Loading..

প্রেজেন্টেশন

১৬ মার্চ, ২০২১ ০৮:৪৬ পূর্বাহ্ণ

পোল্ট্রি পালন (Poultry rearing) এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য।

বাংলাদেশে পোল্ট্রি শিল্পের গুরুত্ব:

সাধারণভাবে পোল্ট্রি বলতে কৃষকের গৃহে বা ফার্মে খাবার বা বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে যে সকল পাখি লালনপালন করা হয় তাদেরকে বুঝায়। অর্থাৎ পোল্ট্রি হল মাংস, ডিম, পালক, সার, পশুখাদ্য ও ঔষধ তৈরির উপকরণের মত অর্থনৈতিকভাবে মূল্যবান দ্রব্য উৎপাদনকারী গৃহপালিত পাখি।

হাঁস, মুরগি, রাজহাঁস, গিনি মুরগি, কাদাকনাথ মুরগি, কোয়েল, কবুতর এবং টার্কি সাধারণত পোল্ট্রি হিসেবে বিবেচিত হয়।

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রাণী সম্পদ খাতের উপখাত হিসাবে পোল্ট্রি খাত একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে।

দীর্ঘকাল থেকে যা দেশের গ্রামীণ পরিবারের গৃহস্থালি কাজের আয়বর্ধনের একটি হাতিয়ার। কারণ ডিম এবং মাংস সরবরাহের মাধ্যমে দেশের প্রোটিন ঘাটতি পূরণে পোল্ট্রি খাতের দেশীয় পুঁজি এবং দেশীয় উদ্যোগে তিলে তিলে গড়ে ওঠা এই শিল্পটি দেশের পুষ্টি চাহিদা মেটানোর ক্ষেত্রে বিরাট ভূমিকা রাখছে।

পোল্ট্রি ব্যাপকভিত্তিক কর্মসংস্থানমুখী একটি সমৃদ্ধ শিল্প। বিশেষত আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির ক্ষেত্রে বাংলাদেশে এই শিল্প নতুন বিপ্লবের পথ দেখিয়েছে‌।

গ্রামীণ অর্থনীতিতে নারীর ক্ষমতায়নে কৃষির পরই সবচেয়ে বড় অবদান রাখছে বাংলাদেশের পোল্ট্রি শিল্প। এখানে যেসব মানুষের জীবন জীবিকা জড়িত, তার প্রায় ৪০ শতাংশই নারী। গার্মেন্টস শিল্পের পর কর্মসংস্থানে ভূমিকা রাখছে এ শিল্প। পোল্ট্রি শিল্প কৃষি শিল্পের একটি অপরিহার্য অঙ্গ। উৎপাদন খরচ অপেক্ষাকৃত কম, দ্রুত ডিম ও মাংস পাওয়ার নিশ্চয়তা, দ্রুততার সাথে ব্যবসায়িক সাফল্য লাভ, এদের মাংসে সীমিত চর্বির উপস্থিতি, হজমে সুবিধা, সকল ধর্মের মানুষের কাছে সমানভাবে সমাদৃত; এ সকল কারণে পোল্ট্রি পালন এবং এদের থেকে উৎপাদিত খাদ্যসামগ্রী ডিম ও মাংস মানুষের পুষ্টির যোগানে আদর্শ ও মানসম্পন্ন উৎস হিসেবে পরিগণিত হয়েছে। দিন দিন এ শিল্পের জনপ্রিয়তা বেড়েই চলেছে।

কৃষি উন্নয়ন তথা দেশের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে পোল্ট্রি পালন আজ একটি বিশাল শিল্পে পরিণত হয়েছে। গরিব, অল্প আয়ের লোক, বেকার শিক্ষিত যুবক ও যুব-মহিলাসহ অন্যান্য জনগোষ্ঠী এই শিল্পের সাথে নিজেদের নিয়োজিত রেখে সাফল্য লাভ করেছে। পোল্টি শিল্পকে কেন্দ্র করে এর উৎপাদন, পরিচর্যা, পরিচালনা, প্রক্রিয়াজাতকরণ, বাজারজাতকরণ এবং খাদ্য উৎপাদন কার্যক্রমের সুবাদে আরো অনেক ক্ষুদ্র ও মাঝারি আকারে ব্যবসা এবং ব্যাপক কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে।

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, এই শিল্পের সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় ১ কোটি মানুষের কর্মসংস্থান, প্রায় ১ লাখ প্রাণী চিকিৎসক, পোল্ট্রি বিশেষজ্ঞ, নিউট্রিশনিস্ট সরাসরি নিয়োজিত রয়েছেন।

পোল্ট্রি শিল্পকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে লিংকেজ শিল্প, কাঁচামাল ও ওষুধ প্রস্তুতকারক এবং সরবরাহকারি প্রতিষ্ঠান।

পোল্ট্রির বিষ্ঠা একটি উৎকৃষ্টমানের জৈব সার। গরু-মহিষের মল-মূত্র থেকে পোল্ট্রির বিষ্ঠায় বেশি পরিমাণে নাইট্রোজেন, ফসফরাস ও পটাসিয়াম থাকে যা জমির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধিসহ ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি করে। পোল্ট্রি খামারের বিষ্ঠা দ্বারা বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট তৈরির মাধ্যমে বিদ্যুৎ চাহিদা মেটানো যায়।