সহকারী শিক্ষক
০৬ জুলাই, ২০২২ ০৯:৪৪ অপরাহ্ণ
ইন্ট্রানেট-এর যে ৮টি আধুনিক সুবিধা আপনার প্রতিষ্ঠানকে বদলে দেবে
ইন্ট্রানেট-এর যে ৮টি আধুনিক সুবিধা আপনার প্রতিষ্ঠানকে বদলে দেবে
ইন্ট্রানেট হচ্ছে এক ধরনের প্রাইভেট নেটওয়ার্ক। সাধারণত কোনো কোম্পানি নিজের কর্মীদের মধ্যে নিরাপদে তথ্য আদান-প্রদান এবং প্রিন্টার বা সার্ভারের মতো বিভিন্ন রিসোর্স শেয়ার করতে ইন্ট্রানেট ব্যবহার করে। এছাড়া কোনো গ্রুপ বা টেলিকনফারেন্সে কাজ করার সময়েও ইন্ট্রানেট ব্যবহার করা হয়। ইন্ট্রানেটে সবচেয়ে বেশি জোর দেয়া হয় প্রতিষ্ঠানে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগের ওপর।
আধুনিক ইন্ট্রানেট আমাদের কী কী সুবিধা দিতে পারে এবং এটি ব্যবহার করে প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম কীভাবে আরো দক্ষ করে তোলা যায়,
তার বিবরণ থাকছে নিচে।
.
# একটা আধুনিক ইন্ট্রানেট কেমন হয়?
আধুনিক ইন্ট্রানেট ব্যবহারের অনেক সুবিধা আছে। অফিসের কাজে পুরনো আমলের সফটওয়্যারের বদলে এখন অ্যাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। অ্যাপ দিয়ে নানান ধরনের কাজ করা যায়। প্রতিষ্ঠানের সামনের সারিতে কাজ করা কর্মীদের যেমন এটা কাজে লাগে, তেমন ডেস্কে বসা কর্মীরাও এখন অ্যাপ ব্যবহার করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছেন।
ইন্ট্রানেটে যুক্ত হওয়াও এখন আগের চেয়ে অনেক সহজ হয়েছে। আর এতে নিরাপত্তা ব্যবস্থাও আরো জোরদার করা হয়েছে।
ইন্ট্রানেটে প্রতিষ্ঠানের নির্দিষ্ট দায়িত্বে থাকা কর্মীরা কেবল সেই সব জিনিসই দেখতে পারে,
যেগুলি দেখার অনুমতি তাদের দেয়া হয়। প্রত্যেক কর্মীর জন্য আলাদা হোম ফিড থাকে। সেখানে সেসব তথ্য এবং আপডেট আসে, যেগুলি কেবল তার নিজের কাজের সাথে সম্পর্কিত।
এখন ইন্ট্রানেটের ডিজাইনও বেশ সহজ করা হয়েছে। এখানে যেকোনো তথ্য সহজে খুঁজে পাওয়ার ব্যাপারে বিশেষ নজর রাখা হয়। কাজের সময় আপনি সবকিছু এক পলকে খুঁজে পেতে চাইবেন,
যাতে বাড়তি সময় নষ্ট না হয়। নতুন ডিজাইনের ইন্ট্রানেট ঠিক সেই সুবিধাই দেবে আপনাকে।
এছাড়া আধুনিক ইন্ট্রানেট কেবল প্রতিষ্ঠানের ওপরের পদ থেকে নিচের পদে নির্দেশনা দেয়ার পদ্ধতিতে কাজ করে না। অর্থাৎ, আপনি চাইলে আপনার কলিগদের সাথে,
এমনকি ওপরের পদে থাকা বসদের সাথেও যোগাযোগ করতে পারবেন।
নিজেদের মধ্যে এভাবে কন্টেন্ট ও পোস্ট শেয়ার করার মাধ্যমে ব্যক্তিগত সম্পর্ক মজবুত করার সুযোগ তৈরি হয় ইন্ট্রানেট ব্যবহারে।
আধুনিক ইন্ট্রানেটের মাধ্যমে আরো যেসব সুবিধা পাওয়া যেতে পারে:
.
