আজকের এই ক্লাসে আমরা নিম্নোক্ত বিষয়গুলো জানার চেষ্টা করব:
জরিপ পদ্ধতি:
সমাজ গবেষণায় সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং সহজ তথ্যানুসন্ধান পদ্ধতি এটি। একটি বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি হিসেবে সর্বপ্রথম জরিপ পদ্ধতি ব্যবহার করেন জন হাওয়ার্ড। এর প্রদান বৈশিষ্ঠ্য হল প্রশ্নমালা, ব্যক্তিগত সাক্ষাৎকার ইত্যাদির মাধ্যমে কোন নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠী বা এর অংশবিশেষের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা।
জরিপ পদ্ধতি দুই প্রকার:
পূর্ণ গণনা জরিপ
(সবাইকে গণনা করা যেমন আদম শুমারী)
নমুনা জরিপ
(নমুনা নেওয়া যেমন ভাত রান্না পরীক্ষা)
সুবিধা:
কম খরচ-নামুনা জরিপে, সমগ্রক সম্পর্কে সাধারণিকরণ অধিক গ্রহণযোগ্যতা পায়;
তথ্যের গভীরে অনুসন্ধান করা যায়;
এ পদ্ধতিতে অধিক মাত্রায় বস্তুনিষ্ঠতা অর্জন করা যায়;
অধিক তথ্য সংগ্রহ করা যায়;
কারণ-ফলের সম্পর্ক নির্ণয় করা যায়;
অধিক নির্ভরযোগ্য ও সঠিক তথ্যপ্রাপ্তির সম্ভাবনা থকে।
অসুবিধা:
বেশি খরচ/ব্যয়বহুল-পূর্ণ গণনা জরিপে;
উত্তরাদাতার আবেগ অনুভূতি যথাযথ প্রতিফলন ঘটে না;
সময় সাপেক্ষ ব্যাপার;
ঐতিহাসিক ঘটনা অদ্যয়নে এ পদ্ধতি ততটা কার্যকর নয়;
অনেকেই এ পদ্ধতির (নমুনা জরিপ) নমুনা চয়ন ত্রুটিপূর্ণ বলে মনে করেন।
কেসস্টাডি পদ্ধতি:
এ পদ্ধতির সাহায্যে সমাজ গবেষকগণ কোন একটি সামাজিক একক সম্পর্কে সুগভীর পর্যালোচনা করা। এই পদ্ধতিতে সাক্ষাৎকার গ্রহণ, প্রশ্নপত্র তৈরী, জীবনবৃত্তান্ত কৌশলগুলো ব্যবহার করেন। গবেষক যখন কোন বিষয়ের গভীরে যেতে চান তখন সকলের কাছে না গিয়ে ২/১ টা ঘটনাবলীর মাধ্যমে সমগ্র ঘটনা সম্পর্কে জানার প্রয়াস পান।
সমাজতাত্ত্বিক লো প্লে পারিবারিক বাজেট সম্পর্কে জানতে গিয়ে সামাজিক বিজ্ঞানে সর্বপ্রথম এ পদ্ধতি প্রয়োগ করেন।
সুবিধা:
আর্থিক ব্যয় কম;
এ পদ্ধতি নতুন চিন্তাধারা ও অনুমান করতে সাহার্য করে;
কোন ব্যক্তি, বিষয়, গোষ্ঠীকে একক হিশাবে বিবেচনা করে সেটা সম্পর্কে গভীর থেকে দেখার সুযোগ হয় এবং পরিপূর্ণ তথ্য পাওয়া সম্ভব হয়;
গবেষণাধীন বিষয়ের শুধু উৎপত্তির কারণ নয় বরং তার বিকাশের ইতিহাসও জানা যায়;
যে কোন সমস্যার ব্যপকতা এবং গভীরতা জানা যায়;
এ পদ্ধতি সমস্যা সমাধানে প্রয়োগমুখী।
অসুবিধা:
এ পদ্ধতি পক্ষপাতদুষ্ট বলে মনে করেন অনেকে;
অদক্ষ গবেষক ও সমায়ের দীর্ঘসূত্রতা অন্যতম ত্রুটি;
কার্যকরণ সম্পর্ক নির্নয়ে ও নিরীক্ষণের সুবিধা অনুপস্থিত।
পর্যবেক্ষণ পদ্ধতি দুই প্রকার:
প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ
(লক্ষিত জনগোষ্ঠীর সাথে মিশে তথ্য সংগ্রহ)
অংশগ্রহণহীন
(পরিচয় লুকিয়ে তথ্য সংগ্রহ, অপরাধী খোঁজার জন্য)
প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ ্ও পর্ববেক্ষণ পদ্ধতি:
যে গবেষণায় গবেষক গবেষণার লক্ষ্য দলের মধ্যে উপস্থিত থেকে তাদের দৈনন্দিন জীবানচরণ পদ্ধতি, মনোভাব, সংস্কৃতি, রীতিনীতি, বিশ্বাস, সামাজিক অনুশাসন, দৃষ্টিভঙ্গী ইত্যাদির সাথে সম্পৃক্ত থেকে গবেষণার কাজ পরিচালনা করেন সেটাই প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ এবং পর্যবেক্ষণ পদ্ধতি। গবেষক কোন একটি ক্ষুদ্র পরিসরে সমাজজীবন সম্পর্কে নিবিড়ভাবে জ্ঞান অর্জন করতে পারেন এবং সমাজকে তিনি স্বাভাবিক ও অকৃত্রিম অবস্থায় পর্যবেক্ষণ করেন।
সুবিধা:
সংগৃহীত তথ্য বিশুদ্ধ ও সাবলীল;
কোন বিষয়ের গভীরে যেতে হলে এটাই উত্তম পদ্ধতি;
এ পদ্ধতিতে সহজে তথ্য সংগ্রহ করা যায়;
অসুবিধা:
সময় সাপেক্ষ ও কষ্টকর;
পক্ষপাতদুষ্টতার ঝুঁকি;
নিরপেক্ষভাবে পর্যবেক্ষণ করা অনেক ক্ষেত্রেই সম্ভবপর হয়ে উঠেনা।
তুলনামূলক পদ্ধতি:
কোন বিষয়ের অতীত কেমন ছিল এবং বর্তমান কি অবস্থায় আছে তা বোঝার জন্য এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। ডুর্খেইম বলেন, সমাজবিজ্ঞান যেহেতু বিজ্ঞানভিত্তিক বিশ্লেষনের সাহায্যে সামাজিক ঘটনার কার্যকরণ সম্পর্ক সম্পর্কে ধারণা লাভ করার চেষ্টা করে, সেহেতু এখানে তুলনামূলক পদ্ধতি খুবই কার্যকর।
সুবিধা:
সাদৃশ্য ও বৈাসদৃশ্য বোঝাতে সাহায্য করে;
অসুবিধা:
অতীতের পরিপূর্ণ তথ্য প্রাপ্তি অনেকটাই অসম্ভব;
ধন্যবাদ