
প্রধান শিক্ষক

১৬ মে, ২০২৫ ০৯:১৭ পূর্বাহ্ণ
প্রধান শিক্ষক
মাখনে মোড়া ডিম: আয়ারল্যান্ডের প্রাচীন সংরক্ষণ পদ্ধতির বিজ্ঞান
এক সময় আয়ারল্যান্ডের গ্রামগুলোতে এক ধরনের বিশেষ কৌশল চালু ছিল, যার নাম মাখনে মোড়া ডিম। এই পদ্ধতিতে তারা ডিম সংরক্ষণ করত শীতকালে, যখন মুরগির ডিম পাড়ার পরিমাণ কমে যেতো। আজকের দিনে অনেকেই হয়তো এটা ভুলে গেছেন, কিন্তু এর পেছনে আছে বেশ কিছু চমৎকার বৈজ্ঞানিক কারণ।
ডিমের গঠন ও সমস্যা
ডিমের খোসা দেখতে মজবুত হলেও আসলে তা ভরে থাকে হাজার হাজার ছোট ছোট ছিদ্র দিয়ে। এই ছিদ্রগুলো থেকে বাতাস ও আর্দ্রতা প্রবেশ করে আর জীবাণুরও সুযোগ হয় ডিমে ঢুকে পড়ার। ফলে ডিম নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে বেশি।
আর তখনকার দিনে ফ্রিজ ছিল না, তাই ডিমকে দীর্ঘদিন ভালো রাখা ছিল বড় চ্যালেঞ্জ।
প্রাকৃতিক সুরক্ষা - Cuticle
ডিম পাড়ার সময় এর উপরে একটা পাতলা প্রাকৃতিক আবরণ তৈরি হয়, যাকে বলে cuticle। এই আবরণ ডিমকে বাইরের জীবাণু থেকে রক্ষা করে।
তাই আয়ারলিশ নারীরা ডিম কখনো ধোয়া করতেন না, কারণ ধোয়ার ফলে এই আবরণ নষ্ট হয়ে যেতো।
মাখনের বিশেষ কাজ
গলানো মাখন ডিমের খোসার ছোট ছোট ছিদ্রগুলো বন্ধ করে দেয়। এর ফলে বাতাস বা জীবাণু আর ঢুকে পড়তে পারে না।
এতে ডিম অনেকদিন পর্যন্ত ভালো থাকে। শুধু তাই নয়, মাখনের ফ্যাট ডিমের মধ্যে আস্তে আস্তে মিশে গিয়ে ডিমের স্বাদ কে করে আরও মোলায়েম ও সমৃদ্ধ।
সংরক্ষণকাল
যদি মাখনে মোড়া ডিম শীতল ও শুষ্ক জায়গায় রাখা হয়, তবে ৪ থেকে ৬ মাস পর্যন্ত ডিম নষ্ট হয় না।
ব্যবহারিক কৌশল
ডিম কখনো ধোয়া হয় না।
ডিম গরম অবস্থায় (নতুন পাড়ানো) মাখনে মোড়া হয়।
মাখন ঠান্ডা হয়ে শক্ত হয়ে ডিমের খোসায় আবরণ তৈরি করে।
মাখনে মোড়া ডিম ছিল এক অনন্য প্রাচীন পদ্ধতি, যেখানে প্রাকৃতিক উপাদান ও সহজ বৈজ্ঞানিক যুক্তি মিলেমিশে ডিম সংরক্ষণ করা হতো। এটি শুধু ডিমকে দীর্ঘদিন ভালো রাখত না, বরং ডিমের স্বাদ ও গুণগত মানকেও বাড়িয়ে তুলত।
আজকের আধুনিক সময়ে যদিও অনেক নতুন পদ্ধতি এসেছে, এই ঐতিহ্যবাহী পদ্ধতি আমাদের শেখায়—কিভাবে প্রকৃতির উপকরণ ব্যবহার করে খাদ্য সংরক্ষণ করা যায়। info : next gen science
তথ্যের উৎস (Sources):
Cork Butter Museum এর ঐতিহাসিক রেকর্ড
৫৫
১০৭ মন্তব্য