Loading..

শিক্ষায় অগ্রযাত্রা

২০ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০৯:২৬ পূর্বাহ্ণ

শিক্ষাবিদদের অভিমত নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন কঠিন হবে না

২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ থেকে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন শুরু হবে। এতে অভিজ্ঞতানির্ভর শিক্ষা পদ্ধতি শিক্ষক ও শিক্ষার্থীবান্ধব হবে বলে মনে করছেন শিক্ষা প্রশাসনের কর্তারা। নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সদিচ্ছাকে গুরুত্ব দিচ্ছেন তারা। শিক্ষাক্রম তৈরির সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পদ্ধতিগত পরিবর্তন হলেও নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়নে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সদিচ্ছা থাকলে ছোটখাটো অসুবিধা হলেও তাদের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে না। শিক্ষক ও শিক্ষাবিদদের মতে, এ কারিকুলাম বাস্তবায়ন হলে ‘মধ্যযুগীয়’ শিক্ষাব্যবস্থার অবসান হবে এবং বিশ্বমানের শিক্ষাব্যবস্থার মহাসড়কে নতুন প্রজন্ম প্রবেশ করবে। এজন্য গণমাধ্যমকে ইতিবাচক ভূমিকা রাখার আহ্বানও জানিয়েছেন তারা। 

এদিকে শিক্ষকরাও বলছেন, নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়নে ভোগান্তিতে পড়তে হবে না। তবে এ কারিকুলামের সঙ্গে মানিয়ে নিতে শিক্ষকরা সরকারের সহযোগিতা কামনা করছেন। শিক্ষকদের কেউ কেউ বলছেন, পরীক্ষার জন্য শিক্ষার্থীদের প্রস্তুত করার শিক্ষাব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে এসে জীবনের জন্য শিক্ষার্থীদের প্রস্তুত করার ব্যবস্থা করা হবে। এ কারিকুলাম বাস্তবায়ন হলে শিক্ষকরা শিক্ষকতা করার সুযোগ বেশি পাবেন বলেও মন্তব্য করেছেন কেউ কেউ।

এদিকে অভিভাবকদের অনেকের মতে, দীর্ঘদিন চলে আসা মধ্যযুগীয় শিক্ষাব্যবস্থার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়া শিক্ষকদের এ কারিকুলামের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া কিছুটা অসুবিধার হতে পারে। শিখনফল মূল্যায়নে নতুন শিক্ষাক্রমে বেশি গুরুত্ব দেওয়ায় কিছু কিছু শিক্ষকের মনে অসাধু চিন্তা আসতে পারে। তারা শিক্ষার্থীদের জিম্মি করার অপচেষ্টা করতে পারেন।

সম্প্রতি নতুন শিক্ষাক্রমের খসড়ায় অনুমোদন দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগের পরীক্ষা ও মুখস্ত জ্ঞাননির্ভর শিক্ষাব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে এসে এ কারিকুলামে অভিজ্ঞতানির্ভর শিক্ষায় নতুন প্রজন্মকে গড়ে তুলতে এ কারিকুলাম প্রস্তাব করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। এ কারিকুলামটি সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সামনে উপস্থাপন করা হলে তিনি তা অনুমোদন দিয়েছেন। 

নতুন কারিকুলামে যা নতুন 

এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, নতুন কারিকুলামে শিক্ষা হবে আনন্দঘন। এ কারিকুলামে মুখস্ত জ্ঞাননির্ভর শিক্ষা থেকে সরে এসে অভিজ্ঞতানির্ভর শিক্ষায় প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। প্রাক প্রাথমিক থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের জন্য একটি নিরবচ্ছিন্ন ধারাবাহিক শিখন নিশ্চিত করা হচ্ছে। পরীক্ষার বিষয় ও পাঠ্যপুস্তকের চাপ কমানোর চেষ্টা করা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা যাতে নিজেদের মত কিছুটা সময় কাটাতে পারে তা নিশ্চিত করতেই নতুন কারিকুলাম। শিক্ষাকে সহজ করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। 

নতুন কারিকুলামে শিক্ষার্থীদের দক্ষতার ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। ষষ্ঠ শ্রেণিতে শিক্ষার্থীদের কারিকুলামে একটি কারিগরি বিষয় অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের নানা দক্ষতা অর্জনের সুযোগ থাকছে। নতুন কারিকুলামে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও স্বাধীনতার ইতিহাস অন্তর্ভুক্ত থাকবে। এছাড়া নতুন সিলেবাসে করোনা অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে।

