Loading..

খবর-দার

২৫ মার্চ, ২০১৯ ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিকট হতে স্বাধীনতা পুরষ্কার ২০১৯ গ্রহণ করলেন সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি
""স্বাধীনতা পদক--২০১৯"""এর জন্য মনোনীত মহান মুক্তিযুদ্ধের সাব-সেক্টর কমান্ডার,বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য, সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন(এম,পি) আজ রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে স্বাধীনতা পদক গ্রহন করলেন প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে। দেশের ১৩ জন ব্যক্তি ও একটি প্রতিষ্ঠানকে এই বছর রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বাধীনতা পুরুষ্কার প্রদান করা হয়। তার মধ্যে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্য স্বাধীনতা পদক পেলেন মিরসরাইয়ের সাংসদ, সাবেক মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। তাঁর এই স্বীকৃতি মিরসরাই তথা চট্টগ্রামবাসীর জন্য আনন্দ ও গর্ভের। মীরসরাইয়ের এই কৃতিসন্তানের জীবনীর উল্লেখযোগ্য অংশ তুলে ধরা হল: চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল থেকে মেট্রিকুলেশন পাশ করেন ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ। ১৯৬২ সালে স্যার আশুতোশ কলেজ থেকে তিনি এইচএসসি পাশ করেন। ১৯৬৬ সালে লাহোরের ইঞ্জিনিয়ারিং ও কারিগরী বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিএসসি সম্পন্ন করেন। লাহোরে অধ্যয়নকালে তিনি ছয় দফা আন্দোলনের সাথে নিজেকে সম্পৃক্ত করে বিভিন্ন সময় মিছিল সমাবেশে সরাসরি নেতৃত্ব দেন। এসময় তিনি পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র পরিষদের সভাপতি ছিলেন। ১৯৬৬ সালে ছয় দফার যৌক্তিকতা তুলে ধরে লাহোরে পূর্ব পাকিস্তানে অধ্যয়নরত ছাত্রদের সংগঠন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র পরিষদের এক সমাবেশে তিনি সভাপতিত্ব করেন। দেশে ফিরে চট্টল শার্দুল এম. এ. আজিজের হাত ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত এবং স্বাধীনতা আন্দোলনে অতপ্রোতভাবে জড়িত হন। ১৯৭০ সালে তিনি সর্বপ্রথম তৎকালীন পূর্বপাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন।স্বাধীনতার পর তিনি ১৯৭৩, ১৯৮৬, ১৯৯৬, ২০০৮, ২০১৪ এবং গত ৩০ ডিসেম্ভর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি সংবিধান প্রণেতাদের মধ্যেও অন্যতম। ১৯৮৬ সালে জাতীয় সংসদে তিনি বিরোধী দলীয় হুইপের এবং ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৮ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি জাতীয় সংসদে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। তিনি গত সরকারে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বগ্রহণ করেছেন। রাজনীতিতে আসার পর তিনি দলের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮০ ও ৮৪ সালে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং ১৯৯২, ১৯৯৬, ২০০৪ এবং ২০১২ সালে সভাপতি এবং একই সাথে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। একজন সৎ, ভদ্র, নম্র, স্পষ্টবাদী ও উদার মনোভাবের মানুষ হিসেবে নিজ দলের নেতাকর্মীসহ চট্টগ্রামের সর্বস্তরের মানুষের নিকট তার সুনাম রয়েছে। রাজনীতি করতে গিয়ে এ সুদীর্ঘ সময়ে তিনি কখনও কোন সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে আশ্রয় প্রশ্রয় দেননি এবং কোন সন্ত্রাসী লালন করেননি। তিনি কখনও নীতি ও আদর্শের প্রশ্নে আপোষ করেননি। ১৯৭৫ পরবর্তী বিভিন্ন সরকারের মন্ত্রী পরিষদে অন্তর্ভূক্ত হওয়ার আহবান তিনি দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করেন এবং নিজ দলের আদর্শে অবিচল থেকেছেন সব সময়। রাজনীতি করতে এসে মুক্তিযুদ্ধসহ বহুবার তিনি জীবন মৃত্যুর মুখোমুখী হয়েছেন, নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। ১৯৮০ সালে চট্টগ্রামের নিউমার্কেট চত্বরে তৎকালীন বিএনপি’র সশস্ত্র সন্ত্রাসী কর্তৃক তিনি এবং আওয়ামীলীগের অনেক নেতৃবৃন্দ আক্রান্ত হন। এসময় সন্ত্রাসীরা তাঁর পায়ের রগ কেটে দেয়। ১৯৮৮ সালে ২৪শে জানুয়ারী শেখ হাসিনার মিছিলে পুলিশ কর্তৃক গুলি চালিয়ে ২৪ জনকে হত্যা করার ঘটনায় তিনিও মারাত্মকভাবে আহত হন। ১৯৯২ সালের ৮ মে ফটিকছড়িতে জামায়াত ক্যাডারদের সশস্ত্র হামলায় গুরুতর আহত হয়ে অলৈাকিকভাবে প্রাণে বেঁচে যান তিনি। মুক্তিযুদ্ধ : মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি সেক্টর- ১ এর সাব-সেক্টর কমান্ডার ছিলেন। ২৬ মার্চের কালোরাত্রির নৃশংসতা ঠেকাতে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের নেতৃত্বে সাহসী বীর বাঙালী যোদ্ধারা শুভপুর ব্রীজ উড়িয়ে দিয়ে কুমিল্লা থেকে আগমনকারী সেনাদলের পথ বন্ধ করে দিয়েছিলেন। এবং চট্টগ্রাম শহর ও ক্যান্টনমেন্টের প্রধান প্রধান এলাকা নিজেদের নিয়ন্ত্রনে নিয়েছিলেন। পরবর্তীতে তিনি সিইনসি স্পেশাল ট্রেনিং নিয়ে দেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অপারেশন পরিচালনা করেন।