Loading..

খবর-দার

২০ অক্টোবর, ২০২১ ০৯:৪১ পূর্বাহ্ণ

ওমান ‘পরীক্ষা’য় পাস করল বাংলাদেশ

বাংলাদেশের সংগ্রহটা আহামরি কিছু ছিল না। তবে ১৫৩ রান ওমানের জন্য যথেষ্ট হওয়ারই কথা। কিন্তু ওমানের ইনিংসের শুরুতে সেটিই মনে হচ্ছিল অপর্যাপ্ত। ওপেনার যতীন্দর সিং যতক্ষণ ছিলেন, মনে হচ্ছিল ওমান খুব সহজেই রানটা তাড়া করবে। দুটি ক্যাচ ফেলে বাংলাদেশের ফিল্ডাররাও ওমানের জন্য কাজটা সহজ করে দিয়েছিলেন প্রায়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত অভিজ্ঞতার সঙ্গে পেরে ওঠেনি ওমানিরা। ম্যাচটা ২৬ রানে জিতেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে টিকে রইল বাংলাদেশ।

যতীন্দরের ক্যাচ ফেলেছেন মাহমুদউল্লাহ। মোস্তাফিজুর রহমানের বলে তাঁর তুলে মারা বল তিরিশ গজ বৃত্তের মধ্যে ধরতে পারতেন অনেকেই। কিন্তু অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ কেন এগিয়ে এলেন, সেটি বোঝা যায়নি। সহজ ক্যাচটা কঠিন বানিয়েই ফেলে দেন তিনি। এর আগে কাশ্যপ প্রজাপতির ক্যাচ স্লিপে দাঁড়িয়ে ফেলেছেন মোস্তাফিজ নিজেই। তবে ওমানের এই দুই ব্যাটসম্যানই আজ আসলে বাংলাদেশি বোলারদের পরীক্ষাটা নিয়েছেন। যতীন্দর ৩৩ বলে ৪০ রান করেছেন। মেরেছেন ৪ বাউন্ডারি ও একটি ছয়। প্রজাপতির ইনিংসটি ছিল ১৮ বলে ২১ রানের। এই দুজনকে ফিরিয়েছেন সাকিব ও মোস্তাফিজ। দলের সেরা বোলার মোস্তাফিজ। ৩ ওভার বোলিং করে ২৪ রান দিয়ে নিয়েছেন ৪ উইকেট। অথচ, মোস্তাফিজের বোলিংয়ের শুরুটা ছিল বেশ বাজে। প্রথম ওভারেই ৫টি ওয়াইড দিয়েছিলেন তিনি। ওমান যে চাপ হয়ে বসেছিল বাংলাদেশের ওপর, সেটি মোস্তাফিজের প্রথম ওভারই প্রমাণ। সাকিব ২৮ রানে নিয়েছেন ৩ উইকেট। গুরুত্বপূর্ণ সময়েই সাকিব বল হাতে হয়ে উঠেছিলেন ত্রাতা।

সাকিব-মোস্তাফিজকে নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন আর মেহেদী হাসানকে ভুলে গেলে চলবে না। এই দুজনের উইকেটের কলাম খালি খালি লাগলেও তাঁরা দুজনই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন এ জয়ে। সাইফউদ্দিন ৪ ওভার বোলিং করে ১৬ রান দিয়ে নিয়েছেন ১ উইকেট। মেহেদী তাঁর অফ ব্রেকে উইকেট পাননি, কিন্তু ৪ ওভারে দিয়েছেন মাত্র ১৪ রান। ওই এক যতীন্দর সিং যা শুরু করেছিলেন, ওমান যে পরবর্তীতে খেই হারিয়ে ফেলল, তা তো এ দুজনের মাঝের ওভারগুলোতেই।

স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে হারের পর বড় একটা পরীক্ষাই দিল আজ বাংলাদেশ। জয়ে অনেক কিছু ঢেকে যায়। কিন্তু ওমানের বিপক্ষে আজকের এই জয়ও দলের দৈন্য ঢাকতে দিচ্ছে না। এই দলের বিপক্ষেও রান পেলেন না লিটন দাস, মুশফিকুর রহিমরা। সৌম্য সরকারের জায়গায় সুযোগ পেয়ে মোহাম্মদ নাঈম ৫০ বলে ৬৪ রানের এক ইনিংস খেললেন বটে, কিন্তু সেটি ঠিক সেভাবে স্বস্তি দিল না ক্রিকেটপ্রেমীদের। এ ইনিংস খেলতে গিয়েই যে দুটি জীবন পেয়েছেন তিনি। সাকিব আল হাসান আজ নাঈমকে সঙ্গ দিয়েছেন ভালো। ২৯ বলে ৪২ রান করেছেন ঠিকই। কিন্তু তাঁর মতো অভিজ্ঞ ক্রিকেটার ইনিংসের শেষ পর্যন্ত থেকে নেতৃত্ব দিতে পারেননি। তারপরেও পাওয়ার প্লেতে ২৯ রানে ২ উইকেট (লিটন ও মেহেদী) হারানো বাংলাদেশ নাঈমের সঙ্গে সাকিবের সঙ্গে ৮০ রানের জুটিতেই ঘুরে দাঁড়িয়ে জয়ের মতো একটা সংগ্রহ দাঁড় করাতে পেরেছে। তবে এ দুজনের পর বাংলাদেশের মিডল অর্ডার শঙ্কা তৈরি করেছিল। দ্রুতই ফিরে গেছেন নুরুল হাসান, আফিফ হোসেনরা। মুশফিক আটে নেমে আজও নিজের মতো করে খেলতে পারেননি। মাহমুদউল্লাহর ব্যাটে বল লাগলেও তিনি ইনিংসের শেষ পর্যন্ত থাকতে পারেননি।

ম্যাচের শেষ দিকে পরপর দুটি ক্যাচ নিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। দুটিই লং অফে দাঁড়িয়ে। কিন্তু ক্যাচ ধরার পর কাউকেই উদ্‌যাপন করার জন্য নিজের কাছে ঘেঁষতে দেননি তিনি। ইশারায় নিজ নিজ ফিল্ডিং পজিশনে দাঁড়িয়ে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। ম্যাচের এই একটি দৃশ্যপটই বলে দেয় অনেক কিছু। জয়ের পর নির্লিপ্ত শরীরী ভাষাও জানিয়ে দিয়েছে-ওমান বড় একটা পরীক্ষাই নিয়েছে বাংলাদেশের। সেই পরীক্ষায় পাশটা লেটার মার্ক নিয়ে নয় বরং টেনেটুনেই।