Loading..

ম্যাগাজিন

১৭ অক্টোবর, ২০২১ ১০:৪২ পূর্বাহ্ণ

চলতি বছর বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার হবে ৪.৬ শতাংশ : আইএমএফ দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার তৃতীয় সর্বোচ্চ

চলতি বছর বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার হবে ৪.৬ শতাংশ : আইএমএফ
দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার তৃতীয় সর্বোচ্চ

প্রকাশের সময় : October 14, 2021, 12:01 am

আপডেট সময় : October 14, 2021 at 11:00 am


সোহেল রহমান : চলতি পঞ্জিকা বছর শেষে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির হার ৪ দশমিক ৬ শতাংশ দাঁড়াতে পারে বলে পূর্বাভাস ব্যক্ত করেছে ‘আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল’ (আইএমএফ)।
ওয়াশিংটনে বার্ষিক সভা উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার রাতে সংস্থাটি কর্তৃক প্রকাশিত ‘মহামারির সময় অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার’ শীর্ষক ‘ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুক’ (ডব্লিউইও)-এ এই পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে।

সংস্থাটি বলেছে, বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার আগের প্রাক্কলনের চেয়ে শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ কমবে। প্রসঙ্গত, গত এপ্রিলে প্রকাশিত আউটলুক-এ চলতি পঞ্জিকা বছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৫ শতাংশ হতে পারে বলে পূর্বাভাস দেয়া হয়েছিল।
আইএমএফ বলছে, ২০২২ সালে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার হবে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ। সংস্থার গত এপ্রিলের প্রতিবেদনে প্রবৃদ্ধির হার ৭ দশমিক ৫ শতাংশ হবে বলে প্রাক্কলন করা হয়েছিল।

এদিকে আইএমএফ-এর পূর্বাভাসে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার আরও কমতে পারে বলা হলেও চলতি অর্থবছর শেষে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার আরও বাড়তে পারে বলে মনে করছে একাধিক আন্তর্জাতিক সংস্থা। বিশ্বব্যাংক-এর গত গত ৭ অক্টোবরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার হবে ৬ দশমিক ৪ শতাংশ হবে। বহুজাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক বলেছে, চলতি অর্থবছরে ৭ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হতে পারে।
প্রসঙ্গত, ‘বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো’ (বিবিএস)-এর সাময়িক হিসাব অনুযায়ী সর্বশেষ ২০২০-২১ অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার হচ্ছে ৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ।

আইএমএফ-এর আউটলুক-এ বৈশ্বিক, উন্নত ও উন্নয়শীল দেশগুলোর জিডিপি প্রবৃদ্ধিরও পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। সংস্থাটি বলেছে, করোনা সংকট কাটিয়ে বিশ্ব অর্থনীতি আবার ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। চলতি বছরে বৈশ্বিক অর্থনীতির গড় প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৫ দশমিক ৯ শতাংশ। গত বছর প্রবৃদ্ধির হার ছিল ঋণাত্মক (-৩.১%)।

সংস্থাটি বলছে, ২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি ও জাপানের মতো উন্নত দেশগুলোর অর্থনীতি আগের চেয়ে সংকুচিত হয়েছে। ফলে সেসব দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হার নেতিবাচক হয়ে গিয়েছিল। চলতি ২০২১ সালে এসব বড় অর্থনীতির দেশের প্রবৃদ্ধি ব্যাপকভাবে ইতিবাচক ধারায় ফিরবে। প্রায় শূন্য দশমিক ৯ শতাংশ এগিয়ে যাবে। করোনার উৎসস্থল চীনের প্রবৃদ্ধিতে বড় ধরনের উল্লম্ফন হতে পারে। দেশটির প্রবৃদ্ধির হার ৮ শতাংশ ছাড়িয়ে যেতে পারে।

আইএমএফ-এর মতে, তবে বড় অর্থনীতির দেশগুলো এগিয়ে গেলেও তুলনামূলকভাবে পিছিয়ে থাকবে উন্নয়নশীল দেশগুলো। বড় অর্থনীতিগুলো আগামী বছর নাগাদ প্রাক্-মহামারি পর্যায়ে ফিরে গেলেও উন্নয়নশীল দেশগুলো ২০২৪ সালেও সে পর্যায়ে যেতে পারবে না। প্রাক্-মহামারি সময়ের চেয়ে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ পিছিয়ে থাকবে। ফলে এসব দেশের মানুষের জীবনমান অনেকটাই পিছিয়ে যাবে।

প্রতিবেদন প্রকাশকালে আইএমএফ-এর প্রধান অর্থনীতিবিদ গীতা গোপীনাথ এ বিষয়টিকে ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেন, বিশ্ব এক প্রলম্বিত অনিশ্চয়তার মুখে পড়ছে। মহামারি দীর্ঘ হওয়ার কারণেই অনিশ্চয়তা দীর্ঘায়িত হচ্ছে। এ অনিশ্চয়তার জের আগামী বছরেও কিছুটা থাকবে। এরপর ধীরে ধীরে তা কমে আসবে।

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর বিষয়ে আইএফএফ বলেছে, এ বছর দক্ষিণ এশিয়ায় তৃতীয় সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি হতে পারে বাংলাদেশে। বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে থাকবে মালদ্বীপ ও ভারত। সংস্থার মতে, ২০২১ সালে দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি হবে মালদ্বীপে ১৮ দশমিক ৯ শতাংশ, এরপর ভারতে সাড়ে ৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে। এছাড়া পাকিস্তানে ৩ দশমিক ৯ শতাংশ, শ্রীলঙ্কার ৩ দশমিক ৬ শতাংশ, নেপালের ১ দশমিক ৮ ও ভূটানে ঋণাত্মক (-১.৯%) প্রবৃদ্ধি হতে পারে। আফগানিস্তানের জন্য কোনো পূর্বাভাস দেয়নি আইএমএফ।

আইএফএফ-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, মাথাপিছু জিডিপি-তে ভারতকে আবারও ছাড়িয়ে যেতে পারে বাংলাদেশ। ২০২১ সালে চলতি মূল্যে বাংলাদেশের মাথাপিছু জিডিপি দাঁড়াবে ২ হাজার ১৩৮ দশমিক ৭৯৪ ডলার। আর একই সময়ে ভারতের মাথাপিছু জিডিপি দাঁড়াবে ২ হাজার ১১৬ দশমিক ৪৪৪ ডলার। ফলে এ নিয়ে পরপর দুই বছর ভারতকে পেছনে ফেলল বাংলাদেশ।

 

আরো দেখুন

কোন তথ্য খুঁজে পাওয়া যাইনি