Loading..

প্রকাশনা

১৪ মে, ২০২২ ০৬:৫৯ পূর্বাহ্ণ

শিশুদের তথা শিক্ষার্থীদের পরিপূর্ণ মানসিক বিকাশের ক্ষেত্রে উৎসাহ-উদ্দীপনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ



 

যে কোনো কাজে উৎসাহ-উদ্দীপনা সে কাজের প্রতি আগ্রহ কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেয়। শিশুদের তথা শিক্ষার্থীদের  পরিপূর্ণ মানসিক বিকাশের ক্ষেত্রে সাহ-উদ্দীপনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

আমরা আশা করি,  উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়েই শিশুরা একদিন অনেকদূর পৌঁছে যাবে

এগিয়ে যাওয়ার অপর নাম উৎসাহ। কিন্তু আমাদের সমাজে কিছু ব্যক্তি আছে, যাদের ভেতর উৎসাহ দেওয়ার প্রবণতা না থাকলেও এগিয়ে যাওয়ার পথে বাধা দেয়ার প্রবণতা প্রবল। তারা কোনো ব্যক্তির উন্নতি দেখলে তার সমালোচনায় মুখর হয়ে ওঠে। তাদের কাজ হয়ে দাঁড়ায় কোথায়, কার, কী ভুল হয়েছে তার বিশ্লেষণ করা। কিন্তু সেই ভুলের সমাধান কেউ দেয় না। মানুষকে ভালো কাজে এগিয়ে যাওয়ার পথে উৎসাহ দিতে না পারলেও মন্দ কাজে উৎসাহ দেয়ার মতো কিছু মানুষ আমাদের সমাজে বসবাস করে এখনও।

কবি বলেছেন, ‘পাছে লোকে কিছু বলে’, অর্থাৎ অন্যের কথায় কান না দিয়ে নিজের লক্ষ্যকে বাস্তবায়ন করতে হবে। আমাদের নিজেদের স্থানে নিজেদের পৌঁছাতে হবে। কে কী বলছে সেটা শুনে সময় নষ্ট করার প্রয়োজন নেই। অনেক সময় সামান্য উৎসাহের অভাবে ঝরে যায় অনেক প্রতিভা। তারা হয়তো একদিন দেশের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকত। কিন্তু সেই উৎসাহ দেওয়ার মতো মানুষ ছিল না তাদের।

উৎসাহটা সবসময় বড়দের দিতে হয়। আজকের প্রজন্ম উৎসাহ পাবে বিগত প্রজন্ম থেকে। আজকের প্রজন্ম থেকে উৎসাহ পাবে আগামী প্রজন্ম। একজন বন্ধু অন্য বন্ধুকে উৎসাহ দিতে পারে। মা-বাবার পর বড় ভাই তার ছোট ভাইকে উৎসাহ দিতে পারে। শিক্ষকরা উৎসাহ দিতে পারে শিক্ষার্থীদের। সমাজের মুরব্বিরা যুবকদের এগিয়ে যেতে উৎসাহ দিতে পারে। উৎসাহ দিলে কারও কোনো কষ্ট কিংবা ক্ষতি হয় না। তবু কেন আমরা উৎসাহ দিতে কার্পণ্য করি? আমরা উৎসাহ দিতে না পারি, কিন্তু সমালোচনা করব কেন? সমালোচনা করা তাদেরই সাঝে, যাদের উৎসাহ দেওয়ার প্রবণতা আছে।

আমরা যদি যার যার বিবেকের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে নিজেকে প্রশ্ন করি, তবে হয়তো আমাদের মধ্য থেকে হিংসা আর অহংকার কিছুটা হলেও কমে যাবে। আমাদের বিচার আমাদেরই করতে হবে। কেউ নিজে যদি সৎ হয়ে থাকে, তাহলে তার চেয়ে বড় বিচারক আর কেউ হতে পারে না। এ ধরনের অপরাধ শুধরানোর দায়িত্বও তাদেরই। কিন্তু আমাদের ভেতরে এখনও সেই বোধটুকু কাজ করে না। আমরা মানুষের মনোবল ভেঙে দিতে কার্পণ্য করি না। আমরা ‘না’ বলতে খুব বেশি পছন্দ করি, কিন্তু ‘হ্যাঁ’ বলাটা যেন আমাদের জন্য কষ্টের বিষয়। আমাদের মধ্যে আধুনিকতা এখনও আসেনি। আগে নিজেদের মন-মানসিকতা পরিবর্তন করতে হবে, তবেই আমরা আমাদের দেশ ও সমাজকে পাব আধুনিকভাবে। আমরা উৎসাহ-উদ্দীপনা-প্রেরণামূলক কথা এখন কমই শুনি। আমাদের লেখালেখিতেও এখন উৎসাহ-উদ্দীপনা-প্রেরণামূলক কিছু থাকে না। আমরা শুধু ভুলটা তুলে ধরি, কিন্তু সেই ভুলের সমাধান কী হবে সেটা তুলে ধরি না। এটাই কি আমাদের শিক্ষা? একজন মানুষ হয়ে অন্য মানুষের মনোবল ভেঙে দেয়াটা কখনই মনুষ্যত্বের পর্যায়ে পড়ে না। তাই আমাদের উচিত উৎসাহ আর প্রেরণা দেওয়ার প্রবণতা বাড়ানো। নিতান্তই যদি উৎসাহ দিতে না পারি, তবে কারোও মনোবল  যেন ভেঙে না দিই, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

 


 

আরো দেখুন

কোন তথ্য খুঁজে পাওয়া যাইনি