প্রধান শিক্ষক
১৭ ডিসেম্বর, ২০২০ ০৯:০১ অপরাহ্ণ
বিস্ময়কর কম্পিউটার,যতীন্দ্র মোহন দাশ, প্রধান শিক্ষক্, শান্তিপুর সপ্রাবি, সদর,সুনামগঞ্জ।
বিস্ময়কর কম্পিউটার
যতীন্দ্র মোহন দাশ
প্রধান শিক্ষক
শান্তিপুর সরকারি প্রাথমিক
বিদ্যালয়
সুনামগঞ্জ সদর,সুনামগঞ্জ।
আমরা
বিভিন্ন কম্পিউটার সম্পর্কে জানি কিন্তু ঈশ্বর প্রদত্ত মহাশক্তিশালী বিস্ময়কর কম্পিউটার
সম্পর্কে হয়তো আমরা অনেকেই অজ্ঞাত। একটি সাধারণ
কম্পিউটারকে যদি আমাদের শরীরের সাথে সম্পাদন করা হয় তাহলে আমাদের জন্য সেটা বহন করা
খুবই কষ্টকর হবে। অথচ মহাবিজ্ঞানী ঈশ্বর আমাদের শরীরে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী সুপার
কম্পিউটার এমন ভাবে স্থাপন করে দিয়েছেন যা আমরা দিনের পর দিন এবং রাতের পর রাত বহন
করেও কষ্ট পাচ্ছিনা। বিস্ময়কর এ কম্পিউটার হলো তিন পাউন্ড ওজনের মানব মস্তিস্ক। নিউরো
সাইন্টিস্টরা বলেন, মানব মস্তিস্ক সর্বাধুনিক কম্পিউটারের চেয়ে দশ লক্ষগুণ বেশি ক্ষমতা সম্পন্ন।
মানুষের দেহের ওজনের চল্লিশ ভাগের এক ভাগ হলো তার মস্তিস্কের ওজন। ডাক্তার ওয়াল্টারের
মতে, মানুষের মস্তিস্কের মতো একটি বৈদ্যুতিক বা এটমিক মস্তিস্ক তৈরি করতে হলে পনেরশত
কোটি টাকার ও বেশি প্রয়োজন হবে। সংখ্যাটি অংকে
লিখলে দাঁড়ায় ১৫০০,০০০০০০০,০০০০০০০ টাকা। এই টাকা দিয়ে বর্তমান সময়ে দশ হাজার কোটি কম্পিউটার তৈরি সম্ভব। আর এই
কৃত্রিম মস্তিস্ককে চালাতে এক হাজার কোটি কিলোওয়াট বিদ্যুতের প্রয়োজন। কৃত্রিম মস্তিস্ককে দৈনিক চালু রাখার জন্য প্রয়োজন
পড়বে কর্ণফুলীর কাপ্তাইয়ের বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সমান উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন তিন হাজার
আড়াইশত বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সামগ্রীক উৎপাদন। এই যান্ত্রিক মস্তিস্কের আয়তন হবে আঠারোটি একশ তলাভবনের
সমান।
আমাদের
মস্তিস্কের আরো একটি বিস্ময়কর অংশ হলো কোর্টেক্স। এই কোর্টেক্সকে সমান্তরাল ভাবে সাজালে
এর আয়তন হবে দুই হাজার বর্গকিলোমিটারের ও বেশি অর্থাৎ ব্রুনাই দেশের সমান। কোর্টেক্স
চৌদ্দশত কোটি নিরপেক্ষ জীবকোষদিয়ে গঠিত। এ সকল জীব কোষ গুলোকে নিউরন বলে। নিউরন গুলো মেরুদন্ডের
মাধ্যমে সারা শরীরের যন্ত্রপাতি গুলোকে সজীব
ও তৎপর রাখে। এ গুলোর আবার স্বতন্ত্র বিভাগ
আছে যার সংখ্যা ২৫০ টি। যেমন কোন অংশ শোনার জন্য,
কোন অংশ বলার জন্য, কোন অংশ দেখার জন্য,
আবার কোন অংশ অনুভুতি গুলোকে কেন্দ্রীয় কন্ট্রোল টাওয়ারে ট্রান্সমিট করার জন্য ব্যস্ত
থাকে। এতে আবার বসানো হয়েছে একটি স্বয়ংক্রিয় শক্তিশালী মেমোরি সেল। এই মেমোরি সেলের
কাজ হলো নিত্য নতুন সংগ্রহ গুলোকে যথাযথ ভাবে সংরক্ষণ করা এবং প্রয়োজনের সময় রিওয়ান্ড
করে মেমোরি গুলোকে সামনে নিয়ে আসা। এই স্মৃতি সংরক্ষণশালা প্রতি সেকেন্ডে দশটি নতুন বস্তুকে স্থান দিতে পারে। মজার ব্যাপার
হচ্ছে পৃথিবীর সর্বকালের সর্বপ্রকারের যাবতীয় তথ্য এবং তথ্যকে এক জায়গায় একত্র করে
যদি এই মেমোরি সেলে রাখা যায় তাতে এর লক্ষ
ভাগের এক ভাগ জায়গাও পূরণ হবেনা। কিন্তু দুঃখের বিষয় আমরা আমাদের মস্তিস্কের হাজার
ভাগের এক ভাগ ও কাজে লাগাইনা বা লাগাতে পারিনা। মস্তিস্ক নিয়ে বিজ্ঞান তার গবেষণা চালিয়ে
যাচ্ছে হয়তো একদিন মানুষ ঈশ্বর প্রদত্ত এই
মহাশক্তিশালি কম্পিউটারকে কাজে লাগাতে পারবে।
তথ্যসূত্র: মোরা বড় হতে চাই-
আহসান হাবীব ইমরোজ।