সহকারী শিক্ষক
০৬ ডিসেম্বর, ২০২১ ১০:৪২ অপরাহ্ণ
বিছুটির অনেক গুণ
বিছুটি নাম শুনে অনেকেই আঁতকে ওঠেন। কারণ এ গাছের পাতা বা কাণ্ড স্পর্শ
করলে শরীর চুলকায় এবং জ্বালা করে। নেতিবাচক এ দিকটি ছাড়া বিছুটির অনেক ঔষধি
গুণও আছে। এর ফল ও শিকড় প্রস্রাবের জ্বালাপোড়া, মাথাব্যথা, কুষ্ঠরোগ,
চর্মরোগ, চুলপড়া, বুক ধড়ফড়ানি ইত্যাদি সমস্যায় নানাভাবে কাজে লাগে।
প্রস্রাবের জ্বালাপোড়ায় গাছের শিকড় বেটে রস নিয়ে আধকাপ করে প্রতিদিন দু'বার
করে সেব্য। মাথাব্যথা হলে গাছের মূল আদার সঙ্গে মিশিয়ে বাহ্যিকভাবে কপালে
ব্যবহার করলে উপকার পাওয়া যায়। গায়ে খোসপাঁচড়া ও ঘা হলে পরিমাণমতো শিকড়
তুলসী পাতার সঙ্গে
বেটে বাহ্যিকভাবে প্রলেপ দিলে সেরে যায়। সর্দিকাশি, জ্বর ও ব্রঙ্কাইটিসে
আধাকাপ পরিমাণ শিকড়ের রস দু-তিন দিন পান করলে উপশম হয়। চুলপড়া বন্ধ করতে
গাছের শিকড় অল্প পানিতে পিষে আমলকীর রসের সঙ্গে মিশিয়ে মাথায় লাগাতে হয়।
তাতে ভালো কাজ হয়। বুকে ধড়ফড়ানি হলে পাঁচ গ্রাম পরিমাণ গাছের সতেজ মূল দুই
কাপ পানিতে জ্বাল দিয়ে এক কাপ পরিমাণ থাকতে নামিয়ে দুবার সেব্য। নাকে-মুখে
রক্তপড়া বন্ধ করতে পাঁচ-ছয় গ্রাম পরিমাণ শালপানির মূলের সঙ্গে মিশিয়ে তিন
কাপ পানিতে জ্বাল দিয়ে আধা কাপ থাকতে নামিয়ে ছেঁকে প্রতিদিন সকাল-বিকেল
কোয়ার্টার কাপ দুধ মিশিয়ে সেবন করলে বেশ উপকার পাওয়া যাবে। এসব ছাড়াও গাঁটে
বাত, কোষ্ঠবদ্ধতা, কাশি, হাঁপানি ও মামস সমস্যায় বিছুটির মূল ও ফল বেশ
কার্যকর।
বিছুটি স্থানীয়ভাবে ছাগল সত্তা, বাঙ্গাল সত্তা, চোতরা
লুদি ইত্যাদি নামেও পরিচিত। এটি চিরসবুজ, ঘন শাখাবিশিষ্ট ও বীরুৎ। সাধারণত
এক থেকে দেড় মিটার পর্যন্ত উঁচু হতে পারে। পাতা রোমশ; আড়াই থেকে ১০ সেমি
লম্বা, বর্শাফলাকৃতির। পুষ্পদণ্ড খাড়া, প্রতিটি পত্রকোণ বা গিঁট থেকে ফুল
হয়। ফল ত্রিকোণাকৃতির। ফুল ও ফলের মৌসুম প্রায় বর্ষব্যাপ্ত।