Loading..

ম্যাগাজিন

০৬ জুলাই, ২০২২ ০৯:২৭ অপরাহ্ণ

শেখার জন্য স্পিচ রিকগনিশন প্রযুক্তির ব্যবহার

শেখার জন্য স্পিচ রিকগনিশন প্রযুক্তির ব্যবহার

স্পিচ রিকগনিশন বলতে মানুষের বলা কথাকে লেখায় রূপান্তর করার প্রযুক্তিকে বোঝায়। একে ভয়েস রিকগনিশন বা কণ্ঠ শনাক্তকরণ প্রযুক্তিও বলা হয়। স্পিচ রিকগনাইজিং প্রযুক্তিতে মানুষ এবং কম্পিউটারের মধ্যে সংযোগের একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে মানুষের কথা বা নির্দেশনা।

প্রতিবন্ধী অথবা শেখার অক্ষমতা আছে যেসব শিক্ষার্থীর, তাদের পড়াশোনার জন্য প্রযুক্তি বেশ ভালো কাজে দেয়। যদিও শ্রেণিকক্ষে এর ব্যবহার এখন পর্যন্ত পরিকল্পনা করে শুরু হয়নি। তবে হয়তো সেই দিন খুব বেশি দূরে নেই, যখন শ্রেণিকক্ষে এর ব্যবহার শুরু হবে।

সাধারণ মানুষের জন্যেও এই প্রোগ্রামগুলির ব্যবহার আছে। লেখকদের লেখায় গতি আনতে স্পিচ টু টেক্সট প্রোগ্রাম অনেক কাজে দেয়। আর অন্ধদের মতো শারীরিক সমস্যার কারণে যারা কম্পিউটার ব্যবহার করতে পারেন না, তাদেরকে কম্পিউটার ব্যবহারের সুযোগ করে দেয় এই প্রোগ্রাম।

এছাড়া বিদেশি ভাষা শেখা সহ নানা ধরনের কাজে নতুন সব পণ্য নিয়ে আসছে স্পিচ রিকগনিশন প্রযুক্তি।

কম্পিউটার ব্যবহার করতে অসুবিধায় পড়েন, এমন শিক্ষার্থীদের কম্পিউটার ব্যবহারের সুবিধা করে দিচ্ছে এই প্রোগ্রাম। ফলে তাদের লেখার সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে, লেখার মান ভালো হচ্ছে আর পড়াশোনার স্বাধীনতা বাড়ছে।

অন্যদিকে লেখা শেষ না করার উদ্বেগ কমে যাচ্ছে। সর্বোপরি শিক্ষার্থীদের পড়া এবং লেখার দক্ষতা বাড়ছে এই প্রোগ্রাম ব্যবহারের ফলে। এখানে বিস্তারিত বলা হলো, কীভাবে এই প্রোগ্রাম শিক্ষার্থীদের সাহায্য করে।

.

. কম্পিউটার ব্যবহারের সুযোগ বৃদ্ধি

মোটর স্কিল, অর্থাৎ হাত-পা এর কর্মক্ষমতা কম, দৃষ্টিশক্তি দুর্বল বা নেই, বা অন্য কোনো শারীরিক সীমাবদ্ধতার কারণে সাধারণ মানুষের মতো কি-বোর্ড মাউস দিয়ে কম্পিউটার ব্যবহার করতে পারে না অনেক শিক্ষার্থী। তাদের জন্য এই স্পিচ রিকগনিশন প্রযুক্তি অনেক সহায়ক। এতে যে তাদের পড়াশোনার গতি অনেক বেড়ে যায় শুধু তাই না, ক্লাসরুমে তাদের অংশগ্রহণও অনেক বাড়ে।

.

. লেখার সংখ্যা বৃদ্ধি

অনেক শিক্ষার্থী আছে, যাদের শেখার ক্ষমতা বাকিদের চেয়ে কম। তাদের জন্য এই প্রোগ্রাম বেশ কাজে দেয়। অনেক হাই স্কুল শিক্ষার্থীদের দেখা গেছে যে, তারা এইভাবে মুখে বলার মাধ্যমে পরীক্ষা বা ক্লাসের কাজ করতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে।

এমনও দেখা গেছে, এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে যে সব পরীক্ষা দেয়া হয়েছে, সেখানে শিক্ষার্থীদের লেখার মান অপেক্ষাকৃত ভালো হয়েছে।

.