অন্যদিকে নতুন কারিকুলামে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন পদ্ধতি, শিখন পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনা হয়েছে। পরীক্ষানির্ভর শিক্ষাব্যবস্থা থেকে সরে এসে বিশ্বমানের শিক্ষাব্যবস্থার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে এ কারিকুলাম করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। 

নতুন কারিকুলাম অনুসারে প্রাথমিকে প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত বিদ্যালয়েই ধারাবাহিক মূল্যায়ন হবে। কোন পরীক্ষা থাকবে না। আর চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে গিয়ে শিখনকালীন মূল্যায়ন হবে ৬০ শতাংশ। আর ৪০ শতাংশ মূল্যায়ন হবে ক্লাস শেষে পরীক্ষার মাধ্যমে যেটি সামষ্টিক মূল্যায়ন বলা হচ্ছে। ষষ্ঠ ও অষ্টম শ্রেণিতে বিদ্যালয়ে ধারাবাহিক মূল্যায়ন হবে ৬০ শতাংশ এবং ৪০ শতাংশ হবে সামষ্টিক মূল্যায়ন। নবম ও দশম শ্রেণিতে কয়েকটি বিষয়ে শিখনকালে অর্ধেক মূল্যায়ন হবে এবং বাকি অর্ধেক সামষ্টিক মূল্যায়ন হবে। একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে ৩০ ভাগ শিখনকালীন মূল্যায়ন এবং ৭০ ভাগ সামষ্টিক মূল্যায়ন হবে।

নতুন শিক্ষাক্রমে যেসব চ্যালেঞ্জ দেখছেন অভিভাবক ও শিক্ষাবিদরা 

নতুন কারিকুলামে শিখনফলের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের ব্যবস্থা থাকছে। অনেক ক্ষেত্রে পরীক্ষা ছাড়াই শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের সুযোগ থাকায় অনেক শিক্ষার্থী শিক্ষকদের হাতে জিম্মি হবে বলেও আশঙ্কা করছেন অভিভাবকরা। পরীক্ষা ছাড়াই শিক্ষার্থীদের নম্বরের জন্য শিক্ষকের বাসায় ভিড় বাড়বে বলে মন্তব্য করেছেন অভিভাবকদের কেউ কেউ। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক অভিভাবক দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, আমরা আগে ২০০৬ খ্রিষ্টাব্দে এ রকম একটি সিদ্ধান্ত দেখেছিলাম। তখন শিক্ষকদের মধ্যে শিক্ষার্থীদের নম্বরের জন্য জিম্মি করে কোচিংমুখী করার প্রবণতা দেখা গিয়েছিল। নতুন কারিকুলামে যাতে সেরকম কিছু না হয় সে বিষয়টিতে দৃষ্টি রাখতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। 

এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা অনুষদের অধ্যাপক মো. আবদুস সালামের মতে, সব শিক্ষককে প্রশিক্ষণের আওতায় আনা সরকারের জন্য চ্যালেঞ্জ হবে। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, বিভিন্ন সময় শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হলেও ক্লাসরুমে তার ভালো কিছু পাওয়া যায় না। শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ ছাড়া সৃজনশীল পদ্ধতি চালু করার ফল খারাপ হয়েছে।  

শিক্ষকরা প্রশিক্ষণ পাবেন  

কারিকুলাম তৈরির সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শিক্ষকদের হাতে শিক্ষার্থীদের জিম্মি হওয়ার মত পরিস্থিতি হবে না। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের শিক্ষাক্রম উইংয়ের সদস্য অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, নতুন শিক্ষাক্রমে শিক্ষকদের শিক্ষকতা করার সুযোগ রাখা হচ্ছে। এর মাধ্যমে শিক্ষকরা যে শিক্ষার্থীদের শুধু পরীক্ষায় পাসের জন্য পড়াবেন এমনটা নয়, তাদের যোগ্য মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য পড়াবেন। নতুন শিক্ষাক্রমের উদ্দেশ্য শিক্ষকরা অনুধাবন করতে পারলে তারা অন্যরকম করবেন না। আমরা শিক্ষকদের মনে শিক্ষকতার স্ফুলিঙ্গ ফুটিয়ে তুলতে চাচ্ছি। একটি শিশুকে মানুষের মত মানুষ করে গড়ে তোলার যে আনন্দ তা শিক্ষকদের দিতে চাচ্ছি। আর অভিভাবকরা যেমন ভাবছেন তেমন কিছু হলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ব্যবস্থা নেবে।

