Loading..

প্রকাশনা

১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ১১:৩৪ পূর্বাহ্ণ

অনলাইন ক্লাস একটি পর্যালোচনা


১৭ মার্চ ২০২০ খ্রীঃ সিলেট টিচার্স ট্রেনিং কলেজে প্রহর গুনতে থাকি আর মাত্র দুই দিন বাকী আছে বিটিটি প্রশিক্ষণ শিক্ষকদের আরো আইসিটি মনা গড়ে তুলার জন্য অন্যতম একটি প্রশিক্ষণ সবার একটিই পরিকল্পনা আর একদিন পর কাংখিত সমাপনী দিবস যেই দিনে প্রথম,দ্বিতীয়,তৃতীয় স্থান অধিকারী কে পুরস্কৃত করা হবে আর বারো দিনের ট্রেনিং শেষে অর্জিত আইসিটি জ্ঞান বিতরণ করব নিজ নিজ প্রিয় প্রতিষ্ঠানে কিন্তু হঠাৎ শুনি মহামারি করোনা ভাইরাসের আগমনে আমাদের সব কিছু স্থবির হয়ে পড়েছে। হায়রে হায়! সকল প্রশিক্ষনার্থী আফসুস করতে লাগলো। ১২ দিনের ট্রেনিং কিভাবে কাজে লাগাবো। প্রিয় প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় দুই সপ্তাহ দূরে থাকা কী যে বিষাদ বয়ে তুলেছে সবার হৃদয় রাজ্যে। এখন আবার অনিদির্ষ্ট কালের জন্য ছুটি ঘোষনা। সে যাই হউক ১৯ মার্চ ২০২০ ইং নিদির্ষ্ট সময়ে সমাপনী অনুষ্ঠান শুরু হয়। একটু আগে স্যার জানিয়ে গেলেন জাকজমক ভাবে অনুষ্ঠান হবে না। মনটা কেমন জানি দূর দূর করতে লাগলো। আয় আল্লাহ ভাইরাস এত ছড়িয়ে পড়েছে!

যার কারণে পুরষ্কার আনতে গিয়ে প্রধান অতিথি এমসি কলেজের সম্মানিত অধ্যক্ষ জানিয়ে দিলেন এখন আমরা মুসাফাহা করব না ।

যাক কোন মতে অনুষ্ঠান শেষ করে বাসায় আসলাম । কিন্তু ভালো তো লাগে না। প্রিয় প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় কোমল মতি শিক্ষার্থীদের কোলাহল আর যে শুনতে পাই না।

ফেইসবুকে একদিন দেখতে পায় বাংলাদেশ সরকার সংসদ টিভিতে অনলাইন ক্লাসের সম্প্রচার করবে। আর সেখানে শুধু স্কুলের ক্লাস সম্প্রচার হবে। তাহলে মাদ্রাসার ক্লাস কে সম্প্রচার করবে? কিশোরগঞ্জ জেলা এম্বাসেডর মাওঃ নাজমুল হক আমাদের বিভিন্ন জেলার শিক্ষকদের পরামর্শ ও সহযোগিতা নিয়ে বাংলাদেশ অনলাইন মাদ্‌রাসা পেইজে মাদ্রাসার ক্লাস সম্প্রচারের সিদ্ধান্ত নেয়। যাক যাপিয়ে পড়লাম অনলাইন ক্লাসে। যদিও বেশ কিছুদিন পর আবার সংসদ টিভিতে মাদ্‌রাসার ক্লাস সম্প্রচার শুর করে। তারপর দেখা যায় একেক করে বিভিন্ন জেলা উপজেলা, প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন নামে অনলাইন ক্লাস শুরু করে। আর এটুআই শিক্ষক বাতায়নে অনলাইন ক্লাসের স্বীকৃতি দিয়ে শিক্ষকদের মনোবল আরো বাড়িয়ে দেয়। মার্চ থেকে চলতে থাকে অনলাইন ক্লাস।

হঠাৎ করে ফেইসবুকে দেখি কিছু মানুষ অনলাইন ক্লাসের বেপকভাবে সমালোচনার ঝড় তুলে। কিন্তু একদল জ্ঞান বিতরণ কারী শিক্ষক “পাছে লোকে কিছু বলে” এই কথার তুয়াক্কা না করে ক্লাস চালিয়ে যেতে থাকে।

   আসলে অনলাইন ক্লাস করে আমরা কী পেলাম আর শিক্ষার্থীরা কী পেলো। এই বিষয় নিয়ে কিছু লেখার কথা ভেবে কলম নয় কম্পিউটারের সামনে বসলাম। যারা বলতো অনলাইন ক্লাস দিয়ে শিক্ষার্থীদের কিছুই হবে না। তাদের কথাকে একেবারে অবমূল্যায়ন না করলেও একথা বলতে পারি শতভাগ সফলতা নিয়ে আসতে পারেনি। তবে সমালোচকদের জেনে নেয়া উচিত অনলাইন ক্লাস শতভাগ সফলতা না আনতে পারলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সফলতা নিয়ে এসেছে। তার কারণ অনলাইন ক্লাসের মাধ্যমে এমন কিছু শিক্ষার্থী পাওয়া গেছে যারা অনলাইন ক্লাস না হলে তারা একেবারেই পড়ার টেবিলে বসতো না। যারা পরীক্ষা সম্পর্কে একেবারে গাফেল বা অমনোযোগি থাকতো তাদের হৃদয় সাগরে ধাক্কা দিতে পেরেছে অনলাইন ক্লাস। যেমন অনেক প্রতিষ্ঠান অনলাইন এ পরীক্ষা পর্যন্ত গ্রহণ করছে। তার মাঝে হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলাধীন তাহিরপুর নয়মৌজা ইত্তেফাকিয়া আলিম মাদ্‌রাসায় অনলাইন ক্লাস এবং অনলাইন পরীক্ষা শিক্ষার্থীদের মাঝে বেপক সারা জাগিয়ে পড়া লেখার এক বিপ্লব সাধনে ভূমিকা পালন করছে।

     তাই বলা যায় সমালোচনা নয় বাংলাদেশ কে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে বর্তমান পরিস্থিতে অনলাইন ক্লাসের বিকল্প নেই।     

আরো দেখুন

কোন তথ্য খুঁজে পাওয়া যাইনি