. ভালো লেখার কৌশল

লেখার কলাকৌশল রপ্ত করতে অনেক শিক্ষার্থীই সমস্যায় পড়ে। স্পিচ রিকগনিশন এবং ওয়ার্ড প্রসেসর (এমএস ওয়ার্ড-এর মতো সফটওয়্যার) ব্যবহারে করে তারা এই সমস্যা থেকে কিছুটা হলেও পরিত্রাণ পেতে পারে।

কেননা স্পিচ রিকগনিশন টুলের সাহায্যে শিক্ষার্থী অনেক দ্রুতগতিতে লিখতে পারে। নিজ হাতে লিখতে গেলে চিন্তায় অনেক সময় বাধা পড়ে। আবার সঠিক বানান বিরাম চিহ্ন নিয়ে চিন্তা করতে গিয়েও লেখার গতি নষ্ট হয়ে যায়। এসব কারণে লেখা ছোট হয়ে যায়। আবার লেখার মূল বক্তব্য হারিয়ে যায়, বা তা পাঠকের বুঝতে কষ্ট হয়।

.

. লেখা নিয়ে দুশ্চিন্তা কমায়

ইংরেজি ভাষা শিখছে, এমন শিক্ষার্থীদের অথবা যারা দ্বিতীয় ভাষা শিখছে, তাদের জন্য স্পিচ রিকগনিশন প্রোগ্রাম উচ্চারণ প্র্যাকটিস করার একটা ভালো জায়গা।

শিক্ষার্থীরা এখানে ভুল করার ভয় ছাড়াই অপরিচিত কোনো শব্দের উচ্চারণ বার বার প্র্যাকটিস করতে পারে। এই কারণে বিদেশী ভাষা শিক্ষার অনেক সফটওয়্যারে আজকাল স্পিচ রিকগনিশন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়।

.

. পড়ার এবং লেখার দক্ষতায় উন্নতি

গবেষণায় দেখা গেছে, পড়তে এবং লিখতে যে সকল শিক্ষার্থীর অসুবিধা হয়, স্পিচ রিকগনিশন টুল তাদের বিশেষ উপকারে আসে।

এই প্রোগ্রামে শিক্ষার্থীরা পড়ে শোনানোর সময় স্ক্রিনে সেই লেখা দেখতে পায়। সময় তারা শব্দ আর ধ্বনির সম্পর্কের মতো উচ্চারণের গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয় সম্বন্ধে ধারণা পায়। পড়ে শোনানোর সময় স্ক্রিনে লেখা দেখে শিক্ষার্থীরা বুঝতে পারে কোন শব্দের কী উচ্চারণ। এই বিষয়টা শিক্ষার্থীদের অনেক কাজে লাগে।

.

স্পিচ রিকগনিশন প্রযুক্তির আরো একটা ভালো দিক হলো, এখানকার ভুল সংশোধন করার প্রক্রিয়া। কোনো স্পিচ রিকগনিশন প্রোগ্রামই সম্পূর্ণ নির্ভুল হতে পারে না। এখানে ব্যবহারকারীর দায়িত্ব প্রতিটা শব্দ ঠিকমতো লেখা হয়েছে কিনা, তা চেক করার। কোনো ভুল দেখা দিলে শিক্ষার্থীদের অবশ্যই ভুল শব্দের জায়গায় ঠিক শব্দটা খুঁজে সেখানে বসাতে হবে। ফলে তাকে আবার পুরো লেখা চেক করতে হয়। কোথায় ভুল হয়েছে, তা মনোযোগ দিয়ে দেখতে হয়।

আবার শুনতে একই রকম যেসব শব্দ আছে, তাদের মধ্যে কোনটা দিতে হবে, কোন শব্দের অর্থ বেশি প্রযোজ্য, এসব সিদ্ধান্ত নিতে হয়। এভাবে একই ধরনের শব্দের মধ্যে পার্থক্য বোঝার অভ্যাস তৈরি হওয়ার ফলে তাদের লেখা এবং পড়ার দক্ষতায় বিশেষ উন্নতি ঘটে।

সৌঃ সি বি

আরো দেখুন

কোন তথ্য খুঁজে পাওয়া যাইনি