Loading..

উদ্ভাবনের গল্প

২৫ জুলাই, ২০২১ ০৭:৫৮ অপরাহ্ণ

খুঁজে আনা’ কোরবানির মাংস স্বাদ না হওয়ায় স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যা বাঁশখালী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি প্রকাশিত: ১৯:৪১ ২৫ জুলাই ২০২১

খুঁজে আনা’ কোরবানির মাংস স্বাদ না হওয়ায় স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যা

বাঁশখালী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি  প্রকাশিত: ১৯:৪১ ২৫ জুলাই ২০২১  

 

আইরিন আক্তার ও হারুনুর রশিদ

আইরিন আক্তার ও হারুনুর রশিদ

কোরবানির মাংস স্বাদ না হওয়ায় চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে ২১ বছরের তরুণী আইরিন আক্তারকে পিটিয়ে হত্যা করেছেন স্বামী।

শনিবার রাতে আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বামীর ফেলে যাওয়া স্ত্রীর লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায় পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে বাঁশখালী উপজেলার পুকুরিয়া ইউনিয়নের চাঁনপুর গ্রামে।

নিহত আইরিন চাঁনপুর গ্রামের অটোচালক হারুনুর রশিদের স্ত্রী ও একই উপজেলার সাধনপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ সাধনপুর গ্রামের আবু ছালেকের মেয়ে।

ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছেন নিহতের স্বামী ও ভাসুর। তবে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আইরিন আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রচার করেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন।

জানা গেছে, ২০১৭ সালের ১০ আগস্ট হারুনুর রশিদের সঙ্গে আইরিনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে যৌতুকের জন্য বারবার বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দিতেন স্বামী। এ নিয়ে একাধিকবার সালিশও হয়েছে। কোরবানির ঈদের দিন বিকেলে প্রতিবেশীর দেওয়া গরুর মাংস এনে আইরিনকে রান্না করতে দেন স্বামী হারুনুর রশিদ।

মাংস খেয়ে স্বাদ পাননি বলে অভিযোগ করেন স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন। মাংসের স্বাদ তেতো হওয়ায় প্রতিবেশীদেরও ডেকে দেখানো হয়। এ নিয়ে আইরিনকে কয়েক দফা পিটিয়ে জখম করেন হারুনুর রশিদ। শনিবার পর্যন্ত ঘরের কাজ করলেও ভাত খাওয়া বন্ধ করে দেন আইরিন। শনিবার সকাল ৯টায় তাকে আবারো মারধর করেন স্বামী। এতে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি।

এরপর গোপনে আইরিনকে আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পরে হাসপাতালে লাশ ফেলে কৌশলে পালিয়ে যান শ্বশুরবাড়ির লোকজন।

আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আবু মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন বলেন, গৃহবধূ আইরিনকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে এনেছিলেন স্বজনরা।

আইরিন আক্তারের শাশুড়ি নুর বানু বলেন, মাংসের রান্না স্বাদ না হওয়ায় আইরিনকে আমার ছেলে পিটিয়েছে ঠিক, কিন্তু হত্যা করেনি। আমার ছেলে বলেছে, ওড়না পেঁচিয়ে সে আত্মহত্যা করেছে। তবে কীভাবে আইরিন মারা গেছে, কোথায় ওড়না পেঁচানো হয়েছে আমি দেখিনি।

সাধনপুর গ্রামের ইউপি সদস্য আব্দুর রহমান বলেন, আইরিনের যৌতুকলোভী স্বামী হারুনুর রশিদের অত্যাচারে দফায় দফায় সালিশ বসে। সালিশে হারুনুর রশিদের দোষ প্রমাণিত হতো। মূলত যৌতুক না পেয়েই মাংস রান্নার অজুহাতে আইরিনকে হত্যা করা হয়েছে।

আইরিনের বাবা আবু ছালেহ ও মা শামশুন্নাহার বলেন, আমার মেয়েকে পিটিয়ে হত্যা করেছে তার স্বামী। হত্যার পর তারা আমার মেয়ের লাশ গায়েব করার চেষ্টা করেছিল। আমার মেয়ের হত্যার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

বাঁশখালীর রামদাশ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মিনহাজ মাহমুদ বলেন, আইরিনের মৃত্যুর বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে বাবার বাড়িতে দাফনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে আইরিনের বাবা-মা। বিষয়টি তদন্ত শেষে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।