Loading..

ম্যাগাজিন

২১ এপ্রিল, ২০২২ ০১:৫৯ অপরাহ্ণ

ইতিকাফ আদায়ের গুরুত্ব

ইতিকাফ আদায়ের গুরুত্ব

ডক্টর মোহাম্মদ ইদ্রিস

ইতিকাফের শাব্দিক অর্থ আবদ্ধ হওয়া, আটকা পড়া, থেমে যাওয়া। শরিয়তের পরিভাষায় ইতিকাফ হলো-পার্থিব কাজ-কারবার ও সংশ্রব ত্যাগ করে নিয়ত সহকারে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে নিজেকে মসজিদে আবদ্ধ করা বা অবস্থান করা। হযরত আয়েশা (রা) বলেন: নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রত্যেক রমযানের শেষ দশ দিন ইতেকাফ করতেন। এ আমল তাঁর মৃত্যু পর্যন্ত জারি থাকে। তাঁর ইন্তেকালের পরে তাঁর স্ত্রীগণ রমযানের শেষ দশ দিন ইতেকাফ করতেন। (বুখারি-মুসলিম) আনাস (রা) বলেন, ‘নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লা রমযানের শেষ দশ দিন ইতেকাফ করতেন। একবছর তিনি ইতেকাফ করতে পারেননি, তাই পরবর্তী বছর বিশ দিন ইতেকাফ করেন। (তিরমিযী)

ইতেকাফ একটি শ্রেষ্ঠ এবাদত, কারণ এতে আল্লাহর সাথে সম্পর্ক নিবির হয়, পার্থিব সকল কিছুর মায়াজাল ছিন্ন করে একমাত্র আল্লাহর ধ্যানেই অন্তরাত্মাকে নিবিষ্ট করা হয়। ইতেকাফের মাধ্যমে সাংসারিক কর্মব্যস্ততা ও প্রবৃত্তির কামনা-বাসনা উপেক্ষা করে নিজের চিন্তা, শক্তি, যোগ্যতা, চেষ্টা ও সময়কে সম্পূর্ণরূপে আল্লাহর এবাদতে নিয়োজিত করা হয়। আল্লাহর নৈকট্যলাভের এ তরবিয়ত পরবর্তীতেও ইতেকাফকারীকে আল্লাহর নাফরমানী থেকে বেঁচে থাকতে ও আল্লাহর সাথে সম্পর্ক মজবুত রাখতে সহায়তা করে। রমযানের শেষ দশ দিন ইতেকাফ সুন্নাতে মুয়াক্কাদয়ে কেফায়া। তাই এই সুন্নাত সজীব রাখার জন্য মহল্লার কিছু লোকের ইতেকাফের ব্যবস্থা করা সকল মুসলিমদের কর্তব্য। মহল্লার কেউই যদি ইতেকাফ না করে তবে সমগ্র মহল্লাবাসীই এ সুন্নাত তরকের জন্য গুনাহগার হবে। পুরুষের ইতেকাফের জন্য মসজিদ শর্ত হলেও মহিলারা তাদের ঘরের নির্জন স্থানে বসে ইতেকাফ করবেন। এর ফযীলত সম্পর্কে হাদিস শরিফে রয়েছে: ইবনে আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্ল¬াহু আলাইহি ওয়াসাল¬øাম বলেছেন, ইতেকাফকারী সকল পাপ থেকে মুক্ত হয়ে যায় এবং তার জন্য এত বেশি সওয়াব লিখিত হয় যেন সে সব ধরনের নেক কাজ রয়েছে। (মিশকাত) অন্য হাদীসে রয়েছে: যে ব্যক্তি রমযানের শেষ দশ দিন ইতেকাফ করল, সে যেন দুটি হজ্জ ও দুটি ওমরা আদায় করল। (বায়হাকী)

ইতিকাফ একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। এর ফযীলত ও মর্যাদা অতুলনীয়। কুরআন মাজীদে ইরশাদ হয়েছে- আমি ইবরাহীম ও ইসমাঈলকে আদেশ করলাম, তোমরা আমার ঘরকে [বায়তুল্লাহকে] পবিত্র কর তাওয়াফকারী, ইতিকাফকারী ও রুকু-সিজদাকারীদের জন্য। (সূরা বাকারা: ১২৫) উক্ত আয়াতে আল্লাহ তায়ালা তাঁর দুই জন নবীকে বায়তুল্লাহ পুন:নির্মাণের পর পরই ইতিকাফকারীদের জন্য তা পবিত্র করার নির্দেশ দিয়েছেন। এর দ্বারাই মূলত ইতিকাফের গুরুত্ব উপলব্ধি করা যায়। ইবনে আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ইতিকাফকারী সর্ব প্রকার পাপ হতে মুক্ত থাকে এবং অন্যরা বাইরে আমল করে যে নেকী লাভ করে সে ইতিকাফে থেকে বাইরের আমলগুলো না করেও সেই পরিমাণ নেকী লাভ করে। [ইবনে মাজাহ]

আরো দেখুন

কোন তথ্য খুঁজে পাওয়া যাইনি