তিনি আরও জানান, নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়নের আগে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। শিক্ষকদের নতুন কারিকুলামের সঙ্গে খাপ খাইয়ে বিভিন্ন লার্নিং মডিউল দেওয়া হবে। শিক্ষকরা সেখান থেকে প্রয়োজনীয় জ্ঞান নিয়ে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করাবেন। তিনি আরও জানান, নতুন কারিকুলামে সব কিছু সহজ করা হয়েছে। ফলে শিক্ষকদের বুঝতে কোন সমস্যা হবে না। 

নতুন কারিকুলামে শিক্ষকদের ভোগান্তি কমবে, সময় দিতে হবে ক্লাসের পরও 

এনসিটিবির সদস্য অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান দৈনিক আমাদের বার্তাকে আরও বলেন, নতুন কারিকুলামে শিক্ষকদের ভোগান্তি কমবে। উদাহারণ টেনে তিনি বলেন, কোন ক্লাসে ৬০ জন শিক্ষার্থীকে যদি একজন একজন করে অ্যাটেনশন দিতে হয় সেক্ষেত্রে শিক্ষকদের ভোগান্তি বেশি। তবে যদি ১০টি গ্রুপ করে দেওয়া হয় সেক্ষেত্রে শিক্ষককে ১০টি গ্রুপের প্রতি অ্যাটেনশন দিলেই হবে। শিক্ষার্থীরা গ্রুপওয়ার্ক করার মাধ্যমে শিখবে। নতুন কারিকুলামে শিক্ষকদের ভোগান্তি কমবে। 

তবে ক্লাসের বাইরে শিক্ষকদের কিছু সময় দিতে হবে বলে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, এ কারিকুলামে শিক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট ও গ্রুপওয়ার্ক মূল্যায়নে ও বিভিন্ন বিষয়ে স্টাডি করতে ক্লাসের সময়ের বাইরেও কিছু সময় দিতে হবে। তবে সার্বিক বিবেচনায় শিক্ষকদের ভোগান্তি কমবে। 

নতুন কারিকুলামে নতুন করে শিক্ষক নিয়োগের প্রয়োজন নেই 

অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান দৈনিক আমাদের বার্তাকে আরও বলেন, নতুন কারিকুলামে নতুন করে শিক্ষক নিয়োগের প্রয়োজনীয়তা নেই। আগের বিভাগ বিভাজন পদ্ধতি পারদর্শী শিক্ষকদের নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়নে বেগ পেতে হবে না। আমরা যেভাবে কারিকুলাম করেছি তা আগের শিক্ষকরাও পড়াতে পারবেন। 

মাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুলগুলোর উদাহারণ টেনে তিনি বলেন, নতুন ট্রেডের জন্য ট্রেড ইন্সট্রাক্টর নিয়োগ হবে। এছাড়া যে বিষয়গুলো আছে তা শিক্ষকরা পড়াতে পারবেন। এজন্য শিক্ষক প্যাটার্ন নতুন করে করার প্রয়োজন নেই। তিনি বলেন, বিভাগ বিভাজন বদলে যাওয়ায় পদার্থ, রসায়ন এরকম বিষয় থাকছে না। সব বিজ্ঞানের অন্তর্ভুক্ত হবে। এখনো কমার্স পড়ানো স্কুলগুলোতে বিজ্ঞান শিক্ষক আছে। বিজ্ঞান বিষয়টি নতুন কারিকুলামে একটু তথ্যনির্ভর করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, এর জন্য শিক্ষকদের বেগ পেতে হবে না। 

চ্যালেঞ্জ হলেও কঠিন হবে না 

অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান আরও বলেন, কোন প্রতিষ্ঠানের কোন শিক্ষক যদি একান্তই বুঝতে না পারেন তিনি অন্য শিক্ষকদের সহায়তা নেবেন। প্রশিক্ষণ থাকবে। সেজন্য তাকে বেগ পেতে হবে না। আর আমরা জীবনে করতে করতে শিখি। কোন জায়গায় আটকে গেলে সেটির জন্য কারো পরামর্শ নিই। নতুন একটা পদ্ধতির সঙ্গে জাতিকে পরিচয় করিয়ে দিতে চ্যালেঞ্জ আসবেই। শিক্ষকরা আন্তরিক থাকলে সে চ্যালেঞ্জ তারা উতরে যাবেন। আমরা যখন নতুন ফোন চালাই প্রথমে অনেক অসুবিধা হতো, কিছুই বুঝতাম না। আস্তে আস্তে সব বুঝে গেলাম। এক্ষেত্রেও এমনটা হবে। শিক্ষকদের চ্যালেঞ্জ নিয়ে জটিলতার মোকাবেলা করতে হবে। নিজ উদ্যোগে দক্ষতা বাড়াতে হবে। তাই নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়ন কঠিন হবে না। 


