Loading..

ম্যাগাজিন

০৩ জুলাই, ২০২২ ১০:২২ পূর্বাহ্ণ

ইমেইল ও মেসেজে মিসকমিউনিকেশন বা ভুলবোঝাবুঝি এড়ানোর উপায়

ইমেইল মেসেজে মিসকমিউনিকেশন বা ভুলবোঝাবুঝি এড়ানোর উপায়

অনেক সময় দেখা যায় আমরা মেসেজ বা ইমেইলে যা লিখছি প্রাপক তার ভুল অর্থ করছে। সব সময় যে প্রাপকই ভুল অর্থ করে এরকম নাও হতে পারে। হতে পারে, আমাদের মেসেজে অস্পষ্টতা থাকে, মেসেজ একই সঙ্গে একাধিক উদ্দেশ্য বা অর্থ ধারণ করে। ধরনের সমস্যা কাটানোর জন্য কমিউনিকেশনের সময় অতিরিক্ত সচেতন হওয়ার দরকার পড়ে।

মিসকমিউনিকেশন সহজ এবং স্পষ্ট মেসেজের মাধ্যমে এড়ানো সম্ভব। সহজ বাক্যের মেসেজ বুঝতে সহজ হয়। বাক্যের আগে-পরে অপ্রয়োজনীয় ফিলার বা শব্দ ব্যবহার বাক্যের মধ্যে অস্পষ্টতা নিয়ে আসে। অনেকেই অপ্রয়োজনেএকধরনের” (কাইন্ড অফ), “কিছুটা” (সর্ট অফ), “হয়তো” (মে বি) ইত্যাদির ব্যবহার করে বাক্যে।

***

মেসেজ স্পষ্ট করতে ৫টি গুরুত্বপূর্ণ টিপস

যে মেসেজটি লিখেছেন তা পাঠানোর আগে একাধিক বার পড়ুন। প্রুফরিডিং শেষ হলে দেখুন যা বোঝাতে চাচ্ছেন মেসেজ তার বাইরের কিছু বোঝাচ্ছে কিনা। এছাড়াও নিচের ব্যাপারগুলো মাথায় রাখুন:
.

#
. জটিল কিছুকে সহজ করুন, সহজকে আরো সহজ

যতটুকু সম্ভব সরল বাক্যে লিখুন। যত সহজ বাক্য শব্দ ব্যবহার করবেন, প্রাপকের দিক থেকে আপনার মেসেজ ঠিকমত বোঝার সম্ভাবনা ততই বাড়বে।
.

#
. ভালো শ্রোতা হিসেবে শুরু করুন

ভালো কমিউনিকেশনের গুরুত্বপূর্ণ শর্ত ভালো শ্রোতা হওয়া। আপনি ভালো মতো না শুনলে সঠিক মেসেজ দিতে পারবেন না, কেননা না শুনলে আপনি জানবেন না আসলে আপনার কাছে কী জানতে চাওয়া হয়েছে।
.

#
. জার্গন ব্যবহার করবেন না

এমন কোনো টার্ম বা শব্দ ব্যবহার করবেন না যাতে বেশির ভাগ মানুষ অনভ্যস্ত। জার্গন কিংবা টেকনিক্যাল টার্মের সাথে অপরিচিত ব্যক্তির পক্ষে আপনার মেসেজের বক্তব্য বোঝা তখন কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।
.

#
. সংক্ষিপ্ত সুনির্দিষ্ট হন

আপনি লিখছেন কিংবা বলছেন, সব জায়গায় সংক্ষিপ্ত সুনির্দিষ্ট হন। অপ্রয়োজনীয় শব্দ, ফ্রেজ ব্যবহার করবেন না।
.

#
. বানান ভুল করছেন কিনা দেখুন

বানান ভুলকে ছোট করে দেখবেন না। আপনার চিঠিতে কিংবা ইমেইলে বানান ভুল থাকলে সেটা কখনোই ভালো ইম্প্রেশন তৈরি করবে না। তাই বানান ভুল করছেন কিনা লক্ষ্য রাখুন।

***

দক্ষতার জন্য সাত সি (7C) নিশ্চিত করুন

আপনি যদি চান আপনার মেসেজ ভুল ভাবে না পৌঁছাক / যাক, তাহলে মৌখিক কিংবা লিখিত সবধরনের কমিউনিকেশনে নিচের সাত সি (7C) রপ্ত করুন:
.

# Clarity
বা স্পষ্টতা

স্পষ্টতা মেসেজকে বুঝতে সাহাজ্য করে। মেসেজ একটা নির্দিষ্ট পয়েন্টে রাখেন, একসাথে অনেক কিছু বলবেন না। আপনার মেসেজ স্পষ্ট হবে কি না সেটা আপনার শব্দ বাক্যগঠনই ঠিক করে দেয়। পরিচিত শব্দ ব্যবহার করুন, যেমন ডোমিসাইল ব্যবহার না করে হোম ব্যবহার করেন।
.

# Conciseness
বা সংক্ষিপ্ততা

যে মেসেজে অপ্রয়োজনীয় শব্দ ব্যবহার করা হয় না এবং সবচেয়ে কম শব্দ ব্যবহার করা হয় সেসবই কনসাইস কিংবা সংক্ষিপ্ত মেসেজ। সংক্ষিপ্ত মেসেজের সুবিধা হচ্ছে এতে প্রয়োজনীয় জায়গাটুকুই শুধু সবটুকু মনোযোগ পায়। তাতে প্রেরক এবং প্রাপক দুজনেরই সময় বাঁচে।
.

