Loading..

খবর-দার

০৯ এপ্রিল, ২০২২ ০৬:০৮ অপরাহ্ণ

গোটা দেশে এ উদ্যোগ ছড়িয়ে যাক-কৃষিবান্ধব বিদ্যালয়

করোনার কারণে ঝরে যাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়ে গেছে। অভাব-অনটনের কারণে মেয়েরা বাল্যবিবাহের শিকার হয়েছে আর ছেলেরা যুক্ত হয়েছে শিশুশ্রমে। ফলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের ধরে রাখতে পরিবারে আর্থিক সচ্ছলতা থাকা জরুরি। সেটিই বাস্তবায়নের মাধ্যমে প্রমাণ করে দেখাল রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার ২৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। স্কুল থেকে কৃষির প্রশিক্ষণ পেয়ে সেটি কাজে লাগিয়ে নিজেদের পড়ালেখার খরচ নিজেরাই মেটাচ্ছে তারা। সেই সঙ্গে দূর হচ্ছে পরিবারের আর্থিক অনটনও। নিঃসন্দেহে আনন্দের সংবাদ এটি।

থম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, বসতবাড়িভিত্তিক কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে অপুষ্টিজনিত রোগ প্রতিরোধ, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা ও পরিবারের খাদ্যচাহিদা পূরণ করার জন্য উপজেলার ২৬টি সরকারি-বেসরকারি স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের এখন সবজি চাষের ওপর ১৫ দিন পরপর ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মাঠে সবজির বাগান তৈরি করে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণও দেওয়া হচ্ছে। বেসরকারি সংস্থা ইএসডিও জানো প্রকল্পের সহযোগিতায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় ২০১৮ সাল থেকে এ প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। তাদের শেখানো পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীরা বাড়ির উঠান ও পতিত জায়গায় সবজির চাষ করে স্বাবলম্বী হচ্ছে।

এ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ নিয়ে অনেক শিক্ষার্থী সবজি চাষ করছে, মা-বাবাসহ পরিবারের অন্য সদস্যদেরও এর সঙ্গে যুক্ত করেছে। উৎপাদিত সবজি শুধু বাড়ির প্রয়োজনেই কাজে আসছে না, সবজি বিক্রির টাকা দিয়ে শিক্ষার্থীরা তাদের কাপড়, বই-খাতা-কলমও কিনছে। এর বাইরে পরিবারের ভাগ্যেও পরিবর্তন আসছে। অনেক অভিভাবকের বক্তব্য, ছেলেমেয়ের পড়াশোনার খরচ এখন আর দিতে হয় না। উল্টো সবজি বেচার টাকা দিয়ে অনেকে হাঁস-মুরগি ও ছাগল-বাছুর কিনে আরও বড় কিছু করার স্বপ্ন দেখছে। কৃষির প্রতি শিক্ষার্থীদের এমন আগ্রহ সমাজের অন্যদেরও অনুপ্রাণিত করছে। স্থানীয় কৃষকেরাও এখন তাদের সবজি চাষের পদ্ধতি অনুকরণ করেন।

বাল্যবিবাহ ও শিশুশ্রম রোধের নানা উপায় নিয়ে আমরা আলোচনা দেখতে পাই। সেদিক দিয়ে ইএসডিও জানো প্রকল্পটি অবশ্যই বাস্তবসম্মত ও অধিক কার্যকর। গোটা প্রকল্প জেলা-উপজেলার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছড়িয়ে দেওয়া হোক। অন্যান্য বেসরকারি সংস্থা চাইলে দেশের সর্বত্র এমন উদ্যোগ নিতে পারে। সরকারও চাইলে শিক্ষা ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে এমন একটি সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারে। আমরা জানো প্রকল্পের এমন অনুসরণীয় উদ্যোগের জন্য তাদের অভিনন্দন জানাই।