টিকাবিহীন উত্তর কোরিয়ার মানুষদের মধ্যে দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে
করোনাভাইরাস। এ রোগ প্রতিরোধে অ্যান্টি-ভাইরাল ওষুধ ছাড়াই লড়াই করছে দেশটি।
খবর বিবিসির।
২০২০ সালের শুরুর দিকে করোনা মহামারির হাত থেকে
নিজের নাগরিকদের রক্ষার কথা বলে সীমান্ত বন্ধ করে দেয় কিম জং উনের দেশ।
শীর্ষ এ নেতা এখনও পর্যন্ত বাইরের চিকিৎসা সহায়তা প্রত্যাখ্যান করছেন।
এদিকে ছড়িয়ে পড়া ‘জ্বর’ থেকে সেরে উঠতে দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম পরামর্শ দিচ্ছে, ঐতিহ্যবাহী চিকিৎসাপদ্ধতি অনুসরণের জন্য।
গরম পানীয়
উত্তর
কোরিয়ার ক্ষমতাসীন দলের পত্রিকা রডং সিমনান পরামর্শ দিয়েছে, যারা গুরুতর
অসুস্থ নয় তাদের আদা অথবা হানিসাকল (এক ধরনের ঔষধি গুণসম্পন্ন পাতা ও ফুল)
চা ও ইউলো পাতার পানি পান করার জন্য।
এ ধরনের গরম পানীয় গলা ব্যথা
এবং কফের মতো করোনা ভাইরাসের হালকা লক্ষণ থেকে আরাম দিতে পারে। এ ছাড়া
শরীর থেকে বেশি পানি বের হয়ে গেলে সেটির অভাবও পূরণ হয়।
আদা এবং ইউলো পাতা শরীরের প্রদাহ এবং ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। কিন্তু এগুলো করোনা ভাইরাস সংক্রমণের চিকিৎসা নয়।
লবণ পানি
উত্তর
কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম সম্প্রতি এক দম্পতির সাক্ষাৎকার নিয়েছে,
যারা সকাল-বিকাল লবণ পানি দিয়ে গার্গল করার পরামর্শ দিয়েছে।
সংবাদমাধ্যম জানায়, রাজধানী পিয়ংইয়ং-এ এক হাজার টন লবণ পাঠানো হয়েছে।
কোনো কোনো গবেষণায় বলা হয়েছে, লবণ পানি দিয়ে গার্গল করা সাধারণ ভাইরাস জনিত ঠাণ্ডা লাগা থেকে মুক্তি দিতে পারে।
গবেষণাগারের
পরীক্ষায় দেখা গেছে, মাউথওয়াশ করোনা ভাইরাস ধ্বংস করতে পারে। তবে
মানুষের শরীরে ভাইরাস সংক্রমিত হলে, সেটি করতে পারে কি না— সে সম্পর্কে
কোনো প্রমাণ নেই
পেইন কিলার ও অ্যান্টিবায়োটিক
রাষ্ট্রীয়
টেলিভিশন পরামর্শ দিচ্ছে, আইবুপ্রোফেন-এর মতো ব্যথানাশক ঔষধ এবং
অ্যামোক্সিসিলিন-এর মতো অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করার জন্য। আইবুপ্রোফেন
শরীরের তাপমাত্রা কমাতে সাহায্য করে এবং মাথাব্যথা ও গলাব্যথার উপশম দিতে
পারে।
গবেষণাগারের পরীক্ষায় দেখা গেছে, কিছু অ্যান্টিবায়োটিক করোনা
ভাইরাসসহ অন্যান্য ভাইরাসের বিস্তার কিছুটা থামাতে পারে। কিন্তু বাস্তবে
সেটির প্রতিফলন পাওয়া যায়নি।
চিকিৎসা ব্যবস্থা
উত্তর
কোরিয়ার সব নাগরিককে মৌলিক চিকিৎসা সেবা দেওয়ার পাশাপাশি বিনা খরচে
সরকারি হাসপাতালে বিশেষায়িত চিকিৎসাও দেওয়া হয়। তবে সাম্প্রতিক
বছরগুলোতে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা এবং তীব্র খরার কারণে দেশটির অর্থনীতি
সংকুচিত হয়েছে।
এসব কারণে রাজধানী পিয়ংইয়ং-এর বাইরের হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসাসেবা কর্মী, ওষুধ এবং যন্ত্রাপাতির সংকট রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টিকা কর্মসূচি গ্রহণ না করায় দেশটির আড়াই কোটি মানুষ বেশ ঝুঁকিতে আছে।
গত বছর বিভিন্ন দেশ উত্তর কোরিয়াকে করোনা ভাইরাসের টিকা সরবরাহ করার প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু তারা সেসব প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছে।