Loading..

প্রকাশনা

২৭ জানুয়ারি, ২০২২ ০৮:৪৫ পূর্বাহ্ণ

কালিয়াকৈরের বিখ্যাত ধনীর চিড়া

কালিয়াকৈরের বিখ্যাত ধনীর চিড়া

বাংলাদেশের  ঐতিহ্যবাহী খাবারের  মধ্যে ধনীর চিড়া অন্যতম ।  যে চিড়ার খ্যাতি সুদূর ইংল্যান্ডে ছড়িয়ে পড়েছিল । গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার সূত্রাপুর ইউনিয়নের অর্ন্তগত বারবাড়িয়া গ্রামে উদ্ভব ঘটেছিল এই বাংলার বিখ্যাত ধনীর চিড়ার ।

আজ থেকে প্রায় ১৫০ বছর পূর্বে বারবাড়িয়া্র শ্রী দুর্লভ সরকারের  স্ত্রী ধনী রানী সরকার নামে হিন্দু মহিলা এই চিড়ার উদ্ভাবন করেন   ধনী রানী ১৮৫০ সালে এক দরিদ্র হিন্দু পরিবারে জন্ম গ্রহন করেন । বিবাহের কয়েক বছর পর তার স্বামী শ্রী দুর্লভ সরকার দুই সন্তান রেখে মারা যান ফলে খুব কষ্টে দিনপাত করত ধনী রানী । দিনি একবার বলিয়াদী জমিদার বাড়ি এসেছিলেন সাহায্যের জন্য , তখন জমিদার সাহেব সাহায্য স্বরুপ কিছু ধান দিয়েছিলেন  । তাতেই খুশি ধনী রানী । বাড়িতে এসে চিন্তা করে সে এই ধান দিয়ে চিড়া কুটবে । যাতে সে সন্তান নিয়ে অনেক দিন আহার করতে পারে । সত্যি সত্যি ধনী রানী ঢেকিতে ধান ভানে ।তারপর আবার চিড়া কুটে । ধনী রানী রীতিমত বিস্মিত হয় যে , এই ধানে এত সুন্দর চিড়া হয় । যা খেতেও খুব সুস্বাদু । প্রতিবেশীরা তার বাড়িতে চিড়ার জন্য ভীড় জমাতো । সবাই জানতে চাইত কি জাতের ধান  এবং কোথায় পেল ধনী রানী এই ধান ? ধনী রানী তখন সব ধানের চিড়া না কুটে কিছু ধান বীজ বপনের জন্য রেখে দেন  । পরবর্তীতে ধনী রানী ধানের চারা লাগান এবং প্রতিবেশী সবাইকে ধানের বীজ দেন । এইভাবে পুরো বারবাড়িয়া গ্রামে ধনী চিড়ার বিস্তার লাভ করে । আনুমানিক ১৮৭৫ সালে প্রথম ধনী রানী এই চিড়া আবিস্কার করে বলে ধারনা করা হয় । যেহেতু চিড়ার জাতটি ধনী রানীর হাতে উদ্ভাবিত হয়েছে তাই ধনী রানীর নাম অনুসারে এই চিড়ার নাম রাখা হয়েছে ধনীর চিড়া । ধনী রানীর তৈরি এই চিড়াকে ধনীর চিড়া নামে ডাকে ।  পরবর্তীতে এই চিড়ার খ্যাতি সুদূর ইংল্যান্ডে ছড়িয়ে পড়েছিল । ১৮৮৬ সালে ইংলান্ডের  রাণী ভিক্টোরিয়ার জন্মদিনে তৎকালীন ঢাকার গর্ভনর কয়েক মন ধনীর চিড়া উপঢোকন হিসাবে রানীকে প্রদান করেন । রানী মুগ্ধ হন এবং ধনী চিড়ার প্রশংসা করেন । এখনও কালিয়াকৈরের ধনী চিড়ার সুখ্যাতি র‍য়েছে । কালিয়াকৈরের এই ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখার জন্য সকলের এগিয়ে আসা উচিত ।  

আরো দেখুন

কোন তথ্য খুঁজে পাওয়া যাইনি