সহকারী প্রধান শিক্ষক
২৫ অক্টোবর, ২০২০ ০৩:১৯ অপরাহ্ণ
মাধ্যমিক ও নিম্নমাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৮৫ দিন ছুটি প্রসঙ্গে
মাধ্যমিক ও নিম্নমাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৮৫ দিন ছুটি প্রসঙ্গে
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সরকারি/বেসরকারি মাধ্যমিক ও নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ২০১৯ খ্রিস্টাব্দের ছুটির তালিকা প্রকাশ করেছে। এতে দেখা যায় যে, বিগত বছরগুলোর মতো এবারও ৮৫ দিন ছুটি রাখা হয়েছে। এতে অনেকেই মনে করেন শিক্ষকরা শুধুই ছুটি ভোগ করেন, এদের প্রায় সারা বছরই বিদ্যালয় বন্ধ থাকে। আসলেই কি তাই? তাহলে এই বিষয় নিয়ে একটু আলোকপাত করা যাক।
ছুটির তালিকায় দেখা যায়, ২১ ফেব্রুয়ারি, ১৭ মার্চ, ২৬ মার্চ, ১৪ এপ্রিল, ১৫ আগষ্ট, ১০ নভেম্বর ও ১৬ ডিসেম্বর বিদ্যালয় ছুটির তালিকায় থাকলেও উক্ত দিবসসমূহে বিদ্যালয়গুলো বিশেষভাবে দিবসটি পালন করার জন্য ছুটি ভোগ করতে পারে না (যা অন্যান্য সরকারি চাকরিজীবীরা ভোগ করেন, তবে দিবস সমূহ পালন করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে এ কথা সত্যি)।
তাছাড়া ১৫ ডিসেম্বর থেকে ২৫ ডিসেম্বর ১২ দিন ছুটি শিক্ষকরা ছুটিতে যেতে পারেন না। কারণ তখন বিভিন্ন শ্রেণির ভর্তি, বার্ষিক পরীক্ষার ফলাফল তৈরি, নতুন শ্রেণিতে ভর্তি, নতুন বই গ্রহণ ও বিতরণের প্রস্তুতি, এসএসসি পরীক্ষার্থীদের প্রস্তুত করাসহ যাবতীয় গুরুত্বপূর্ণ কাজ থাকার কারণে ছুটি ভোগ করা যায় না।
প্রধান শিক্ষকের জন্য সংরক্ষিত ৩ দিনের ছুটিও অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান প্রধান মঞ্জুর করেন না। তাহলে দেখা যায় যে, ৮৫-(৭+১২+৩)=৬৫ দিন ছুটি অবশিষ্ট রইল।
এবার তুলনা করা যাক একজন সরকারি চাকরিজীবী ও একজন শিক্ষকের মধ্যে ছুটির ব্যবধান কতটুকু?একজন সরকারি চাকরিজীবী বছরে ৫২×২=১০৪ দিন সাপ্তাহিক ছুটি ভোগ করেন এবং নির্ধারিত জাতীয় ছুটি ২২ দিন। মোট ১০৪+২২=১২৬ দিন। একজন শিক্ষক বছরে সাপ্তাহিক ছুটি ৫২ দিন এবং নির্ধারিত ৬৫ দিন। মোট ৫২+৬৫=১১৭ দিন। তাহলে বিবেচনা করুন কে বেশি অবকাশকালীন সময় ব্যয় করেন? বিষয়টি এই জন্যই বলা যে, বেশিরভাগ মান্যগণ্যরা মনে করেন শিক্ষতায় ছুটি আর ছুটি কিন্তু হিসাব করে দেখেন না।
বিষয়টি কাউকে ছোট বা বড় করার জন্য উপস্থাপন করা হয়নি। বিদ্যালয়গুলোর ছুটির তালিকা প্রকাশের পর কিছু পত্রিকা ও ব্যক্তি এটিকে এমনভাবে প্রচার করছেন মনে হয় আগামী বছর বিদ্যালয় আর খোলা থাকবে না শুধু বন্ধ থাকবে (অথচ ছুটি বিগত বছরগুলোর মতোই দেয়া হয়েছে)। তাই একটু বলা, তবে এতে কোনো তথ্য বা উপাত্তে ভুল থাকলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
লেখক : শিক্ষক
মৃণাল কান্তি সাহা
সহকারি প্রধান শিক্ষক
বাংগাখাঁ উচ্চ বিদ্যালয়
লক্ষ্মীপুর।