Loading..

উদ্ভাবনের গল্প

২২ জুলাই, ২০২০ ০৮:২২ পূর্বাহ্ণ

Appling "ICT in Education" with modified process for lerners

 আইসিটি ইন এডুকেশন

শিক্ষার্থীকে যুগোপযোগী করে গড়ার ক্ষেত্রে সবচাইতে আধুনিক কৌশল-

সমস্যাঃ শিক্ষকদের যথেষ্ঠ প্রশিক্ষণ, ডিজিটাল কনটেন্ট, আধুনিক ক্লাসরুম ( প্রতিটি উপজেলায় কমপক্ষে ৮/১০ স্কুলে রয়েছে ) থাকা সত্তেও সত্যিকার অর্থে শ্রেনিকক্ষে আশানুরূপ নুন্যতম সফলতা আসেনি সাম্ভাব্য কি কি কারন হতে পারে ?

সমস্যা নির্বাচনঃ সকল বিষয়ে একই ধরণের কনটেন্ট প্রদর্শন ও বেশিরভাগ শিক্ষকের উপস্থাপন পদ্ধতিও প্রায় কাছাকাছি হওয়ায় শিক্ষার্থীরা উৎসাহ এবং মনযোগ ধরে রাখতে পারে না

অথচ ICT FOR DIGITAL CONTENT DEVELOPMENT” এর আমি একজন মাস্টার ট্রেইনার……

সাম্ভাব্য সমাধানের জন্য পূর্বপ্রস্তুতিঃ আমি একজন গণিত শিক্ষক আমার স্কুল উপজেলা সদরে বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় হওয়ায় নবম শ্রেনীতে বিজ্ঞান বিভাগে শিক্ষার্থী অনেক কম (২০/২২ জন) থাকায় আমি শ্রেণি কক্ষে পাঠদানে একটু ভিন্ন ভাবে আইসিটি ব্যবহার করার পরিকল্পনা করি বর্তমান সময়ে প্রায় সকল শিক্ষার্থী বাসায় স্মার্ট ফোন (বাবা-মা এর) ব্যবহার করে বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়া এবং ইউটিউব ব্যবহারে এক্সপার্ট জেএসসি ২০১৮ পরীক্ষার পর পরই শিক্ষার্থীদের ০১ মাস মেয়াদে আইসিটি বেসিক কোর্স (ফি- ১০০০) শেখানো হবে জানিয়ে দেই (তবে সবার জন্য বাধ্যতামূলক নয়) আমি ও আমার একজন সহকর্মী মোঃ সাইফুল ইসলাম মিলে ১৫ জন শিক্ষার্থী নিয়ে এক ব্যাচে শুধু কম্পিউটার অন-অফ, ফাইল খোলা-সংরক্ষণ, -মেইল আইডি, আর সবচেয়ে বেশী গুরুত্ব দেই গুগল এবং ইউটিউব থেকে যে কোন বিষয়ের পাঠ ভিত্তিক সম্পর্কিত তথ্য, ছবি সংগ্রহ এবং ভিডিও ফাইল কিভাবে খুঁজে বের করতে হয়, সংরক্ষণ এবং লিংক শেয়ারিং করতে হয় এইটা শেখাই আমার স্কুলে শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব থাকায় প্রশিক্ষণটি অনায়সেই দিতে পেরেছি ঐ ১৫ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ১৪ জন সহ আরও ০৮ জন মোট ২২ জন ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হয়

মূল পরিকল্পনা প্রয়োগঃ শুরু থেকেই বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের  শ্রেণি কক্ষ পাঠদানে এবং অতিরিক্ত ক্লাসে (বিদ্যালয়ের সময় ছাড়া) পাঠ বিষয়ক বিষয়বস্তু সম্পর্কে আমি কোন পূর্ব ধারণা না দিয়ে ঐ শিক্ষার্থীদের গুগল ও ইউটিউব থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য যোগাড় করতে বলি  যে যা ধারণা পেত পরের দিন শ্রেণিকক্ষে তা সবাই মিলে শেয়ার করি তারপরে আমি শুধু বাড়তি যেটুকু দরকার সেটা  আলোচনা করে বাড়ীর কাজ দিয়ে দিতাম বিশেষ ক্ষেত্র ছাড়া ডিজিটাল কনটেন্ট প্রদর্শনের প্রয়োজন হত না   

পর্যবেক্ষণঃ ভীষণ উৎসাহ নিয়ে ওরা ক্লাস করে এভাবে শিক্ষার্থীদের সক্রিয়ভাবে শিক্ষণ-শিখন কার্যক্রমে আইসিটি ব্যবহারে অভ্যস্থ করায় তাঁরা পাঠের বিষয়বস্তু দীর্ঘদিন রিভিশন না দিয়েও ৯০% সঠিক তথ্য মনে রাখতে পারে শুধু পাঠ্য বই নয় অন্য যে কোন নতুন বিষয়ের সম্মুখীন হলে বা অন্যের কাছে পাওয়া কোন তথ্য নিজে নিজেই অনলাইনে যাচাই করার অভ্যাস গড়ে ওঠে নিজেদের অর্জিত জ্ঞানের উপর আত্মবিশ্বাসী থাকে আইসিটির নেতিবাচক ব্যবহার থেকে সচেতন থাকে আর শিক্ষকদেরও একই বিষয়ে বার বার ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরী করতে হয় না যেহেতু শিক্ষাক্রম ও পাঠ্য বই প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল তাই বর্তমানে একজন শিক্ষকের কয়েক সপ্তাহ বা মাসের পরিশ্রমে তৈরী আজকের মডেল কনটেন্ট আগামী দিন প্রযোজ্য নাও হতে পারে

সার্বিক ফলাফলঃ এ বছর এসএসসি ২০২০ পরীক্ষায় ঐ ব্যাচে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ১৩ জন A+ গ্রেড পেয়েছে তাই আমার মনে হয় আইসিটি কে সকল শিক্ষার্থী কেন্দ্রিক ছড়িয়ে দিতে পারলে একাডেমিক রেজাল্ট তুলনামূলক অবশ্যই ভাল হয় একজন দক্ষ আধুনিক ও আত্মবিশ্বাসী শিক্ষার্থী হিসেবে গড়ে উঠে ডিজিটাল বাংলাদেশের হাল ধরতে পারবে

এ বছরের পরিকল্পনাঃ ৮ম, ৯ম ও ১০ম শ্রেণিতে সকল শিক্ষার্থীদের উপরোল্লিখিত পদ্ধতিতে আইসিটি বান্ধব শিক্ষার্থী হিসেবে গড়ে তুলব


ব্যার্থতাঃ করোনা ভাইরাস প্রকোপে সারা দেশ তথা সমগ্র বিশ্ব থেমে যাওয়াও এ বছর আমার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কোন পদক্ষেপ এখনো নিতে পারিনি গত দুই বছর ধরেশিক্ষক বাতায়নপোর্টালে আমি অনিয়মিত হয়ে পড়ি