্তি ও চিন্তন দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য বিতর্ক প্রতিযোগীতা ও সাস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে উদ্বুদ্ধ করা। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের কিশোর বাতায়নের মত সামাজিক মাধ্যমগুলোর সাথে সম্পৃক্ত করে প্রতিভা বিকাশের সুযোগ তৈরি করে দিতে হবে।

 

শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সচেতন করে গড়ে তুলতে করণীয়…

·       শিক্ষার্থীদের বাড়িতে পড়ালেখার পাশাপাশি সঠিক শারিরীক বৃদ্ধি ও মানসিক বিকাশের ব্যবস্থা করে দিতে হবে। পড়া-লেখার মধ্যে সব সময় আটকে না রেখে প্রতিদিন কিছু সময়ের জন্য নিয়মিত শরীরচর্চার সুযোগ করে দিতে হবে। সেক্ষেত্রে বিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষার পাঠদান কার্যক্রম শ্রেণিকক্ষে না করে সম্ভব হলে খেলার মাঠে নিয়ে গিয়ে খেলাধুলার মাধ্যমে শেখানো যেতে পারে। এতে করে পড়ালেখা ও শরীরচর্চা দুটো কাজ একসাথে হয়ে যাবে। শিক্ষার্থীদের বয়সভেদে প্রায় অষ্টম শ্রেণির পর তাদের বয়:সন্ধি কাল শুরু হয়। এই সময়ে তাদের শারীরিক নানা পরিবর্তন দেখা দেয়। এই সময়ে শিক্ষার্থীদের সাথে বন্ধু শুলভ আচরণের মাধ্যমে অভিভাবক ও শিক্ষক সম্মিলিতভাবে কাউন্সিলিং করে বিষয়গুলো সহজভাবে বুঝিয়ে দিতে হবে। আমরা প্রায় সকলেই বিষয়গুলো গোপণ ও লজ্জার বিষয় ভেবে শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনা করতে চায় না। অথচ স্বর্ণ কিশোর-কিশোরীরা বিষয়গুলো সাবলীল ও স্বাভাবিক বলেই জানে। এই উদ্যোগ প্রতিটি বিদ্যালয়ে নিতে হবে যত্নের সাথে। তবে খেয়াল রাখতে হবে কোন শিক্ষার্থী যেন শিক্ষক ও তার সহপাঠীদের কাছ থেকে অশালীন আচনের শিকার না হয়। এমনটা হলে শিক্ষার্থীর মননে বিশাল ক্ষতি হয়ে যাবে। স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের আলাদা টয়লেট ব্যবস্থা রাখতে হবে। টয়লেট ব্যবহারের নিয়মগুলো ভালোভাবে শেখাতে হবে। টয়লেট ব্যবহারের পর নিয়মিত কীভাবে হাত ধৌত করতে হবে তা শেখাতে হবে। পাশাপাশি ছাত্রীদের প্রতি নারী শিক্ষক দ্বারা বাড়তি স্বাস্থ্য বিধিগুলো সহজ ভাবে বুঝাতে হবে। প্রয়োজনে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। শিক্ষার্থীদের বুঝতে হবে বিষয়গুলো লজ্জার নয় প্রয়োজের। বর্তমান সময়ে করোণা ভাইরাস আমাদের অনেক কিছু শিখিয়ে দিয়েছে। শিখিয়ে দিয়েছে কীভাবে আত্মনির্ভরশীল জীবন যাপন করতে হয়। আমাদের হাতের মাধ্যমেই ছড়াতে পারে একে অন্যের মাঝে হাজার হাজার জীবানু ও ভাইরাস। তার জন্য প্রয়োজন ঘন ঘন হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা। পাশাপাশি কীভাবে সামাজিক দূরত্ব বঝায় রাখতে হয় তা শিক্ষার্থীদের শেখাতে হবে। সামাজিক দূরত্ব মানে শারীরিক দুরত্ব। এছাড়া কিছু প্রচলিত ও রাষ্ট্র কর্তৃক নিধারিত আইন বা বিধি নিষেধ রয়েছে। যেমন- ট্রাফিক আইন, আইসিটি ব্যবহার আইন, তথ্য অধিকার আইন ইত্যাদি। ট্রাফিক আইন গুলো প্রতিটি শিক্ষার্থীদের শেখাতে হবে ক্লাসে, প্রজেক্ট তৈরির মাধ্যমে বা প্রতিযোগীতামূলক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে। শিক্ষার্থীদের রাস্তা পারাপার, রাস্তায় চলাচল করা ও পরিবহণে উঠানামা করা, রাস্তায় স্থাপিত বিভিন্ন সিগন্যাল ও সাইনগূলো সম্পর্কে জানানো ও ব্যবহার বিধি শেখাতে হবে। কারণ আমাদের দেশে সড়ক দূর্ঘটায় মৃত্যুর মিছিল অনেক দীর্ঘ।

 

শিক্ষার্থীদের আত্মনির্ভশীল করে গড়ে তোলার জন্য দক্ষতা ভিত্তিক শিক্ষা প্রদানে করণীয়…

