Loading..

প্রকাশনা

৩১ জুলাই, ২০২১ ১২:৪৩ অপরাহ্ণ

এক আলোর দিশারীর স্বপ্ন

এক আলোর দিশারীর স্বপ্ন

মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়- এ স্লোগান সামনে রেখে নিরন্তর কাজ করে চলেছেন আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়নের সময় তিনি বারবার বলে আসছেন, আমরা এমন আলোকিত মানুষ চাই, যারা নিজেদের সামর্থ্যরে সবটুকু সমাজ ও সভ্যতার কল্যাণের কাজে ব্যয় করার চেষ্টা করবে। বস্তুত কোনো ব্যক্তির সামর্থ্য যত কমই থাকুক, নিরন্তর চেষ্টা অব্যাহত রাখলে তার পক্ষে সাফল্যের চূড়া স্পর্শ করা সম্ভব না হলেও সাফল্যের মহাসড়কে অনেক দূর এগিয়ে যাওয়া সম্ভব। এসব পরামর্শ প্রদানের মধ্য দিয়েই তিনি তার দায়িত্ব শেষ করেননি। বরং নিজে একজন সক্রিয় কর্মী হিসাবে সব সময় দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের বিভিন্ন কর্মসূচি দেশব্যাপী আলোর পিপাসায় উন্মুখ পাঠকের সংখ্যা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। স্বপ্ন মানুষকে কত দূর নিয়ে যেতে পারে, তা আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বারবার তার আলোচনায় গুরুত্বের সঙ্গে উল্লেখ করেছেন।

আমাদের নতুন প্রজন্ম নিরন্তর অধ্যয়নের মধ্য দিয়ে জীবন ও জগতের রহস্য উদ্ঘাটনের চেষ্টা করবে, মনীষীদের চিন্তার সঙ্গে পরিচিত হওয়ার চেষ্টা করবে, জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে উচ্চ নৈতিকতা ও উন্নত মূল্যবোধের চর্চার মধ্য দিয়ে ভালো মানুষ হওয়ার চেষ্টা করবে- এটাই আমাদের প্রত্যাশা। আমাদের মনের কথাগুলো আরও স্পষ্ট ও জোরালোভাবে তুলে ধরে সমাজ ও সভ্যতার অগ্রগতি ত্বরান্বিত করার কাজে যারা আত্মনিয়োগ করেছেন আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ তাদেরই একজন। একজন সৃজনশীল লেখক তার বক্তব্যকে পাঠকের সামনে প্রাণবন্ত করতে ছন্দ উপমাসহ নানা শব্দের আশ্রয় নেন। আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ যখন কোনো আলোচনা শুরু করেন, ছন্দ উপমার পাশাপাশি বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পৃক্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্যও তুলে ধরেন। তার লেখাও পাঠককে বিশেষভাবে নাড়া দিতে সক্ষম হয়েছে। আজ তার জন্মদিনে তাকে জানাই সশ্রদ্ধ শুভেচ্ছা।

গত শতকের ষাটের দশকে যেসব গুণীজনের সৃজনশীল কর্মকাণ্ড দেশের মানুষের চিন্তার জগতে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল, আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ তাদের অন্যতম। কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি পেয়েছেন অনেক মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার। তবে মানুষের যে ভালোবাসা তিনি পেয়েছেন, এর তুলনা হয় না। চার দশকেরও বেশি সময় ধরে বইপড়াসহ নানামুখী কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র কোটি মানুষের মনে ঠাঁই করে নিয়েছে। দেশে এমন প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা যাতে বৃদ্ধি পায় সে জন্য সবাইকে সচেষ্ট হতে হবে।

২.

আধুনিক প্রযুক্তি এবং জ্ঞান-বিজ্ঞানের চর্চার মধ্য দিয়ে জাপান বিশ্ববাসীর মনোযোগ আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জাপানের বিস্ময়কর অর্থনৈতিক উন্নতির পেছনে জ্ঞান-বিজ্ঞানের চর্চা কী ভূমিকা রেখেছে তাও বহুল আলোচিত। বস্তুত মেইজি যুগে অভূতপূর্ব এক শিক্ষাবিপ্লব ঘটেছিল জাপানে। অন্য দেশ থেকে জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা অর্জনের লক্ষ্যে সরকার বিভিন্ন দেশে প্রতিনিধি প্রেরণ করে। তারা বিভিন্ন দেশের শিক্ষা ও সংস্কৃতি নিয়ে গবেষণা করে দেশে ফিরে তাদের অভিজ্ঞতা কাজে লাগানোর চেষ্টা করেন। ওই সময় বিভিন্ন ভাষার বহু গ্রন্থ জাপানি ভাষায় অনূদিত হয়। এমন বহু উদ্যোগের ফলেই একপর্যায়ে জাপান এশিয়ার প্রথম শিল্পোন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হতে সক্ষম হয়েছে। বস্তুত মেইজি যুগে দেশটিতে শিক্ষার মজবুত ভিত স্থাপিত হয়েছিল বলেই পরবর্তীকালে সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে জাপানিরা মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে সক্ষম হয়েছে। আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় শিক্ষা খাতকে কতটা গুরুত্ব দিতে হবে করোনা এসে তা আবারও সবাইকে স্মরণ করিয়ে দিল।

মোহাম্মদ কবীর আহমদ : সাংবাদিক

 

আরো দেখুন

কোন তথ্য খুঁজে পাওয়া যাইনি