Loading..

খবর-দার

২৫ জুলাই, ২০২১ ০৮:৪১ অপরাহ্ণ

৬ষ্ঠ থেকে ৯ম শ্রেণি ও ২০২২ সালের এস এস সি পরীক্ষার্থীদের চলমান এ্যাসাইনমেন্ট স্থগিত ঘোষণা।কামরুল হাসান আহমেদ
৬ষ্ঠ থেকে ৯ম শ্রেণি ও ২০২২ সালের এস এস সি পরীক্ষার্থীদের চলমান এ্যাসাইনমেন্ট স্থগিত ঘোষণা।
বাংলা ভাষা আমাদের মাতৃভাষা। পৃথিবীর মধুর ভাষার  মধ্যে বাংলা অন্যতম। চতুর্থ খ্রীস্টাব্দে ব্যাকরণবিদ পাণিনি বৈদিক ভাষার উপর কিছু নিয়ম প্রণয়ন করেন। যার দ্বারা সংস্কৃত ভাষার জন্ম হয়। তবে আইন অনুযায়ী উচ্চ রাজন্যবর্গে এই ভাষা ব্যবহৃত হবে।নারী ও সাধারণ প্রজারা এই ভাষায় কথা বলতে পারবে না। তাই তারা সমাজের নানা প্রচলিত ভাষায় কথা বলত।জনগণের এই ভাষা প্রাকৃত ভাষা নামে পরিচিতি লাভ করে। আর অতি ব্যাকরণের দোষে দুষ্ট হয়ে সংস্কৃত ভাষা মৃত ভাষার খেতাব প্রাপ্ত হয়। প্রাকৃত ভাষাগুলো থেকে তখন ভারতবর্ষে অগণিত ভাষার জন্ম হয়। যার মধ্যে বাংলা ভাষা অন্যতম। ৫ম খ্রীস্টাব্দে পালি ভাষা ব্যবহারকারী বৌদ্ধ ভিক্ষুদের ব্যবহার জনিত সংস্পর্শে এসে বাংলা ভাষার প্রাথমিক রূপ প্রণীত হয়।বৌদ্ধদের ব্যবহৃত ভাষা বলে হিন্দু শাসকদের দ্বারা নির্যাতিত হতে শুরু করে বাংলা ভাষা ব্যবহারকারীরা। ভাষা কখন বাধা মানেনা। এই বাংলা ভাষা ব্যবহার করা ভিক্ষুগণ ৬৫০ সালের দিকে চলে আসেন ধর্মপাল রাজার বিশব্বিদ্যালয় সোমপুর বিহারে। যা বর্তমানে বাংলাদেশের নওগাঁ জেলায় অবস্থিত।  বাংলা ভাষার বিকাশে এই প্রতিষ্ঠান অনেক খানি এগিয়ে। ৯০০ সালের দিকে সেন বংশের শাসন শুরু হয় বাংলায়। উগ্র হিন্দুদের নির্যাতনের শিকার হতে শুরু করে বৌদ্ধ ভিক্ষু রা। জীবন বাচাতে ভিক্ষুরা পালিয়ে যায় নেপাল তিব্বত সহ বিভিন্ন দেশে। বাংলা ভাষার প্রাচীন নিদর্শন "চর্যাপদ " এই সব কারনেই নেপালে পাওয়া যায়। বৌদ্ধদের এই জীবন বাজি রেখে বাংলা ভাষার সংরক্ষণের জন্য আজ আমরা বাংলা ভাষার বয়স যে ইংরেজি ভাষার আগে তা প্রমাণ করতে পারি। সেন বংশের পতনের পর বাংলায় তুর্কিরা ফারসি ভাষার চালুকরে। আর মধ্যযুগের বাংলা ভাষার বিকাশে আরকান রাজসভার কবিরা ঢেলে দিয়েছেন মেধা ও নিজেদের কাব্য প্রতিভাকে। আলাওল, কোরেশি মাগন ঠাকুর,  দৌলত উজির, সহ নাম না জানা বহু কবি সমৃদ্ধ করে সাহিত্য জগতে বাংলাকে  বিশ্বে পরিচিত করেছেন। ১৭৫৭ সালের ব্রিটিশ শাসকরা বাংলা চর্চার ব্যবস্থা করেন। তাই তো বাংলার আধুনিক কবিরা মন ঢেলে সাহিত্য চর্চা শুরু করেন। ১৯১৩ সালে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নোবেল পুরষ্কার পাওয়ার মাধ্যমে বাংলা ভাষা পৃথিবীতে স্বীকৃতি লাভ করে।১৯৪৭ সালে ভারত পাকিস্তান দুটি আলাদা রাষ্ট্রের জন্ম হয়। আমরা সংগত কারণে পাকিস্তানের ভিতর চলে আসি
উর্দু হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা। বাংলা ভাষা প্রেমী বীরেরা মাতৃভাষার মান রক্ষায় নেমে আসে রাজপথে। ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারিতে ঢাকার রাজপথ ভাষাপ্রেমিদের রক্তে রঞ্জিত হয়। অবশেষে পাকিস্তান সরকার ১৯৫৬ সালে বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষার  স্বীকৃতি দিতে বাধ্য হয়।
১৯৯৯ সালে ইউনেস্কো ২১শে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে।
পৃথিবীতে ভাষা অনেক আছে কিন্তু  বাংলা ভাষার মতো এমন কোন ভাষা আর নেই।১৫০০ বছরের শত নির্যাতনের শিকার হয়েও এই ভাষাগোষ্ঠীর মানুষ জীবন দিয়েছে সত্যি কিন্তু ভাষার প্রতি অবমূল্যায়ন সহ্য করেনি ভবিষ্যতেও করবেনা।।

    কামরুল হাসান আহমেদ