·       ২১ শতকের বৈশ্বিক অর্থনীতির প্রেক্ষাপটে আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স বা রোবটিক বুদ্ধিমত্তার দিকে অগ্রসর হচ্ছে যাকে আমরা বলছি চতুর্থ শিল্প বিপ্লব। তাছাড়া বর্তমান সময়ে করোনা ভাইরাসের কালো থাবা বৈশ্বিক অর্থনীতিকে লন্ডভন্ড করে দিয়েছে। এই অবস্থার উত্তোরণ ঘটাতে হলে অর্থনৈতিক কর্মকান্ড হতে হবে পরিকল্পিত ও দক্ষতা নির্ভর। বাংলাদেশকে ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত করার লক্ষ্যে বর্তমান সরকার কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার প্রসার ও মানোন্নয়নকে আগ্রাধিকার খাত হিসেবে চিহ্নিত করেছে। ইতোমধ্যে সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনকে সামনে রেখে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার শিক্ষার্থী ভর্তির হার ২০২০ সালের মধ্যে ২০% এবং ২০৩০ সালের মধ্যে ৩০% এ উন্নীত করার কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এ লক্ষ্যে কারিগরি শিক্ষা অধিপ্তর দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের নতুন নতুন কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন, মাঠপর্যায়ের প্রতিষ্ঠানসমূহের অবকাঠামোর উন্নয়ন এবং শিক্ষার্থীদের বৃত্তি ও উপবৃত্তি প্রদান সংক্রান্ত প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। একই সাথে দেশে-বিদেশে প্রশিক্ষণ আয়োজন, ইন্ডাস্ট্রি-ইনস্টিটিউট লিংকেজ স্থাপন, যুগোপযোগী কারিকুলাম প্রণয়ন, জব ফেয়ার ও স্কিলস কম্পিটিশনসহ নানাবিধ কর্মসূচি পরিচালনা করছেন। যা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিভিত্তিক মানসম্পন্ন কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণকে দেশের তৃণমূল পর্যায়ে জনপ্রিয় করে গড়ে তোলার মাধ্যমে দেশের বিশাল জনগোষ্ঠীকে উৎপাদনমূখী মানব সম্পদে রূপান্তর করার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা রাখছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের প্রাক্তন সচিব মো. আলমগীর এ প্রসঙ্গে বলেন, “আগামী বিশ্বে নতুন প্রজন্মের চ্যালেঞ্জ হচ্ছে দক্ষতা। দক্ষতা না থাকলে প্রতিযোগিতাশীল বিশ্বে কেউ টিকে থাকতে পারবে না। এ কারণে শিক্ষার্থীদের আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ গ্রহণের উপযোগী করে গড়ে তুলতে সরকার প্রতিটি শিক্ষার্থীকে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষায় শিক্ষিত করতে চায়। এই লক্ষ্য অর্জনে কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি নিম্ন মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের সাধারণ ধারার প্রতিটি স্কুল-মাদ্রাসায় প্রাক-বৃত্তি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা চালু করার উদ্যোগ গ্রহন করা হয়েছে”।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সাথে সংগতি রেখে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষায় অর্জিত জ্ঞান ও দক্ষতার মান নির্ধারণ এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির লক্ষ্যে জাতীয় কারিগরি ও বৃত্তিমূলক যোগ্যতা কাঠামো National Training & Vocational Qualification Framework (NTVQF) প্রণয়ন করা হয়েছে। জাতীয় কারিগরি ও বৃত্তিমূলক যোগ্যতা কাঠামো বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড-এ NTVQF বিভাগ গঠন করা হয়েছে। এই বিভাগের কাজ হলো শিল্পখাতের চাহিদার ভিত্তিতে বিভিন্ন দক্ষতা ভিত্তিক কাজের আদর্শ মান প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন, সক্ষমতাভিত্তিক প্রশিক্ষণ প্রদানের নিমিত্ত প্রশিক্ষণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে Registered Training Organization (RTO) হিসেবে স্বীকৃত ও নিবন্ধন, বিভিন্ন উপায়ে অর্জিত দক্ষতা যাচাই ও সনদায়নের জন্য পূর্ব অভিজ্ঞতার স্বীকৃতি Recognition of Prior Learning-(RPL) পদ্ধতির উন্নয়ন ও অ্যাসেসমেন্ট সেন্টারগুলোর স্বীকৃতি ও নিবন্ধন এবং Competency based Training and Assessment(CBTA) পদ্ধতি ব্যবহার করে দক্ষতা যাচাইপূর্বক সনদ প্রদান। ইতোমধ্যে NTVQF এর আওতায় Occupations Competency Based Training and Assessment (CBT&A) কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরাধীন মাঠ পর্যায়ের কারিগরি প্রতিষ্ঠানসমূহে Registered Training Organisation (RTO) স্থাপন করা হয়েছে। দক্ষতামান নিশ্চিতকরণ ব্যবস্থা (Skills Quality Assurance System) শিক্ষার্থীদের জন্য জাতীয়ভাবে সংগতিপূর্ণ উচ্চ মানদন্ড প্রবর্তন করতে নতুন মান নিশ্চিতকরণ পদ্ধতি প্রবর্তন ও দক্ষতা উন্নয়নে শিল্প দক্ষতা কাউন্সিল (Industry Skill Council- ISC) গঠন করা হয়েছে। এই প্রক্রিয়াটি বাস্তবায়ন করতে হলে কিছু সুপরিকল্পিত পদক্ষেপ গ্রহন করে শিক্ষকদের ট্রেড ভিত্তিক ব্যবহারিক কাজে শতভাগ দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সাথে সরাসরি শিল্প কারখানার সংযোগ ঘটতে হবে এবং শিক্ষার্থীদের নিয়মিত শিল্প-কারখানা ভিজিটের ব্যবস্থা করতে হবে। শিক্ষক নতুন নতুন প্রযুক্তির সাথে পরিচিত হবেন এবং প্রযুক্তিগুলো শিক্ষার্থীদের মাঝে পরিচিত করে তুলবেন। বিদ্যালয়গুলোতে শতভাগ ব্যবহারিক কাজের উপযোগী ল্যাব ও ওর্য়াকশপ তৈরি ও কাঁচামাল সর্বরাহ নিশ্চিত করতে হবে। কারণ এটি হবে আগামী প্রজন্মের জন্য বিনিয়োগ। এই ল্যাব ও ওয়ার্কশপের মাধ্যমে শতভাগ দক্ষতা নিশ্চিত করতে শিক্ষার্থীদের কর্মোদ্দীপনা, কর্মকৌশল ও কর্মদক্ষতা বৃদ্ধিতে আইসিটি ভিত্তিক দক্ষতা, বিজ্ঞান ভিত্তিক জ্ঞান চর্চা, হাতে-কলমে কাজ শেখানো এবং নানা ধরণের প্রযুক্তিগত প্রজেক্ট তৈরিতে সহায়তা ও উদ্বুদ্ধ করতে হবে।

