Loading..

ম্যাগাজিন

২৩ এপ্রিল, ২০২২ ১১:৩১ অপরাহ্ণ

ঈদের আনন্দ সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে সাদাক্বাতুল ফিতর

ঈদের আনন্দ সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে সাদাক্বাতুল ফিতর

ডক্টর মোহাম্মদ ইদ্রিস

পবিত্র মাহে রমযানের ইবাদতের মধ্যে সাদক্বাতুল ফিতর আদায় করা অন্যতম একটি ইবাদত। রমযানের সিয়াম সাধনা শেষে আসে পবিত্র ঈদুল ফিতর। ঈদের আনন্দ ধনী-গরিব সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে এবং এ আনন্দে যেন মুসলিম জাতির প্রতিটি সদস্য শরিক হতে পারে এ জন্য ওয়াজিব করা হয়েছে সাদক্বাতুল ফিতর। রমযানের রোজার ত্রুটি-বিচ্যুতি পরিপূর্ণতার জন্যই আবশ্যক করা হয়েছে এটি। হজরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সাঃ) সিয়াম পালনকারীর জন্য সাদক্বাতুল ফিতর আদায় অপরিহার্য করে দিয়েছেন, যা সিয়াম পালনকারীর অনর্থক, অশ্লীল কথা ও কাজ পরিশুদ্ধকারী এবং অভাবী মানুষের জন্য আহারের ব্যবস্থা। যে ব্যক্তি ঈদের সালাতের আগে এটা আদায় করবে, তা সাদক্বাতুল ফিতর হিসেবে গ্রহণযোগ্য হবে। আর যে ঈদের সালাতের পর আদায় করবে তা অপরাপর (নফল) সাদক্বা হিসেবে গৃহীত হবে। (আবু দাউদ) ইমাম ওয়াকি ইবনুল জাররাহ বলেন, রমযান মাসের যাকাতুল ফিতর নামাজের সিজদায়ে সাহুর সমতুল্য। অর্থাৎ নামাজে ত্রুটি হলে যেমন সিজদায়ে সাহু দিলে এটা পূর্ণ হয়ে যায়, তেমনি সিয়ামের মধ্যে ত্রুটি হলে সাদাক্বাতুল ফিতর দিয়ে এর প্রতিকার হয়। তাছাড়া ধনী-গরিব উভয়ে যেন অন্তত ঈদের দিন উত্তম পোশাক ও ভালমানের খাবার খেতে পারে, ঈদের আনন্দে সমভাবে অংশগ্রহণ করতে পারে এ জন্যই ফিতরার ব্যবস্থা।

সাদাক্বাতুল ফিতর অর্থ: সাদক্বা শব্দের অর্থ দান আর ফিতর শব্দের অপর অর্থ হলো সৃষ্টি। শব্দটি কুরআনুল কারীমের বিভিন্ন জায়গায় উল্লেখ রয়েছে। যেমন পুরোহিত পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেও আল্ল¬াহপাকের অনুগ্রহে হযরত ইবরাহিম (আঃ) ছিলেন ব্যতিক্রম। তিনি একে একে তারকা, চন্দ্র ও সূর্য সবকিছু অস্বীকার করে সকল সৃষ্টির স্রষ্টা ও মালিক আল্ল¬াহপাককে উপলদ্ধি করে ঘোষণা প্রদান করলেন: আমি সবকিছু থেকে মুখ  ফিরিয়ে নিয়ে একনিষ্ঠভাবে আল্ল¬াহর আনুগত্যে নিজেকে নিয়োজিত করলাম, যিনি আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন এবং আমি মুশরিকদের অন্তর্ভূক্ত নই। (সূরা আল আনআম: ৭৯) এখানে ফাতারা অর্থ বলা হয়েছে সৃষ্টি করা।

ঈদ-উল-ফিতরকে বলা হয় ফিতরা প্রদানের ঈদ। ঈদ-উল-ফিতর অর্থ যদি সৃষ্টির খূশী হয়, তা হলেও বলা যেতে পারে যে, দীর্ঘ একমাস সিয়াম সাধনার মাধ্যমে কঠোর আত্মসংযম, আত্মশুদ্ধি, দান-সাদাকাহ সহমর্মিতা তথা তওবা ইস্তেগফারের অনুশীলন ও প্রশিক্ষণ শেষে নতুনভাবে মুসলমানদের জীবন প্রবাহ শুরু হয়। মানুষ আল্লাহর বিধান পালন ও প্রতিষ্ঠার জন্য নতুন উদ্যমে মেতে ওঠে। এ যেন ধ্বংশ তথা পতনের পরিবর্তে সমাজ, সভ্যতা ও সংস্কৃতির স্বচ্ছ সৃষ্টির দৃঢ় অঙ্গীকারে উজ্জীবিত হওয়া। এ অর্থেও এ ঈদকে ঈদ-উল-ফিতর বলা যথার্থ হতে পারে। অথাৎ ঈদের আনন্দ ধনী-গরিব সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে এবং ভালবাসা ও সহমর্মিতা জানাতে সামর্থবানরা হক্ব হিসাবে অসহায় মানুষকে যে খাদ্যসামগ্রী বা সম্পদ প্রদান করে তাকে সাদক্বাতুল ফিতর বলা হয়।

আরো দেখুন

কোন তথ্য খুঁজে পাওয়া যাইনি