Loading..

খবর-দার

১৫ মে, ২০২২ ০৮:৩২ অপরাহ্ণ

কেন পড়ব পরিবেশ স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা?

বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার অনুমান অনুযায়ী, পৃথিবীর প্রায় ২৫ শতাংশ মৃত্যুর কারণ পরিবেশগত। বর্তমান সময়ে পরিবেশদূষণের ফলে মানুষ নানা ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছে। এই সমস্যা শুধু বাংলাদেশের নয়, এটি একটি বৈশ্বিক সমস্যা। এই দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য দরকার দক্ষ মানব সম্পদ। এই পরিপ্রেক্ষিতে বারডেমের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব হেলথ সায়েন্সেসের ডিপার্টমেন্ট অব অকুপেশনাল অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল হেলথ চালু করেছে এনভায়রনমেন্টাল হেলথ অ্যান্ড সেফটি বা পরিবেশ স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা বিষয়ে স্নাতক। এই বিষয়ের পাঠ্যসূচিতে পরিবেশদূষণ কী কারণে হয়, বিষাক্ত উপাদান কীভাবে আমাদের পরিবেশের সঙ্গে মিশে স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে, কীভাবে এই দূষণের প্রভাবগুলো শনাক্ত, প্রতিরোধ এবং নিয়ন্ত্রণ করা যায়—এসব ব্যাপারে সম্যক জ্ঞান দেওয়া হয়। দুর্যোগ মোকাবিলা পদ্ধতিগুলো গুরুত্বের সঙ্গে পড়ানো হয়। জলবায়ু পরিবর্তনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের পাশাপাশি জীববৈচিত্র্য রক্ষা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, নগর স্বাস্থ্য ও পানিদূষণ, বায়ুদূষণ, মাটিদূষণ আরও অন্যান্য বিষয় এর পাঠ্যতালিকাভুক্ত।

ভবিষ্যৎ কী?

পরিবেশগত স্বাস্থ্য এবং এর সুরক্ষা যেহেতু একটি সর্বজনীন ব্যাপার, সব মানুষের এখানে অংশগ্রহণ প্রয়োজন। পরিবেশ স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা একজন ছাত্রের জীবনে বিশেষ গুরুত্ব রাখতে পারে। পরিবেশের সঙ্গে মানুষের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা ওতপ্রোতভাবে সম্পৃক্ত। পরিবেশগত জ্ঞান ব্যবহার করে মানুষ তার জীবনযাপনের মান আরও উন্নত করতে পারে এবং রোগ প্রতিরোধ করতে পারে। অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের ফলে মানুষের জন্য পরিষ্কার পানি, টিকা ব্যবহারের অভাবে বিশ্বজুড়ে জনস্বাস্থ্য আজ হুমকির মুখে। পৃথিবীর সবার টেকসই উন্নয়নের জন্য পরিবেশের কাঠামো ও স্বাস্থ্য নিরাপত্তা দরকার।

একটি দেশের অর্থনীতির উন্নতির সঙ্গে পরিবেশগত উন্নতি প্রয়োজন। সারা পৃথিবী এখন পরিবেশকে দূষণমুক্ত করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। তাই আমাদের পরিবেশ স্বাস্থ্য ও তার নিরাপত্তা খুবই জরুরি। স্নাতক পর্যায়ে পরিবেশ স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা পড়ে পরবর্তী সময়ে স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি করার সুযোগ আছে।

ক্যারিয়ার কোথায়?

পরিবেশ স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা বিষয়ে পড়াশোনা করে কেউ যদি শিক্ষকতা করতে চান, তাহলে পিএইচডি করা যেতে পারে। এ ছাড়া শিক্ষকতার পাশাপাশি গবেষণাও করতে পারেন। দেশ–বিদেশে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা আছে, যেমন বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা, জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা ইউএসএআইডি ইত্যাদি। বিশ্বের যেকোনো অনুন্নত ও উন্নয়নশীল দেশে চাকরি করতে পারেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশগুলোতে এর প্রয়োজন সবচেয়ে বেশি। অসংক্রামক রোগের সঙ্গে পরিবেশদূষণের সম্পর্ক আবিষ্কারের ফলে অসংক্রামক রোগ নিয়ে কাজেও এই বিষয়ের ডিগ্রিধারীরা অংশগ্রহণের সুযোগ পাচ্ছেন। সরকার বিভিন্ন নীতিনির্ধারণের মাধ্যমে পরিবেশ উন্নয়ন এবং দূষণমুক্ত করার জন্য বিষয়টিকে মূলধারায় আনার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য প্রতিটি শিল্পপ্রতিষ্ঠানে এবং অফিসে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে পরিবেশ কর্মকর্তা (এনভায়রনমেন্ট অফিসার) এবং নিরাপত্তা কর্মকর্তা (সেফটি অফিসার)। বিশ্বের পরিস্থিতি অনুযায়ী এখন গুরুত্বসহকারে পরিবেশ স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা (এনভায়রনমেন্টাল হেলথ অ্যান্ড সেফটি) বিষয়ে পড়াশোনার প্রয়োজনীয়তা তৈরি হয়েছে। দেশি–বিদেশি অনেক এনজিও প্রকল্পে যাঁরা এ নিয়ে কাজ করছেন, তাঁদের সঙ্গে আমাদের ছাত্রছাত্রীরা যোগ দিতে পারে।

কারা পড়বে?

মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে যারা বিজ্ঞান নিয়ে পড়েছে, তারা এই বিষয়ে স্নাতক শ্রেণিতে ভর্তি হতে পারবে। এ ছাড়া যারা বিজ্ঞান বিভাগের কোনো বিষয়ে ডিপ্লোমা করেছে, তাদেরও সুযোগ আছে এই বিষয়ে পড়ার। পরিবেশদূষণ থেকে কীভাবে নিজেকে আর সমাজকে বাঁচানো যাবে, সেই বিষয়ে সবার জ্ঞান থাকা আবশ্যক। কারণ, এই বিষয়ে জ্ঞান থাকলে স্বাস্থ্যকর সমাজ গড়ার প্রাথমিক জ্ঞান পাওয়া যাবে।