ইন্সট্রাক্টর
০১ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০৯:২৯ পূর্বাহ্ণ
গুনগত শিক্ষা, হোক আমাদের দিক্ষা
“গুনগত শিক্ষা, হোক আমাদের দিক্ষা”
কারিগরি
শিক্ষা নিলে, দেশ-বিদেশে কর্ম মিলে
এসডিজি-৪ বা টেকসই উন্নয়ন অভিষ্ট ৪: সকলের জন্য
অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সমতাভিত্তিক গুনগত শিক্ষা নিশ্চিত করণ এবং জীবনব্যাপী শিক্ষা লাভের
সুযোগ সৃষ্টি।
এসডিজি-৪ এর ৪.৩ এর বর্ণিত ধারার
বর্ণনা অনুসারে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা লাভের সুযোগসহ সাশ্রয়ী ও মানসম্মত কারিগরি, বৃত্তিমূলক
ও উচ্চ শিক্ষায় সকল নারী ও পুরুষের জন্য ২০৩০ সালের মধ্যে সমান প্রবেশাধিকার নিশ্চিত
করা।
উপ ধারা-৪.৩.১ এর বর্ণনা অনুসারে
লিঙ্গ ভেদে পুর্ববর্তী ১২ মাসে আনুষ্ঠানিক ও উপ-আনুষ্ঠানিক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে
যুব সম্প্রদায় ও বয়স্কদের অংশগ্রহনের হার কাঙ্খিত পর্যায়ে নিয়ে আসা।
উপরোক্ত বিষয়কে বাস্তবায়ন করতে গেলে Technical Vocational Education & Training (TVET) এর যথাযথ বাস্তবায়ন
ঘটাতে হবে। মাননীয় শিক্ষা মন্ত্রী
ও উপ মন্ত্রী মহোদয় দ্বয়ের ঘোষণার আলোকে ২০২০ সাল হতে ২০২৩ সালের মধ্যে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক
শিক্ষাকে সাধারণ ধারায় ৬ষ্ঠ শ্রেণি হতে ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত বিস্তরণ ঘটাবেন। যদি তাই
হয়, তবে এই শিক্ষা ব্যবস্থাকে টেকসই করার জন্য আমি নিম্ন লিখিত বিষয়গুলো প্রস্তাব করছি-
ü
গুরুত্বপূর্ণ দেশি ও
বিদেশি শ্রম বাজারে চাহিদা রয়েছে এমন সব মূল পেশা চিহ্নিত করা।
ü প্রত্যেকটি চিহ্নিত পেশার জন্য প্রয়োজনীয় শিক্ষা এবং দক্ষতা
উন্নয়ন নিশ্চিত করা।
ü শিল্পখাতের বা শ্রম বাজারে যাঁরা উদ্যোগতা এবং বিশেষজ্ঞ তাঁদের
সাথে প্রশিক্ষক/ শিক্ষকদের আন্তঃসংযোগ তৈরি করা।
ü শিল্প প্রতিষ্ঠানের সাথে সরাসরি স্কুল ও কলেজের সংযোগ স্থাপন
করা।
ü শিক্ষক/প্রশিক্ষকদের জন্য শিল্পের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ দক্ষতা
ভিত্তিক প্রশিক্ষণ প্রদান নিশ্চত করা।
ü ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণের আওতায় নিয়ে আসা এবং নিবিড়
পরিচর্যার মাধ্যমে দক্ষ পেশাজীবি/ শ্রমজীবি হিসেবে গড়ে তোলা।
ü জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ভাবে স্বীকৃত দক্ষতা ভিত্তিক সনদ প্রাপ্তির
সুযোগ করে দেয়া যেন দেশ-বিদেশে ভাল চাকুরি/ কাজ পেতে সহজ হয়।
ü দক্ষতা উন্নয়নে সহায়তা প্রদানের জন্য একটি ইন্টারনেট ভিত্তিক
ডিজিটাল তথ্য সেবা চালু রাখা, সেখান থেকে শিক্ষার্থী/ প্রশিক্ষণার্থীদেরকে তাদের যোগ্যতা
