Loading..

খবর-দার

১৮ মে, ২০২২ ০৭:০৫ অপরাহ্ণ

সিলেটে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত, বেড়েছে দুর্ভোগ।( প্রথম আলো)

নতুন করে কোনো গ্রাম প্লাবিত না হলেও সিলেটে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। আজ বুধবার সকাল ছয়টায় সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ১ দশমিক ৩ সেন্টিমিটার এবং সুরমা পয়েন্টেও বিপৎসীমার শূন্য দশমিক ৪৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বন্যার পানি না নামায় সিলেট নগরসহ ১৩টি উপজেলার বানভাসি মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে।


ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল অব্যাহত আছে। আজ আকাশে সূর্যের দেখা মিললেও সিলেটের নদ-নদীর পানি আগের মতোই আছে। দু-একটি স্থানে নদীর পানি কিছুটা কমলেও জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত আছে। প্লাবিত এলাকায় দেখা দিয়েছে খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকট। তা ছাড়া বানভাসি মানুষজন গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন।

নগরের জামতলা এলাকার বাসিন্দা রজতকান্তি গুপ্ত বলেন, তাঁর বাসায় গত তিন ধরে বন্যার পানি। জরুরি কাগজপত্রসহ বিভিন্ন জিনিস নষ্ট হয়েছে। বাসায় পানি ওঠায় পরিবারের সদস্যদের তিনি বোনের বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছেন। বাসা পাহারা দেওয়ার জন্য তিনি পার্শ্ববর্তী একটি আবাসিক হোটেলে রাত থাকছেন। বন্যার জমে থাকা পানি দুর্গন্ধযুক্ত হওয়ায় নগরের বানভাসি মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন।

স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও বানভাসি মানুষের সূত্রে জানা গেছে, সিলেট নগরের অন্তত ২৫টি এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকায় হাঁটু থেকে কোমরসমান পানি আছে। উপজেলাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্লাবিত হয়েছে কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট, জকিগঞ্জ, জৈন্তাপুর ও সিলেট সদর উপজেলা। জেলার ১৩টি উপজেলার হাজারো গ্রামের কয়েক লাখ মানুষ পানিবন্দী আছেন।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, জেলায় প্লাবিত এলাকার মানুষজনের মধ্যে আজ বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ১৪৯ মেট্রিক টন চাল ও ১ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছে। এরই মধ্যে নতুন করে আরও বরাদ্দ পাওয়া গেছে ১০০ মেট্রিক টন চাল, নগদ ১০ লাখ টাকা ও ৪ হাজার শুকনা খাবারের প্যাকেট। জেলার ৬০টি ইউনিয়ন কমবেশি প্লাবিত হয়েছে বলে জেলা প্রশাসনের একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।

সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. আনোয়ার সাদাত আজ বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, জেলায় ২৭৪টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এর মধ্যে ৭৮টি ব্যবহার হচ্ছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন ৬ হাজার ৪৭৫ জন। ২২০টি গবাদিপশুও আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই পেয়েছে। মানুষজন রাতের বেলা আশ্রয়কেন্দ্রে থাকলেও সকালে অনেকে বেরিয়ে গেছেন নিজেদের ঘরবাড়ি দেখতে কিংবা কাজে যোগ দিতে। তাঁরা রাতের বেলা এসে আবার আশ্রয় নেবেন বলেও জানিয়েছেন।

এর আগে এক সপ্তাহ ধরে ভারতের উজান থেকে পাহাড়ি ঢল নামছে। পাশাপাশি সিলেটে ভারী বৃষ্টিও হচ্ছে। এতে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় জেলায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। জেলার প্রধান দুটি নদী সুরমা ও কুশিয়ারাসহ অন্যান্য নদ-নদীর পানি উপচে একের পর এক এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। ডুবে গেছে ফসলের খেত, ভেসে গেছে পুকুরের মাছ। অসংখ্য বাসাবাড়িতেও পানি ঢুকেছে।