Loading..

প্রেজেন্টেশন

২৯ নভেম্বর, ২০২০ ১০:৫৬ অপরাহ্ণ

বিভীষণের প্রতি মেঘনাদ(কবিতা)

সর্বমোট নয়টি সর্গে বিন্যস্ত মহাকাব্যের ষষ্ঠ সর্গে রামের ভাই ল²ণের হাতে অন্যায় যুদ্ধে মৃত্যু ঘটে অসম সাহসী বীর মেঘনাদের। রামচন্দ্র কর্তৃক দ্বীপরাজ্য স্বর্ণলঙ্কা আক্রান্ত হলে রাজা রাবণ শত্রæর উপর্যুপরি দৈব-কৌশলের কাছে অসহায় হয়ে পড়েন। ভাই কুম্ভকর্ণ ও পুত্র বীরবাহুর মৃত্যুর পর মেঘনাদকে পিতা রাবণ পরবর্তী দিনে অনুষ্ঠেয় মহাযুদ্ধের সেনাপতি হিসেবে বরণ করে নেন। যুদ্ধজয় নিশ্চিত করার জন্য মেঘনাদ যুদ্ধযাত্রার পূর্বেই নিকুম্ভিলা যজ্ঞাগারে অগ্নিদেবের পূজা সম্পন্ন করতে মনস্থির করে। 


মায়া দেবীর আনুকুল্যে এবং বিভীষণের সহায়তায়, ল²ণ শত শত প্রহরীর চোখ ফাঁকি দিয়ে নিকুম্ভিলা যজ্ঞাগারে প্রবেশ করতে সমর্থ হয়। কপট ল²ণ নিরস্ত্র মেঘনাদের কাছে যুদ্ধ প্রার্থনা করলে মেঘনাদ বিস্ময় প্রকাশ করে। যজ্ঞাগারে ল²ণ যে মায়াবলে ঢুকতে সমর্থ হয়েছে তা বুঝতে মেঘনাদের দেরী হয় না। ইতোমধ্যে ল²ণ তলোয়ার কোষমুক্ত করলে মেঘনাদ যুদ্ধসাজ গ্রহণের জন্য ল²ণের কাছে সময় প্রার্থনা করে। কিন্তু ল²ণ তাকে সময় না দিয়ে আক্রমণ করে। এ সময় অকস্মাৎ যজ্ঞাগারের প্রবেশদ্বারের দিকে চোখ পড়ে মেঘনাদের; সে দেখতে পায় পিতৃব্য বিভীষণকে। বিভীষণের বেঈমানীর বিষয়টি মেঘনাদের স্পষ্ট হয়ে যায়।


উনিশ শতকের বাংলার নব জাগরণের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সন্তান মাইকেল মধুসূদন দত্ত বাল্মিকী-রামায়ণকে নবমূল্য দান করেছেন এ কাব্যে। মানবকেন্দ্রীকতাই রেনেসাঁস বা নবজাগরণের সারকথা। ঐ নবজাগরণের প্রেরণাতেই রামায়ণের রাম-ল²ণ মধুসূদনের লেখনীতে হীনরূপে এবং রাক্ষসরাজ রাবণ ও তার পুত্র মেঘনাদ যাবতীয় মানবীয় গুণের ধারকরূপে উপস্থাপিত। দেবতাদের আনুকুল্যপ্রাপ্ত রাম-ল²ণ নয়, পুরাণের রাক্ষসরাজ রাবণ ও তার পুত্র মেঘনাদের প্রতিই মধুসূদনের মমতা ও শ্রদ্ধা।