শিক্ষার পুরোনো ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে 

অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান দৈনিক আমাদের বার্তাকে আরও বলেন, নতুন কারিকুলামের জন্য শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের গতানুগতিক শিক্ষার ধারণা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। ক্লাসে পড়ালাম, পরে পরীক্ষা নিলাম, খাতা দেখলাম- এটা শিক্ষার কোন পদ্ধতি হতে পারে না। এখন থেকে শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের যোগ্য মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে পড়াবেন। 

তিনি আরও বলেন, একজন কৃষক তার কষ্টার্জিত মাঠে সবুজ ধানের চারা দেখে আনন্দিত হন, গর্বিত হন। আর একজন শিক্ষক জাতি গড়ছেন। এটা শিক্ষকদের মনে ধারন করতে হবে। একজন শিক্ষক একজন ছাত্রকে তার বাকি জীবনের জন্য তৈরি করছেন, এটা যে কি বিপুল পাওয়া, তা অনুধাবন করতে হবে। 

তিনি বলেন, মুখস্ত করে পরীক্ষা দিলাম, জিপিএ৫ পেলাম, সবাই বাহবা দিলো- এ চিন্তা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। শিক্ষার্থী কতটুকু শিখছে সে বিষয়টিতে প্রাধান্য দিতে হবে। তাহলেই নতুন কারিকুলামের সুফল পাওয়া যাবে। শিক্ষকদের শিক্ষা বা পাঠদানের প্রতি যে দৃষ্টিভঙ্গি তা বদলাতে হবে। 

শিক্ষকরা যা বলছেন 

নতুন কারিকুলামকে ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখছেন শিক্ষকরা। মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিষদের সভাপতি ও লৌহজং পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নৃপেন্দ্র চন্দ্র দাস দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়ন শুরু হলে শিক্ষকদের বেগ পেতে হবে বলে মনে হয় না। আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলোও এ জন্য প্রস্তুত। মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী যে বর্ণনা দিয়েছেন ও পত্রপত্রিকায় যা দেখেছি, তাতে নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়ন কঠিন হবে না।

তিনি আরও বলেন, নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়নে কারিগরি ট্রেডের জন্য শিক্ষক নিয়োগ প্রয়োজন হবে। তাছাড়া যে প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে সংযুক্ত ভোকেশনাল শাখা আছে, সে প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষেত্রে ট্রেড ইন্সট্রাক্টররাই পড়াতে পারবেন। আর বাকি প্রতিষ্ঠানগুলোতে সরকার যদি প্রশিক্ষণ দেয় তাহলে শিক্ষকদের ভোগান্তি হবে না। 

একই কথা বলেছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমাজের নেতা ও সহকারী শিক্ষক শাহীনূর আল-আমিন। তিনি দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, নতুন কারিকুলামে শিক্ষাকে সহজ করা হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে যা ঘোষণা করা হয়েছে তা দেখে যতটুকু বোঝা যাচ্ছে, আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা নিশ্চিত করা হচ্ছে। ঘোষণা অনুযায়ী কারিকুলাম হলে শিক্ষকদের ভোাগন্তি হবে না। নতুন কারিকুলাম যদি ঘোষণা অনুযায়ী হয় আমরা সেটাকে স্বাগত জানাই। 

গণমাধ্যমকে সহযোগিতার অনুরোধ : 

নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়নে গণমাধ্যমের সহযোগিতা চেয়েছেন শিক্ষা প্রশাসনের কর্তারা। এনসিটিবির সদস্য অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়নে গণমাধ্যমের সহযোগিতা প্রয়োজন। নতুন কারিকুলামে শিক্ষকদের প্রথমে অনলার্ন করিয়ে পরে আবার নতুন বিষয়ে পারদর্শী করতে হবে। এ বিষয়টি নিয়ে ইতিবাচক ধারণা রাখা প্রয়োজন। গণমাধ্যম যদি এ ক্ষেত্রে সহযোগিতা না করে তা হলে এটা বাস্তবায়ন কঠিন হবে। নতুন কারিকুলামে আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষায় শিক্ষিত হবে শিক্ষার্থীরা। এজন্য শিক্ষক শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমকর্মীদেরও পুরোনো চিন্তাধারা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। 

আরো দেখুন

কোন তথ্য খুঁজে পাওয়া যাইনি