Loading..

ম্যাগাজিন

২১ জানুয়ারি, ২০২২ ০৫:৪৮ অপরাহ্ণ

সাগরে গলে গেছে ৬ হাজার বর্গকিলোমিটারের ‘মেগাবার্গ’ সাগরে গলে গেছে ৬ হাজার বর্গকিলোমিটারের ‘মেগাবার্গ’

দৈত্যাকৃতির আইসবার্গ এ৬৮ সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিলেন বিজ্ঞানীরা। এই আইসবার্গটি ২০১৭ সালে এন্টার্কটিকা মহাদেশ থেকে আলাদা হয়ে উত্তর দিকে ভেসে যেতে শুরু করে। কিন্তু ২০২১ সাল নাগাদ এটি গলতে গলতে পুরোপুরি বিলুপ্ত হয়ে যায়। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এর আগে এটি দৈনিক সর্বোচ্চ ১.৫ বিলিয়ন টন পর্যন্ত পানি সমুদ্রে অবমুক্ত করেছে। অর্থাৎ বৃটেনের সকল মানুষ প্রতিদিন মোট যে পরিমাণ পানি ব্যবহার করেন এ৬৮ প্রতিদিন তার ১৫০ গুণ বেশি পানি সমুদ্রে অবমুক্ত করেছে। অল্প সময়ের জন্য হলেও এটি ছিল বিশ্বের সবথেকে বড় আইসবার্গ। এর আয়তন ছিল ৬ হাজার বর্গকিলোমিটার। প্রায় ৪ বছরে বিশাল এই আইসবার্গটি সমুদ্রে পুরোপুরি মিশে গেছে।

এর আকৃতির কারণে বিজ্ঞানীরা একে মেগাবার্গ বলে ডাকেন।

এতে ছিল এক ট্রিলিয়ন টন বরফ। বিজ্ঞানীরা এখন এ৬৮ আইসবার্গ গলে যাওয়ার প্রাকৃতিক প্রভাব বুঝার চেষ্টা করছেন। এটি এন্টার্কটিকা থেকে আলাদা হয়ে দক্ষিণ মহাসাগরে ভাসতে থাকে। এরপর এটি ক্রমশ আটলান্টিক মহাসাগরে প্রবেশ করে। ফলে আস্তে আস্তে ঠান্ডা পরিবেশ থেকে বেড়িয়ে গরম পানিতে এসে পড়ে আইসবার্গটি। পুরোপুরি গলে যাওয়ার আগে এটি বৃটেনের নিয়ন্ত্রণে থাকা সাউথ জর্জিয়ার দিকে ভেসে যাচ্ছিল।

তখন আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছিল যে, সুবিশাল বরফখণ্ডটি আশেপাশের সাগরের অগভীর অঞ্চলে আটকে যেতে পারে। এতে লাখ লাখ পেঙ্গুইন, সীল এবং তিমির খাবারের খোঁজে চরার পথ রুদ্ধ হয়ে যেত। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা ঘটেনি। গবেষণার ফলে জানা গেছে, এ ৬৮ সে সময় ভেসে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় আকার হারিয়ে ফেলেছিল। ২০২১ সালের এপ্রিলের মধ্যে আইসবার্গটি অসংখ্য ছোট ছোট টুকরো টুকরোয় বিভক্ত হয়ে যায়। ফলে সেগুলো আর নজরে রাখা সম্ভব হয়নি। কিন্তু বিজ্ঞানীরা বলছেন, এর পরিবেশগত প্রভাব অনেক দিন থেকে যাবে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন দৈত্যাকার  চ্যাপ্টা  হিমশৈলগুলো এদের বিচরণের এলাকায় যথেষ্ট প্রভাব রাখতে পারে। এগুলো থেকে বেরিয়ে আসা মিষ্টি পানির ভাণ্ডার স্থানীয় সমুদ্র স্রোতকে পাল্টে দেয়। এছাড়া এসবের মধ্যে থাকা লোহা ও অন্যান্য খনিজদ্রব্য সাগরের লোনা পানিতে মিশে নতুন জৈবিক উৎপাদনের সূচনা করে।

‘বৃটিশ অ্যান্টার্কটিক সার্ভে’ আইসবার্গটির সম্পূর্ণভাবে গলে যাওয়ার আগে এর ওপর নজর রাখতে আশেপাশে কিছু রোবোটিক গ্লাইডার স্থাপন করেছিল। জৈব সমুদ্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক জেরাইন্ট টারলিং বলেন, এগুলোসহ অন্যান্য যন্ত্র থেকে পাওয়া তথ্য কিছু আকর্ষণীয় বৈশিষ্ট্য প্রকাশ করেছে। তবে এখনও সব তথ্য উপাত্ত পুরোপুরি বিশ্লেষণ করা সম্ভব হয়নি। জেরাইন্ট টারলিং জানান, এ ৬৮ এর আশেপাশের সাগরে ফাইটোপ্ল্যাঙ্কটনের প্রজাতির মধ্যে পরিবর্তনের জোরালো সংকেত পাওয়া গেছে। পরিবর্তনের ইঙ্গিত পাওয়া গেছে এর কাছাকাছি সমুদ্রের গভীর অংশে সঞ্চিত বস্তুর ক্ষেত্রেও।

আরো দেখুন

কোন তথ্য খুঁজে পাওয়া যাইনি