প্রভাষক
২৮ জুলাই, ২০২১ ০৬:৫৪ অপরাহ্ণ
একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু দেখল ইন্দোনেশিয়া আন্তর্জাতিক ডেস্ক প্রকাশিত: ১৭:৪৩ ২৮ জুলাই ২০২১
একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু দেখল ইন্দোনেশিয়া
আন্তর্জাতিক ডেস্ক প্রকাশিত: ১৭:৪৩
২৮ জুলাই ২০২১
ছবি:
সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতে
সম্প্রতি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব কমে এলেও তা মারাত্মক রূপ নিয়েছে
ইন্দোনেশিয়ায়। ফলে বিশ্বে ভাইরাসটির নতুন হটস্পটে পরিণত হয়েছে দেশটি। এর মধ্যেই গত
২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে বিশ্বে সর্বোচ্চ মৃত্যু হয়েছে।
আন্তর্জাতিক জরিপকারী ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটার্সের তথ্যানুযায়ী,
মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) দেশটিতে রেকর্ড দুই হাজার ৬৯ জন মারা গেছে। এছাড়া আক্রান্ত
হয়েছে ৪৫ হাজারের বেশি। এ নিয়ে দেশটিতে করোনায় মোট মৃত্যু সাড়ে ৮৬ হাজারের বেশি।
মোট শনাক্ত ৩২ লাখ ৩৯ হাজার ছাড়িয়েছে।
পরিসংখ্যান বলছে, ৭ জুলাই দেশটিতে মৃত্যু হয় ১ হাজার ৪০ জনের। গত
২০ দিনের ব্যবধানে মৃত্যু এবং করোনা শনাক্তের রোগী ভয়াবহভাবে বাড়ছে দেশটিতে।
বিশ্বের সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলছেন, মহামারির
বর্তমান গতি ও আক্রান্তের হারের কারণে ইন্দোনেশিয়ায় করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট
সৃষ্টির ঝুঁকি রয়েছে, যা ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের তুলনায় আরও বেশি মারাত্মক হতে পারে।
গত সপ্তাহে ইন্দোনেশিয়া দৈনিক আক্রান্তের হারে ভারত ও ব্রাজিলকে
অতিক্রম করে। বিশ্বের সবচেয়ে বেশি মুসলিম জনসংখ্যার দেশটিতে দৈনিক গড়ে ৫০ হাজার
জনের বেশি নতুন রোগী শনাক্ত ও দেড় হাজারের মতো মৃত্যু হচ্ছে।
মহামারি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নতুন ভ্যারিয়েন্ট সবসময় এমন অঞ্চল বা
দেশগুলোতে শুরু হয়, যারা সহজে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, পাঁচ শতাংশের বেশি করোনা টেস্টের
ফলাফল পজিটিভ হলে মহামারি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হয় না। ইন্দোনেশিয়ায় করোনা মহামারি শুরুর
পর ১৬ মাস ধরে আক্রান্তের হার ১০ শতাংশের বেশি ছিল। বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩০
শতাংশে। সুতরাং বিশেষজ্ঞরা সহজেই অনুমান করছেন, ইন্দোনেশিয়ায় করোনার নতুন
ভ্যারিয়েন্ট বা সুপার ভ্যারিয়েন্ট তৈরির শঙ্কা যথেষ্ঠ রয়েছে।
সংক্রামক রোগ নিয়ে গবেষণা করে এমন একটি সরকারি সংস্থার পরিচালক
আমিন সোয়েবানদিরিও বলেছেন, নতুন ভ্যারিয়েন্ট আবিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত নজরদারি
খুবই গুরত্বপূর্ণ। তার মতে, ইন্দোনেশিয়ায় করোনার প্রকোপ দেখে নতুন ভ্যারিয়েন্টের
শঙ্কা অস্বীকার করা যায় না।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান দুটি গবেষক দল ইন্দোনেশিয়ার বর্তমান পরিস্থিতিতে
উদ্বেগ জানিয়ে বলেছে, সেখানে নতুন ভ্যারিয়েন্ট শনাক্তের রয়েছে শঙ্কা। ভাইরাস যত
বেশি ছড়ায় তত বেশি নতুন ভ্যারিয়েন্ট তৈরি ত্বরান্বিত হয়। ঈদুল আজহার কারণে
ইন্দোনেশিয়ায় করোনা ভাইরাস আরও বেশি মাত্রায় ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে স্থানীয়
সংবাদমাধ্যমে ইতোমধ্যে উঠে এসেছে। এর আগে ঈদুল ফিতরের পর সংক্রমণ অনেকাংশে
বেড়েছিল। বেড়েছিল মৃত্যুও। এবারও তেমন হওয়ার শঙ্কা প্রবল।
বিশ্বে এই মুহূর্তে চারটি ভ্যারিয়েন্ট অব কনসার্ন রয়েছে, যার মধ্যে
রয়েছে ‘আলফা’ ভ্যারিয়েন্ট। প্রথমে এটি আবিষ্কার হয় যুক্তরাজ্যে। পরে ‘বেটা’
ভ্যারিয়েন্ট আবিষ্কার হয় দক্ষিণ আফ্রিকায়। ‘ডেল্টা’ ভ্যারিয়েন্টে আবিষ্কার হয়
ভারতে এবং ‘গামা’ ভ্যারিয়েন্ট আবিষ্কার হয় ব্রাজিলে।
ইন্দোনেশিয়ায় ইতোমধ্যে ‘গামা’ ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশটিতে ‘আলফা’ ভ্যারিয়েন্ট এখনো সক্রিয়, যদিও ‘ডেল্টা’
ভ্যারিয়েন্টের তীব্রতা সবচেয়ে বেশি। সব মিলিয়ে এই ধরনগুলো মিলে একটি স্বতন্ত্র ধরন
তৈরি হলে পরিস্থিতি হবে ভয়াবহ। আর তা বিশ্বের অন্য দেশে ছড়িয়ে গেলে সেখানকার
পরিস্থিতিও ভয়ানক খারাপ হতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।