Loading..

খবর-দার

০৬ আগস্ট, ২০২০ ০৫:২৪ অপরাহ্ণ

বিশ্ব হিরোশিমা দিবস (৬ আগস্ট) উপলক্ষ্যে গৃহীত কার্যক্রম।

মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর কর্তৃক আয়োজিত  অগস্ট বিশ্ব হিরোশিমা দিবস উপলক্ষে, বালিয়াডাঙ্গা দারুস ‍সুন্নাত ফাজিল মাদরাসা, সদর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ এর আয়োজনে সারস পাখি তৈরীর উদ্যেগ গ্রহন করা হয়। নেটওর্য়াক শিক্ষক হিসেবে আমাকে সর্বিক কার্যক্রম তদারকি করতে হয়। ছাত্র ছাত্রীরা তাদের ঘরে বসে সারস পাখি তৈরী করে। হিরোশিমার বোমার আঘাতে সাদাকো সাসাকি নামে এক শিশুর নির্মম মৃত্যুর ঘটনা বিশ্ব বিবেককে আলোড়িত করে। নিম্নলিখিত গল্পটি ছাত্র ছাত্রীরা শুনে আবেগ আপ্লূত হয়ে  পড়ে।

একটি উদ্দীপক কাহিনী সাদাকো সাসাকি
১৯৪৫ সালের ৬ আগস্ট সকাল  টা নের মিনিটে জাপানের হিরোশিমা নগরকেন্দ্রের উপর নিক্ষিপ্ত পারমাণবিক বোমার বিস্ফোরন ঘটে। নিমিষে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয় গোটা নগরীআগুনের প্রচন্ড তাপে ছাই হয়ে যা চারপাশমৃত্যুবরণ করে অগণিত নারী-পুরুষ-শিশু। পারমাণবিক তেজস্ক্রিয়ার প্রভাব মানুষের শরীরে সুদূরপ্রসারী ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। অনেকর মৃত্যু হয় ধুঁকে ধুঁকেআরো অনেকের শরীরে বিকিরণের প্রভাব ধরা পড়ে বেশ কয়েক ছর পরে।
হিরোশিমায় আণবিক বোমা বিস্ফোরনে সাদাকো সাসাকির বয়স ছিল মাত্র দুই বছর। বিস্ফোরনের কেন্দ্র থেকে দুই কিলোমিটার দুরে ছিল তাদে বাড়ি। বোমার আঘাতে পাড়া-প্রতিবেশি অনেকের মৃত্যু হলেও সাদাকো কিছুই হয়নি। এরপর সে স্বাভাবিকভাবে বড় হয়ে উঠছিল। আর দশজন বালিকার মতো সেও ছিল উচ্ছল  প্রাণবন্ত। ১৯৫৫ সালে সাদাকো যখন সপ্ত শ্রেণীর ছাত্রীতখনই একদিন প্রথম শঙ্কার পরিচয় মিললো।
স্কুলের দৌড়াও প্রতিযোগিতায় সাদাকোর ছিল বিশেষ আগ্রহকিন্তু সেদিন রিলে দৌড় শেষে সাদাকো হঠা করে খুব দুর্বলতা অনুভব করতে থাকেমাথা ঝিমঝিম করতে শুরু করে এর 'দিন পর আবার সেই একই লক্ষ্মন তার মধ্যে দেখা দেয়। ডাক্তাররা নানা পরীক্ষাশেষে সনাক্ করে তার রক্তে ক্যান্সার দেখা দিয়েছে। লিউকোমিয়া নামক এই রোগ হিরোশিমাবাসী অনেকের মধ্যে দেখা যাচ্ছিল। একে বলা হতো ''আনবি বোমা জনিত পীড়া'' যারা এই রোগে আক্রান্ত হতো তাদের কেউই বাঁচতো না। সাদাকো খুব বিমর্ষ হয়ে পড়ে। হাসপাতালে শুয়ে শুয়ে দিন কাটে তার।
একদিন বন্ধু চিজুকো হাসপাতালে তাকে দেখতে আসে। সে নিয়ে এসেছিল কাগজ ভাঁজ করে তৈরি একটি সারস। সাদাকোকে সে শোনায় পুরোনো দিনের জাপানী এক কাহিনী।
লোকগল্পে রয়েছেকেউ যদি শ্রষ্টাকে উদ্দেশ্য করে এক হাজার সারস পাখি বানাতে পারে তবে শ্রষ্টা তার মনের ইচ্ছা পুরন করে। সাদাকো এই গল্প শুনে মনে আবার জোর খুঁজে পায়। সে ভালহয়ে ওঠার ন্য এক হাজার সারস বানিয়ে শ্রষ্টার কাছে নিবেদন করবে।
সাদাকো হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে কাগজ ভাঁজ করে বানিয়ে চলে সারস। পাঁচশ সারস বানানো যখন শেষ হলো তখন সাদাকো অনেক হাসিখুশি য়ে উঠেছেশরীরও কিছুটা ভালো হয়েছে। ডাক্তাররা জানালো কিছুদিন সে বাড়িতে ঘুরে আসতে পারে। কিন্তু বাড়িতে তার বিশেষ থাকা হলো না। শরীর খারাপ হওয়াতে আবারো সে ফিরে আসে হাসপাতালে। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে কচি কচি দুর্বল হাতে সাদাকো বানিয়ে চলে সারস। মাভাবোনক্লাসের বন্ধু-বান্ধব বাই ঘিরে থাকে তাকে। ৬৪৪টি সারস বানানো শেষে সাদাকো যেদিন ঘুমিয়ে পড়লোতার সেই ঘুম আর ভাঙলো- না।
কিশোরী সাদাকোর এমনি মৃত্যু তার স্কুলের বন্ধুবান্ধবদের দারুণভাবে আলোড়িত করে। তার সাদাকোর হয়ে বানিয়ে হাজারটা সারস এবং সাদাকোর স্মরণে একটি মূর্তি প্রতিষ্ঠার জন্য জাপানের সব স্কুল ছাত্র ছাত্রীদের উদ্দেশে আবেদন জানায়। সারা দেশের ছাত্র ছাত্রীরা টাকা তুলে হিরোশিমার শান্তি উদ্যানে সাদাকো এবং পারমাণবিক বোমার শিকার সব শিশুদের স্মরণে প্রতিষ্ঠা করে এক ভাস্কর্য। গ্রানাইট পাথরের বেদির ওপর দাঁড়িয়ে রয়েছে সাদাকোর মূর্তিতার প্রসারি হাতে ধরা সোনালী সারস।
নিচে খোদিত রয়েছে বাণীএই আমাদের উচ্চারণএই আমাদের প্রার্থনাবিশ্বজুড়ে নেমে আসুক শান্তি।

এ,টি,এম ফরহাদ রেজা
নেটওয়ার্ক  শিক্ষক
বালিয়াডাঙ্গা দারুস সুন্নাত ফাজিল মাদরাসা 
সদর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ
ইমেইল 
[email protected]

ict4e district ambassador, a2i.