সহকারী অধ্যাপক
২০ অক্টোবর, ২০২১ ০৫:৫৭ অপরাহ্ণ
জিআই সনদ পাচ্ছে ফজলি আম ও বাগদা চিংড়ি
জিআই
সনদ পাচ্ছে ফজলি আম ও বাগদা চিংড়ি
এবার
আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেতে যাচ্ছে বাংলাদেশের ফজলি আম ও বাগদা চিংড়ি। ক্ষীরশাপাতি
আমের পর রসালো, আঁশবিহীন, আকারে বড় ফজলি আম এবং কালো ডোরা কাটা বাগদা চিংড়ি খুব
শিগগিরই জিওগ্রাফিক্যাল ইনডিকেটর বা জি-আই সনদ পাচ্ছে।
সরকারের
পেটেন্টস, ডিজাইন এবং ট্রেডমার্ক বিভাগের রেজিস্টার মো. আবদুস সাত্তার বিষয়টি
জানিয়েছেন। তিনি জানান, ফজলি আম ও বাগদা চিংড়ির জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিতে
গেজেট প্রকাশ করা হয়ে গেছে। ১৫ দিনের মধ্যে সনদ দেবার কাজ শেষ হবে বলে তিনি
জানান। খবর বিবিসি বাংলার।
আবদুস
সাত্তার জানান, নিয়ম অনুযায়ী স্বীকৃতির জন্য আবেদন আসার পরে এই দুটি কৃষি পণ্যের
ভৌগলিক নির্দেশক যাচাই করা হয়েছে, দুটি জার্নাল প্রকাশ করা হয়েছে। এই পণ্যের
নির্দেশক নিয়ে এখনো কেউ আপত্তি করেনি। জার্নাল প্রকাশের দুই মাসের মধ্যে এটি
নিজেদের বলে কেউ আপত্তি না করলে সনদ দেওয়া হবে।
ফল
উন্নয়ন গবেষণা কেন্দ্র ফজলি আমের জিআই সনদের আবেদন করেছিল। আর বাগদা চিংড়ির জন্য
আবেদন করে মৎস্য অধিদপ্তর।
মৌসুমের
শেষের দিকে বাজারে আসা ফজলি পাশের দেশ ভারতের পশ্চিমবঙ্গেও উৎপাদন করা হয়। আর
লবণাক্ত পানির বাগদা চিংড়ি এশিয়ার বেশ কিছু দেশে হয়। কিন্তু এই দুটি কৃষি
পণ্যকে বাংলাদেশের পণ্য হিসেবে কেন সনদ দেওয়া হচ্ছে তার ব্যাখ্যায় আবদুস সাত্তার
বলেন, ‘যে পণ্য একটি অঞ্চলের ঐতিহ্যের অংশ সেটির ক্ষেত্রে এই সনদ দেয়া হয়।
আবহাওয়া, মাটি, পানি ও ভৌগলিক গঠনের উপরে যেকোনো কৃষি পণ্যের বৈশিষ্ট্য, ঘ্রাণ ও
স্বাদ নির্ভর করে এবং নির্দিষ্ট অঞ্চলেই সেটা হবে।যেমন এশিয়ার বেশ কিছু দেশে
ব্ল্যাক টাইগার শ্রিম্প বা বাগদা চিংড়ি পাওয়া যায়। কিন্তু আমাদের এখানে যেটা
হয় সেটার বৈশিষ্ট্য অন্য কোনটার সাথে মিলবে না। অন্য কোথাও চাষ হলেও সেটার স্বাদ
ও ঘ্রাণ মিলবে না।’
এখন
পর্যন্ত বাংলাদেশের মোট ৯টি পণ্য জিআই সনদ পেয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ইলিশ মাছ,
চাঁপাইনবাবগঞ্জের ক্ষীরশাপাতি আম, দিনাজপুরের কাটারিভোগ ও বাংলাদেশি কালিজিরা,
জামদানি, ঢাকাই মসলিন, রাজশাহীর সিল্ক, রংপুরের শতরঞ্জি এবং নেত্রকোনার বিজয়পুরের
সাদা মাটি।
জিআই
সনদ পাওয়া প্রসঙ্গে আবদুস সাত্তার বলেন, ‘আমরা দেখেছি যে জিআই সনদ পাওয়ার পর
বিদেশের বাজারে বিভিন্ন পণ্যের দাম ৩০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ে। জিআই ট্যাগ
ব্র্যার্ন্ডিং হিসেবে কাজ করে। বাংলাদেশ থেকে অনেকে বাগদা চিংড়ি রপ্তানি করছে।
জিআই সনদ না থাকলে এর মূল্য কম হয়। ক্রেতারা এটিকে ব্র্যান্ডেড বলে মনে করে না।’
তিনি
বলছেন, ‘বিসিকের তথ্য অনুযায়ী জামদানি জিআই সনদ পাওয়ার পর রপ্তানি এবং মূল্য
দুটোই বেড়েছে। জিআই সনদ পেলে বাংলাদেশ পণ্যটি উৎপাদন করার অধিকার এবং আইনি
সুরক্ষা পাবে। অন্য কোন দেশ আর সেগুলোকে নিজেদের বলে দাবি করতে পারবে না।’ সূত্র,২০ অক্টোবর,সমকাল।