Loading..

ভিডিও ক্লাস

১৪ ডিসেম্বর, ২০২০ ০৮:৩১ পূর্বাহ্ণ

মুসাফাহা এবং মুয়ানাকাহ এর পরিচয় || হাদিস শরীফ || নবম শ্রেণী || Md Forid Uddin || BY NIDM
পরস্পরে সালাম বিনিময়, মুসাফাহা ও মুয়ানাকা করা সম্প্রীতি ও ভালোবাসা প্রকাশের মাধ্যম এবং গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত। এসব সৌজন্য বিনিময়ের মাধ্যমে যেমন সামাজিক বন্ধন মজবুত হয়, তেমনি পরকালীন সম্পদও সমৃদ্ধ হয়। তাই এসব বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া এবং বেশি বেশি চর্চা করা। সালাম : হাদিসে সালামকে ইসলামের সর্বোত্তম কাজ বলা হয়েছে। হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আস (রা.) থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি রাসুলকে (সা.) জিজ্ঞাসা করল ইসলামে সর্বোত্তম কাজ কী? নবীজি (সা.) বললেন, ক্ষুধার্তকে খাবার দান করবে এবং পরিচিত-অপরিচিত সবাইকে সালাম করবে।’ (বুখারি : ৬২৩৬; মুসলিম : ৩৯)। সালাম প্রদানকে ভালোবাসা বৃদ্ধির মাধ্যম বলা হয়েছে। হজরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা ঈমানদার না হওয়া পর্যন্ত জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। আর যতক্ষণ না তোমাদের পারস্পরিক ভালোবাসা গড়ে উঠবে, ততক্ষণ পর্যন্ত তোমরা প্রকৃত ঈমানদার হতে পারবে না। আমি কি তোমাদের এমন একটি কাজ বলে দেব না, যা করলে তোমরা একে অন্যকে ভালোবাসবে? (তা হচ্ছে) তোমরা পরস্পরের মধ্যে সালাম প্রচার কর।’ (মুসলিম : ৫৪; তিরমিজি : ২৬৮৮; আবু দাউদ : ৫১৯৩) সবসময় আগে সালাম দেওয়ার চেষ্টা করা। এতে অন্তর থেকে অহঙ্কার দূর হয় ও ফেরেশতাদের দোয়া লাভ হয়। নবীজি (সা.) সবসময় আগে সালাম করতেন। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘প্রথমে সালাম প্রদানকারী অহঙ্কার থেকে মুক্ত।’ (মেশকাত : ৪৬৬৬) মুসাফাহা : কারও সঙ্গে সাক্ষাতের পর প্রথমে সালাম দেওয়া। তারপর সুযোগ হলে দু’হাত মিলিয়ে মুসাফাহার মাধ্যমে সালামকে পরিপূর্ণ করা। হজরত আব্দুুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘সালামের পরিপূর্ণতা হলো মুসাফাহা।’ (তিরমিজি : ২৭৩০)। পরস্পরে মোসাফাহার ফজিলত সম্পর্কে হজরত বারা ইবনে আজেব (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, রাসুল (সা.) বলেন, ‘দুজন মুসলমান পরস্পর সাক্ষাতের পর মুসাফাহা করলে তাদের পৃথক হওয়ার আগেই তাদের পাপ ক্ষমা করে দেওয়া হয়।’ (আবু দাউদ : ৫২১৪)। মুসাফাহার আদব সম্পর্কে হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন, ‘রাসুল (সা.)-এর অভ্যাস ছিল, কোনো ব্যক্তি এগিয়ে এলে তিনি মুসাফাহা করতেন। সে ব্যক্তি হাত না সরানো পর্যন্ত তিনি নিজের হাত সরাতেন না এবং চেহারা না ফেরানো পর্যন্ত তিনি মুখ ফেরাতেন না। সঙ্গে উপবিষ্ট লোকদের সামনে দুই হাঁটু ছড়িয়ে বসতেন না।’ (তিরমিজি : ২৭২৭) মুয়ানাকা : দীর্ঘদিন পর একে অন্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ হলে পরস্পরে মুয়ানাকা বা কোলাকুলি করা সুন্নাত। কেউ সফর থেকে এলে দীর্ঘদিন পর দেখা-সাক্ষাৎ হওয়ায় সাহাবায়ে-কেরাম মুয়ানাকা বা কোলাকুলি করতেন। হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত যায়েদ ইবনে হারিসা (রা.) যখন মদিনায় এলেন তখন নবী (সা.) আমার ঘরে ছিলেন। যায়েদ (রা.) তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে আমার ঘরে এলেন এবং দরজায় টোকা দিলেন। রাসুল (সা.) নিজের কাপড় সামলাতে সামলাতে উঠে গেলেন এবং যায়েদের সঙ্গে কোলাকুলি করলেন এবং আদর করলেন।’ (তিরমিজি : ২৭৩২)। হজরত শাবিহ (রহ.) বলেন, সাহাবায়ে-কেরাম পরস্পরে সাক্ষাতে মুসাফাহা করতেন আর দূরের সফর থেকে ফিরে এলে কোলাকুলি করতেন।’ (মুসন্নাফ ইবনে আবি শায়বা : ২৬২৩৪)