Concreteness
বা যথার্থতা

কংক্রিটনেস কিংবা যথার্থতা আপনার মেসেজকে শক্তিশালী করে। আপনি যদি চান আপনার মেসেজ ঠিক অর্থ নিয়ে পৌঁছাক, অস্পষ্ট না শোনাক তাহলে সংশ্লিষ্ট তথ্য এবং উপাত্ত (ফ্যাক্ট অ্যান্ড ফিগার) দিয়ে আপনার মেসেজকে শক্তিশালী করতে হবে। যেটা আপনার বার্তাকে অর্থপূর্ণ এবং ইফেক্টিভ করতে পারে।
.

Correctness
বা সঠিকতা

মেসেজের অর্থ ঠিক রাখতে চাইলে ব্যাকরণগত ভুল বা বানান ভুল করা যাবে না। এর সাথে সাথে মেসেজে ব্যবহৃত তথ্য উপাত্তের সঠিকতা নিশ্চিত করতে হবে। ভাষার কারেক্টনেস বা সঠিকতা কমিউনিকেশনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
.

Coherence
বা সঙ্গতি

বক্তব্যে অসঙ্গতি থাকলে কমিউনিকেশনে ভুলবোঝাবুঝি তৈরি হয়। প্রাপক তখনই মেসেজ সবটুকু বুঝতে পারে যখন মেসেজ একটা পয়েন্টে ফোকাসড থাকে এবং এক প্রসঙ্গ অসম্পূর্ণ রেখে অহেতুক অন্য প্রসঙ্গে চলে যায় না।
যেমন ধরুন, আপনাকে একজন একটা ইন্ডাস্ট্রি রিপোর্ট মেইল করেছেন। আপনি সেই মেইলের উত্তরে জানাবেন যে আপনি মেইলটা পেয়েছেন এবং আপনার আর একজন কলিগ রিপোর্ট নিয়ে কিছু ফিডব্যাক দিবেন।

আপনি লিখলেন, "আপনার পাঠানো ইন্ডাস্ট্রি রিপোর্টটা পেয়েছি, ধন্যবাদ। বিষয়ে জাফর সাহেব আপনাকে তার ফিডব্যাক দিবেন, জাফর সাহেব জানতে চাচ্ছিলেন আপনি আমাদের অ্যানুয়াল মিটিংয়ে কালকে আসছেন কি না। আমরা ওখানে আমাদের বাজেট নিয়ে কথা বলবো।"

এখানে ইন্ডাস্ট্রি রিপোর্ট থেকে হঠাৎ করে অ্যানুয়াল মিটিং চলে আসলো! কমিউনিকেশনে সঙ্গতি থাকলো না।

কিন্তু আপনি যদি মেইলে উত্তরে লেখেন, "ইন্ডাস্ট্রি রিপোর্টটা পাঠানোর জন্য ধন্যবাদ। রিপোর্টের ফিডব্যাক বিস্তারিত জানিয়ে জাফর সাহেব আপনাকে মেইল করবেনতখন যোগাযোগ সঙ্গতিপূর্ণ হচ্ছে।
.

Completeness
বা সম্পূর্ণতা

মেসেজের সম্পূর্ণতা কেবল কমিউনিকেশনকে শক্তিশালীই করে না, এটা কমিউনিকেশন বাড়ায়ও। আপনাকে এজন্য যা করতে হবে, যা নিয়ে কথা বলছেন তাতেকে” (Who), “কেন” (Why), “কী” (What), “কোথায়” (Where), “কীভাবে” (How) এসব প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে।
.

Courtesy
বা ভদ্রতা

আপনার কার্টেসী বা ভদ্রতা আপনার মেসজ সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণা আনে। যদি প্রাপক মনে করেন যিনি তাকে লিখছেন কিংবা বলছেন তিনি খুব ভদ্রতার সাথে তা করছেন, তখন মেসেজ বুঝতে আন্তরিক হবেন।

***

আপনি যখন ঠিকঠাকভাবে মেসেজ পৌঁছাতে পারলেন তার অর্থ হচ্ছে আপনি আপনার আইডিয়ার সবটুকু ঠিকমত প্রকাশ করতে পারলেন। খুব ছোটখাট ব্যাপার আপনার মেসেজকে ভুল বোঝাবুঝি থেকে দূরে রাখতে পারে। এছাড়াও আপনার মেসেজের অডিয়েন্সের ব্যাপারে আপনাকে সচেতন থাকতে হবে।
যদিও কমিউনিকেশন একটা বহুমাত্রিক বিষয়, এটাকে সহজ কোনো নিয়ম নীতিতে বাধা যায় না, কিন্তু উপরের বিষয়গুলি আপনার কমিউনিকেশনের অনেক সমস্যাই সমাধান করতে পারবে।

আপনার নিজস্ব কোনো পদ্ধতি আছে কি যা কমিউনিকেশনের ক্ষেত্রে ভুল বোঝার হাত থেকে আপনাকে রক্ষা করে?

সৌঃ সি বি 

আরো দেখুন

কোন তথ্য খুঁজে পাওয়া যাইনি