Loading..

ব্লগ

রিসেট

১৬ জুন, ২০২৫ ০৮:২৭ পূর্বাহ্ণ

ডেঙ্গু কী, এর লক্ষণ ও করণীয় / প্রতিরোধ

ডেঙ্গু হলো এডিস মশা বাহিত একটি গ্রীষ্মমণ্ডলীয় রোগ, যা ডেঙ্গু ভাইরাসের কারণে হয়। এই ভাইরাস সংক্রমিত মশার কামড়ের মাধ্যমে মানুষের শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। এডিস ইজিপ্টাই (Aedes aegypti) মশা এই ভাইরাসের প্রধান বাহক।
ডেঙ্গু রোগের কারণসমূহ :-
     ভাইরাস: ডেঙ্গু ভাইরাস (DENV) নামক ফ্ল্যাভিভাইরাস ডেঙ্গু জ্বরের কারণ। এই ভাইরাসের পাঁচটি সেরোটাইপ আছে, এবং প্রতিটিই রোগ সৃষ্টি করতে সক্ষম।
     মশা: এডিস মশা, বিশেষ করে এডিস ইজিপ্টাই, ডেঙ্গু ভাইরাসের প্রধান বাহক। যখন একটি সংক্রামিত মশা কোনো সুস্থ ব্যক্তিকে কামড়ায়, তখন ভাইরাস তার শরীরে প্রবেশ করে। মানুষ থেকে মানুষে সরাসরি এই ভাইরাস ছড়ায় না।
ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ:
সাধারণত মশার কামড়ানোর ৩ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ প্রকাশ পায়। এর সাধারণ লক্ষণগুলো হলো:
* হঠাৎ উচ্চ জ্বর (১০৪° ফারেনহাইট পর্যন্ত)
* তীব্র মাথাব্যথা (বিশেষ করে চোখের পেছনে ব্যথা)
* পেশি ও গাঁটে তীব্র ব্যথা (তাই একে "ব্রেকবোন ফিভার"ও বলা হয়)
* বমি বমি ভাব বা বমি
* ত্বকে লালচে ফুসকুড়ি (জ্বর শুরু হওয়ার কয়েকদিন পর দেখা যেতে পারে)
* পেটে ব্যথা
* অবসাদ বা ক্লান্তি
কিছু ক্ষেত্রে ডেঙ্গু মারাত্মক রূপ নিতে পারে, যাকে ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার বা ডেঙ্গু শক সিনড্রোম বলা হয়। এই অবস্থায় রক্তপাত (নাক বা মাড়ি থেকে), রক্ত অনুচক্রিকার মাত্রা কমে যাওয়া, রক্তপ্লাজমার নিঃসরণ এবং শক দেখা দিতে পারে, যা জীবনঘাতী হতে পারে।
ডেঙ্গু রোগের প্রতিকার/চিকিৎসা:
ডেঙ্গু জ্বরের নির্দিষ্ট কোনো প্রতিষেধক নেই। সাধারণত লক্ষণ অনুযায়ী এর চিকিৎসা করা হয়। ডেঙ্গু হলে যা করণীয়:
* পরিপূর্ণ বিশ্রাম: রোগীকে সম্পূর্ণ বিশ্রামে থাকতে হবে।
* পর্যাপ্ত তরল গ্রহণ: প্রচুর পরিমাণে তরল জাতীয় খাবার যেমন - ডাবের পানি, লেবুর শরবত, ফলের জুস এবং খাবার স্যালাইন পান করতে হবে।
* জ্বর কমানো: জ্বর কমানোর জন্য শুধুমাত্র প্যারাসিটামল ব্যবহার করা যাবে। অ্যাসপিরিন, ক্লোফেনাক, আইবুপ্রোফেন জাতীয় ব্যথানাশক ওষুধ খাওয়া যাবে না, কারণ এতে রক্তক্ষরণের ঝুঁকি বাড়ে।
* চিকিৎসকের পরামর্শ: ডেঙ্গুর লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। বিশেষ করে যদি পেটে তীব্র ব্যথা, ঘন ঘন বমি, নাক বা মাড়ি থেকে রক্তপাত, ক্লান্তি বা অস্থিরতা, দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস ইত্যাদি গুরুতর লক্ষণ দেখা দেয়, তবে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে।
* প্লাটিলেট নিয়ে উদ্বেগ: ডেঙ্গু জ্বরে প্লেটলেট বা রক্তকণিকা নিয়ে অতিরিক্ত উদ্বিগ্ন না হয়ে চিকিৎসকের উপর ছেড়ে দেওয়া উচিত, কারণ এটি সবসময় মূল সমস্যা নয়।
প্রতিরোধ:
ডেঙ্গু প্রতিরোধের মূল উপায় হলো এডিস মশার বিস্তার রোধ করা এবং মশার কামড় থেকে নিজেকে রক্ষা করা।
* মশা জন্মানোর স্থানগুলো (যেমন - ফুলের টব, টায়ার, পুরোনো পাত্রে জমে থাকা পানি) নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে।
* দিনে ও রাতে মশারির ব্যবহার করতে হবে।
* মশা তাড়ানোর স্প্রে বা লোশন ব্যবহার করা যেতে পারে।

মন্তব্য করুন