ও দক্ষতা অনুসারে দেশ-বিদেশে কর্মসংস্থান খুঁজে পেতে সহায়তা করা।
ü শিক্ষার্থীরা নিজেদেরকে সকল পরিবেশে নিরাপদ রাখতে- নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে সচেতনতা প্রদান করা।
উপরোক্ত বিষয়গুলোকে স্থায়িত্ব প্রদান ও বাস্তবে
রূপ দিতে গেলে নিম্নলিখিত বিষয়গুলো বিবেচনা করার জন্য প্রস্তাব করছি-
ü
প্রয়োজনীয় শিক্ষা উপকরণ
সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করা।
ü
প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ যন্ত্রপাতি
ও উপকরণ সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করা।
ü
স্কুল ও কলেজে স্থায়ী
প্রশিক্ষণ ল্যাবের/ ওয়ার্কশপের ব্যবস্থা করা।
ü
শিল্প কারখানার সংস্থার
মালিক/ দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা পূর্বক শিল্প কারখানার চাহিদার আলোকে
প্রশিক্ষণ ম্যানুয়াল তৈরি ও সংরক্ষণ করা।
ü
ম্যানুয়াল অনুসারে ট্রেড
ভিত্তিক সিলেবাস ও লেসন-প্ল্যান প্রণয়ন করা।
ü
লেসন-প্ল্যান অনুসারে ত্বাত্তিক
বিষয়ের সাথে সাথে ব্যবহারিক উপকরণ সংগ্রহ, সাজানো ও সংরক্ষণ করা।
ü
দক্ষতা অর্জনের জন্য
বারবার ব্যবহারিক কাজ হাতে-কলমে করানো।
ü
ব্যবহারিক কাজের দক্ষতার
ভিত্তিতে সুনিদিষ্ঠ মান নির্ধারণ করা।
ü
শতভাগ দক্ষতা অর্জন
না করা পর্যন্ত ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখা।
ü
বাস্তব কাজের সাথে ব্যবহারিক
কাজের সমন্ধয় সাধন করা। অর্থাৎ, বাস্তবে উৎপাদিত পন্যের সাথে তুলনা পূর্বক সবলতা ও
দূর্বলা চিহ্নিত করে দূর্বলতা দূর করার যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করা।
ü
শিক্ষার্থীদের সিলেবাস
ভিত্তিক বাস্তব কাজের সাথে পরিচয় ঘটানোর জন্য নিকট দূরত্বে শিল্প কারখানা ভিজিট করা
সুযোগ করে দেওয়া।
উল্লেখ্য যে, প্রতিটি কাজে শতভাগ
দক্ষতা অর্জন করতে হবে। কারণ দক্ষতা কখনোই অপূর্ণ হওয়ার/ রাখার সুযোগ নেই। তাই দক্ষ
জাতি বিনির্মানের জন্য দরকার দক্ষ প্রশিক্ষক/ শিক্ষক। তাই সবার আগে প্রশিক্ষক/ শিক্ষককে
দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে যথাযথ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে।
ইঞ্জিনিয়ার পলাশ মজুমদার
বিএসসি ইঞ্জি.(টেক্সটাইল), এমএসসি(সিএসই), এম.এড
ইনস্ট্রাক্টর (টেকনিক্যাল) ও জেলা অ্যাম্বাসেডর (এটুআই)
চাঁদপুর জনতা হাই স্কুল এন্ড কলেজ
কুমিল্লা সদর দক্ষিণ, কুমিল্লা।
জাতীয় পর্যায়ের শ্রেষ্ঠ শিক্ষক (কারিগরি), জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ-২০১৭
ও ২০১৯
লেখক, পুস্তক প্রণেতা ও গবেষক।
মোবাইল: 01878-080572, 01716-974134
মেইল: [email protected]