Loading..

ম্যাগাজিন

২৫ জুন, ২০২০ ০১:৩২ পূর্বাহ্ণ

পেয়ারা ফলের উপকারিতাঃ

(Psidium guava). পেয়ারার ইংরেজি নাম : মিরটেসি (Myrteceae), পেয়ারার প্রায় ১০০টিরও বেশি প্রজাতি আছে। বাংলাদেশে বাণিজ্যিকভাবে বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, চট্টগ্রাম, ঢাকা, গাজীপুর, কুমিল্লা, মৌলভীবাজার, খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি প্রভৃতি এলাকায় এর চাষ হয়ে থাকে। বিভিন্ন জাতের দেশি পেয়ারা চাষের পাশাপাশি বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটের উদ্ভাবিত বিভিন্ন উন্নত জাতের পেয়ারা এখন আমাদের দেশের অনেক জায়গায় চাষ করা হচ্ছে এবং মেক্সিকো, মধ্য আমেরিকা, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া প্রভৃতি স্থানে পেয়ারা ভালো জন্মে। গাছ মধ্যম থেকে ছোট আকারের চিরহরিৎ বৃক্ষ। বাংলাদেশের অন্য পেয়ারা থেকে কাজি পেয়ারা আকৃতি ও গুণাগুণের বিচারে ভিন্নতর হয়ে থাকে। কাজি পেয়ারার ফল আকারে দেশি পেয়ারার বহুগুণ বড়। প্রতিটি ফলের ওজন ৭৫০ থেকে ১ হাজার গ্রাম হয়ে থাকে। ২ বছর বয়সের গাছ থেকে বেশ ফল পাওয়া যায়। মাটির কাছ থেকে ডালপালা বিস্তার করে। ফুল সাদা ঘ্রাণটিও চমৎকার। কাঠ শক্ত, ভারি ও টেকসই। গাছে উচ্চতা ১৫ থেকে ২৫ ফুট পর্যন্ত হয়। ফলটির ব্যবহারের দিক দিয়েও কম নয়। ফল মিষ্টি, কচকচে ও সুস্বাদু। পাকা পেয়ারার বাইরের রং হলুদ সবুজ ও ভেতর সাদা।

এটি একটি পুষ্টিকর ফল। এটি ভিটামিন সি, ক্যারোটিন, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম প্রভৃতি পাওয়া যায়। একশ’ গ্রাম পেয়ারায় দুইশ’ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি আছে অর্থাৎ পেয়ারায় কমলার চেয়ে চারগুণ বেশি ভিটামিন সি আছে। পেয়ারার খোসায় কমলার চেয়ে পাঁচগুণ বেশি ভিটামিন সি থাকে। এ ফলে লৌহ উপাদানও পর্যাপ্ত পরিমাণে বিদ্যমান। পুষ্টির দিক দিয়ে বিবেচনা করলে কমলার মানের চেয়েও পেয়ারার পুষ্টির মান বেশি। পেয়ারাতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও পলিফেনল আছে বলে ডায়রিয়া, ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, দৃষ্টিশক্তি প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। তদুপরি পেয়ারাতে ম্যাঙ্গানিজ, সেলিনিয়াম, ভিটামিন বি-১, বি-২, বি-৩ ইত্যাদি মূল্যবান খনিজ ও ভিটামিন থাকে। রোগ প্রতিরোধে পেয়ারার অনেক গুণ রয়েছে। পেয়ারা পাতার রস ক্যান্সার প্রতিরোধী এবং সংক্রমণ, প্রদাহ, ব্যথা জ্বর, বহুমূত্র, আমাশায় নানা রোগে ব্যবহৃত হয়। ফলকে জ্যাম, জেলি ও জুসেও রূপান্তর করা যায়। কাঁচা ফল ও পাতা থেকে ট্যানিন ও রং উৎপাদন করা যায়। কাঠ শক্ত হওয়ায় বাটালি ও অন্য ছোট যন্ত্রের হাতল হিসেবে ব্যবহার করা যায়। জ্বালানি হিসেবেও কাঠ কয়লা উৎপাদনের জন্য উৎকৃষ্ট গাছ। এ ফল বছরে দুই বার ফলে। আষাঢ় থেকে শ্রাবণ এবং মাঘ থেকে ফাল্গুন পর্যন্ত ফলে।

পেয়ারা গাছ দেশের যে কোনো জায়গায় আবাদ করা যায়। পুষ্টিকর ফল ও জ্বালানির সাশ্রয়কল্পের ব্যাপক আবাদ করা প্রয়োজন। বাংলাদেশে অন্য জাতের পেয়ারার মধ্যে সোনারগাঁ, স্বরূপকাঠি ও চট্টগ্রামের পেয়ারা উত্তম। পেয়ারা একটি সুস্বাদু ও পুষ্টিকর ফল। গাঁ-গ্রাম থেকে শুরু করে প্রায় সব অঞ্চলে পেয়ারা জন্মে। একদিকে বাণিজ্যিক চাহিদা, আরেকদিকে নিজেদের পুষ্টি চাহিদা, পাশাপাশি অতিরিক্ত আয়ও কম নয়। এ জন্য প্রতিটি বাড়ির আঙিনায় একটি দুটি পেয়ারার চারা লাগানো উচিত। ভালোবাসি গাছ। আর গাছ আমাদের প্রকৃত বন্ধু। গাছ লাগান, প্রাণ বাঁচান।

তথ্যসূত্র ঃ ইন্টারনেট 

আরো দেখুন

কোন তথ্য খুঁজে পাওয়া যাইনি