সহকারী অধ্যাপক
০২ আগস্ট, ২০২২ ০৫:৩৯ অপরাহ্ণ
দাম বাড়ার চাপে পিষ্ট নিম্ন ও মধ্যবিত্ত
দাম
বাড়ার চাপে পিষ্ট নিম্ন ও মধ্যবিত্ত
নিত্যপণ্যের বাজার যেন মগের মুলুকে
পরিণত হয়েছে। বৈশ্বিক অস্থিরতাসহ বিভিন্ন অজুহাতেই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে জিনিসপত্রের
দাম। দাম বাড়েনি, বাজারে এমন পণ্য খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। সরকারি হিসাবেও মিলছে বাড়তি
দামের নজির। বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দামে এখন মানুষের চোখে সরষেফুল দেখার
মতো অবস্থা। দিন দিন দ্রব্যমূল্য বাড়লেও বাড়ছে না উপার্জন। আর তাই সাধারণ আয়ের
মানুষের জন্য জীবনযাপন প্রচলিত ছন্দে রাখা মুশকিল হয়ে পড়েছে। দ্রব্যমূল্যের
ঊর্ধ্বগতিতে মধ্যবিত্তরাসহ সবাই আছে ত্রিশঙ্কু (অনিশ্চিত) অবস্থায়। তাদের
বোবাকান্না যেন কোনোভাবেই সংশ্লিষ্টদের কানে পৌঁছায় না।
তেমনি নিত্যপণ্যের দামে লাগাম টানা যাচ্ছে না,
তাই মূল্যস্ফীতির পারদও চড় চড় করে ওপরে উঠছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর দেয়া
তথ্য অনুসারে, জুন মাসে দেশের খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ৩৭
শতাংশে- যা বিগত ৮ বছরে সর্বোচ্চ। এ কারণে জীবনযাত্রার ব্যয় মেটাতে গিয়ে
মূল্যস্ফীতির সঙ্গে রীতিমতো লড়াই করতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। মজুরি সূচক ও
মূল্যস্ফীতি প্রায় কাছাকাছি চলে আসছে। আর তাই আয়ের তুলনায় নিত্যপণ্যের ক্রমবর্ধমান
চড়া দামের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে ব্যর্থ হয়ে, ভোক্তারা এখন তাদের ব্যয় কমাচ্ছে।
এদিকে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ানোর অজুহাতে গত এক বছরে দফায় দফায় সংকট সৃষ্টি
করেছে নিত্যপণ্যের কারবারিরা। সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিবারই সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে
ব্যবস্থা নেয়ার বুলি আওড়ানো হয়েছে। ব্যবসায়ীদের ডেকে বৈঠক করা হয়েছে। আর প্রতিটি
বৈঠকের পরই এসেছে নতুন করে দাম বাড়ানোর ঘোষণা। সাধারণ মানুষের স্বার্থ ও
ক্রয়ক্ষমতা বিবেচনা না করে দফায় দফায় দাম বাড়িয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। আর এমন
সুযোগ হাতছাড়া করছে না মুনাফালোভীরা। কিছুদিন পর পরই কোনো একটি পণ্যের কৃত্রিম
সংকট সৃষ্টির কৌশলে সরকারের সঙ্গে দেন-দরবার করে বাড়িয়ে নিচ্ছে দাম। বাজারে সেই
দামেও পণ্যটি পায় না সাধারণ মানুষ। মজুত করে আরো দাম বাড়িয়ে মুনাফা লুটছে এক শ্রেণির
অসাধু ব্যবসায়ীরা। মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজারে মুনাফাখোরদের এমন
দৌরাত্ম্য এখন স্থায়ী রূপ লাভ করেছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
সরকারি হিসেবেও প্রায় অধিকাংশ পণ্যের দাম
বেড়েছে কয়েকগুণ। সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) এর হিসাব থেকে
গত বছরের ১ আগস্ট থেকে চলতি বছরের ১ আগস্ট পর্যন্ত এক বছরে নিত্যব্যবহার্য
গুরুত্বপূর্ণ ১৫টি পণ্যের দাম পর্যালোচনা করে দেখা গেছে- চাল, ডাল, আটা, ময়দা,
সয়াবিন তেল, আলু, গুঁড়া দুধ, গরুর গোশত, ব্রয়লার মুরগি, ডিম, চিনি, শুকনা মরিচ,
হলুদ, ধনিয়া, জিরা ইত্যাদির দাম কয়েকগুণ বেড়েছে। ২ আগস্ট।