 

শিক্ষার্থীদের শিক্ষা অর্জনের পাশাপাশি দেশপ্রেম জাগিয়ে তোলার কৌশল…

·       বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশ স্বাধীন করার জন্য যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। স্বাধীনতাকামী মুক্তি যুদ্ধাদের মধ্যে ত্রিশ লক্ষ বীর মুক্তিযোদ্ধা অকারতে জীবন দিয়েছিলেন দ্বিধাহীন ভাবে দেশ মাতৃকার প্রয়োজনে। ভাষার জন্য যে জাতি জীবন দিতে পারে কিন্তু পিছু হটে না, তাইতো আমরা বীরের জাতি। এমন অসংখ্য উদাহরণ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে আমাদের চারপাশে। এই সকল সাহসিকতা ও বীরত্ব প্রদর্শিত মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বের কাহিনী শিক্ষার্থীদের পড়াতে হবে এবং দেখাতে হবে ডকুমেন্টারি। মুক্তিযুদ্ধের দলিলগুলোর পুস্তক সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রয়েছে। এইসকল বই শিক্ষার্থীদের পড়ার সুযোগ করে দিতে হবে। তৈরি করা যেতে পারে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধের কর্ণার। যেখানে প্রদর্শিত হবে মুক্তি যুদ্ধ ও মুক্তিযুদ্ধাদের বীরত্বের ফটোগ্রাফি ও সংক্ষিপ্ত ইতিহাস। যা দেখে ও পড়ে শিক্ষার্থীরা জানবে দেশের সঠিক ইতিহাস। তেমনিভাবে বুনে দিতে হবে দূর্নীতি বিরোধী দেশপ্রেমের অমোক বীজ। এই বীজ অঙ্কুরিত হয়ে শিক্ষার্থীরা বড় হবে সততায়, সাহসিকতায় দেশের যেকোন ক্রান্তিলগ্নে দেশের হাল ধরবে জীবন বাজি রেখে। এই আদর্শিক কাজগুলোর দায়িত্ব নিতে হবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে এবং শিক্ষকদেরকে। দেশপ্রেম জাগরিত হবে সবার মননে এটাই কাম্য ও প্রত্যাশা।

 

পলাশ কান্তি মজুমদার

বিএসসি ইঞ্জি.(টেক্সটাইল), এমএসসি(সিএসই), এম.এড

ইনস্ট্রাক্টর

চাঁদপুর জনতা হাই স্কুল এন্ড কলেজ

কুমিল্লা সদর দক্ষিণ, কুমিল্লা।

জাতীয় পর্যায়ের শ্রেষ্ঠ শিক্ষক (কারিগরি),

জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ-২০১৭ ও ২০১৯

লেখক, পুস্তক প্রণেতা ও গবেষক।

আরো দেখুন

কোন তথ্য খুঁজে পাওয়া যাইনি