Loading..

শিক্ষায় অগ্রযাত্রা

২৮ জুলাই, ২০২১ ০৪:৩২ অপরাহ্ণ

করোনায় অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম ও বাস্তবতা

করোনা মহামারিতে পরিবর্তনশীল এই জীবন ব্যবস্থার সঙ্গে শিক্ষার ধারাটিও পরিবর্তন হয়েছে। থমকে যাওয়া পুরো বিশ্বের সামনে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করাও এখন একটি বড় চ্যালেঞ্জ। যেখানে সবাই আতঙ্কিত নিজেদের জীবন রক্ষা নিয়ে। করোনার প্রভাব যেমন দেশের অর্থনৈতিক, সামাজিক জনজীবনের উপর প্রভাব ফেলছে তেমনি শিক্ষাক্ষেত্রেও চরম প্রভাব ফেলছে। গত ২৬শে মার্চ থেকে দেশের স্কুল-কলেজ সব সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে কিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইন ক্লাস-পরীক্ষা ভর্তি কার্যক্রম চালু রাখা হয়। পহেলা এপ্রিল থেকে শুরু হতে যাওয়া উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা স্থগিত করা হয়।

শিক্ষাই পারে দেশকে, জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে, সেখানে শিক্ষাব্যবস্থাই আজ বিপাকে। যদিও অনলাইন শিক্ষার মাধ্যমে শিক্ষাদান কার্যক্রম চলছে তবুও এটি কতটা ফলপ্রসূ হবে তা নিয়ে সকলেরই প্রশ্ন রয়েছে। গত কয়েক মাস ধরে দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকায় অনলাইনের মাধ্যমে শিক্ষাদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। অনিশ্চিত এই পরিস্থিতিতে অনলাইন কার্যক্রম চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার ও ইউজিসি। ইতিমধ্যে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়ে গেছে। শিক্ষার্থীরা পরিচিত হচ্ছে নতুন এক অধ্যায়ের সাথে। প্র্যাকটিকেল ক্লাস, পরীক্ষা, গতানুগতিক শিক্ষা থেকে দূরে থেকে নতুন শিক্ষাধারায় সম্পৃক্ততায় শিক্ষার্থীরা কতটুকু উপকৃত হচ্ছে তা নিয়ে মতভেদ রয়েছে অনেকেরই মনে। অনলাইন ক্লাস শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কাছে নতুন বিষয় যা বৈশ্বিক মহামারির কারণে সকলের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। মূলত শিক্ষার্থীদের অনলাইন টিউটোরিয়াল বা জুম মিটিংয়ের মাধ্যমে ক্লাস নেওয়ার ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া টিভি চ্যানেলের মাধ্যমে ও নিয়মিত প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের জন্য অনলাইন ক্লাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে এই অনলাইন ক্লাসের পাঠদান গ্রহণের ক্ষেত্রেও অনীহা রয়েছে অনেকের মাঝে। অনলাইন ক্লাসের মূল গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো শিক্ষাব্যবস্থা যেন এই মহামারিতে মুখ থুবড়ে না পড়ে– যা দেশের জন্য অতি জরুরি।

অনেকের মনেই প্রশ্ন আসতে পারে এই মহামারিতে জীবন যেখানে অনিশ্চিত, সেখানে শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে ভাবনা  কতটা  প্রাসঙ্গিক। এই প্রশ্নের উত্তর ও গভীরভাবে চিন্তা করলে পাওয়া যায়। মহামারি আসবে যাবে, এখন শুধু কাটিয়ে ওঠার অপেক্ষা কিন্তু শিক্ষাব্যবস্থা স্থবির হয়ে গেলে সেটাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া অনেক কষ্টসাধ্য। শিক্ষার্থীদের পিছিয়ে পড়া রোধ করতে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।

করোনা পরবর্তী শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে সংশয় রয়েছে। কেমন হবে তাদের শিক্ষাক্রম? কতটুকু পরিবর্তন আসবে তাদের শিক্ষা ধারায় এটি তাদের প্রশ্ন। অন্যদিকে সেশনজট নিয়ে শিক্ষার্থীদের মনে ভয়টা আরও বেড়েছে এই মহামারি পরিস্থিতিতে। দুশ্চিন্তায় রয়েছে পরিবার।  সন্তান শিক্ষিত হয়ে প্রতিষ্ঠিত হবে এ আশা সকল বাবা-মায়ের তবে বর্তমানে এই আশা অনেকটা নিরাশার দিকে ঠেলে দিচ্ছে তাদের।

কবে ফিরবো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শীতল ছায়ায় ? এই প্রশ্ন নিয়ে দিনযাপন করছে প্রতিটি শিক্ষার্থী। অনলাইন শিক্ষাক্রম শুরুর সাথে সাথে এর উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে আলোচনার শেষ নেই। তবে শিক্ষাব্যবস্থাকে সচল রাখতে এই কার্যক্রম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। তবে অনলাইন শিক্ষা নিয়ে কিছু প্রশ্ন সকলের মনেই থেকে যায়। প্রশ্নগুলো অগ্রাহ্য করার মতো নয়। পরিস্থিতি বিবেচনায় অনলাইন ক্লাসের সুফল উপলব্ধি করা প্রয়োজন।

অনলাইন শিক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা তথ্য প্রযুক্তির সঙ্গে আরও বেশি করে পরিচিত হচ্ছে যা তাদের দক্ষতাকে বৃদ্ধি করছে। শিক্ষার্থীদের মূল্যবান সময় যেমন নষ্ট হচ্ছে না, অন্যদিকে মানসিক চাপ কিছুটা কমছে শিক্ষার্থীদের। অনলাইন ক্লাসের পাশাপাশি পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। শিক্ষকরা কোর্স প্লান অনুযায়ী পড়াচ্ছেন,  পাশাপাশি বিভিন্ন শিট, নোট শেয়ার করছেন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে। তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষ নয় এমন শিক্ষার্থীও এখন তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষ হয়ে উঠছে ফলে অনলাইনে একাডেমিক শিক্ষার পাশাপাশি বিভিন্ন কোর্স করছে শিক্ষার্থীরা।

যদিও অনলাইন ক্লাস সরাসরি ক্লাসের বিকল্প হিসেবে কতটুকু কার্যকর তা নিয়ে মতভেদ রয়েছে তবুও এটি গুরুত্বপূর্ণ। এটি শিক্ষাব্যবস্থার পূর্ণাঙ্গ রূপ না হলেও আংশিক হিসেবে সচল রাখছে শিক্ষাব্যবস্থাকে।


আরো দেখুন

কোন তথ্য খুঁজে পাওয়া যাইনি