১. নিউজফিড
কোম্পানির বিভিন্ন খবর নিয়ে নিউজফিড থাকলে কর্মীরা সেখান থেকে প্রতিষ্ঠানের কাজ,
অর্জনসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে জানতে পারে। আপনি চাইলে নিউজফিডে খবর ফিল্টারও করতে পারেন। ফলে যার প্রয়োজন নেই,
তার কাছে সেই খবর যাবে না।
.
২. কনটেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম
একটা কনটেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (CMS) থাকলে কর্মীরা সেখানে তাদের দরকারি ফাইল এবং ডকুমেন্ট সুবিধামতো গুছিয়ে রাখতে পারে। এতে ফাইল খুঁজে পাওয়া সহজ হয় এবং অন্যদের সাথে শেয়ার করা যায়।
.
৩. মাইক্রো অ্যাপ এবং ইন্ট্রিগ্রেশন বা সমন্বয়
একটা আধুনিক ইন্ট্রানেট কোনো বিচ্ছিন্ন সফটওয়্যার নয়। এর সাথে আপনার প্রতিদিনকার ব্যবহৃত অ্যাপ এবং প্রোগ্রামগুলির সমন্বয় রাখা যায়।
যেমন,
ইন্ট্রানেটের সাথে মাইক্রোসফট 365 বা স্ল্যাক (Slack) এর মতো প্রোগ্রামের সংযোগ থাকা খুবই জরুরী।
এছাড়াও কর্মীরা ‘মাইক্রো অ্যাপ’ ব্যবহারের মাধ্যমে অন্যভাবেও উপকৃত হতে পারে। ‘মাইক্রো অ্যাপ’ হচ্ছে ইন্ট্রানেটের মধ্যে থাকা এমন প্রোগ্রাম, যেগুলি নিজের মতো করে তৈরি করা যায়। এটি নিজেদের মধ্যে ফিডব্যাক এবং কাজের সময় ঠিক রাখার জন্য ব্যবহার করা হয়।
.
৪. একাধিক সাইন অন করার সুবিধা
প্রত্যেক আলাদা একাউন্টে প্রতিবার পাসওয়ার্ড দিতে অনেক সময় চলে যায়। তবে ইন্ট্রানেটে থাকা ‘সিঙ্গেল সাইন অন’ এর মাধ্যমে একাধিক ডিভাইসে বার বার পাসওয়ার্ড দেয়া ছাড়াই সাইন অন করা যায়। জরিপে দেখা গেছে ৬০%
কর্মী মনে করেন, পাসওয়ার্ডের কারণে তাদের কাজে অসুবিধা হচ্ছে। তাছাড়া একাধিক পাসওয়ার্ড মনে রাখাও কঠিন। ইন্ট্রানেটে থাকা সিঙ্গেল সাইন অন সুবিধা এই ঝামেলা থেকে বাঁচায়।
.
৫. কর্মীদের ডাইরেক্টরি
কাজের সময় সঠিক মানুষের সাথে যোগাযোগ করা গেলে সবারই এতে সময় বাঁচে। কর্মীদের ডাইরেক্টরিতে আপনি সবার আপডেট করা তথ্য খুঁজে পাবেন। এছাড়াও এখানে যেকোনো কর্মীকে যতটুকু দেখার অনুমতি দেয়া হবে, ততটুকু তথ্য পাওয়ার সুযোগই তার কাছে থাকবে।
.
৬. বহুমুখী যোগাযোগের সুবিধা
যোগাযোগ হওয়া উচিৎ দ্বিমুখী। কেবল ম্যানেজারদের দিক থেকেই ক্রমাগত তথ্য আসা উচিৎ নয়। কর্মীদের ফিডব্যাক বা মতামতও ম্যানেজারদের জানা প্রয়োজন। ইন্ট্রানেটে তাই সেই ব্যবস্থাও থাকা উচিৎ।
.
৭. মোবাইল-ফার্স্ট কনটেন্ট
ইন্ট্রানেট যদি শুধু ডেস্কটপে থাকে,
তবে সেটা কেবল ডেস্কে বসা কর্মীদেরই কাজে লাগবে। ইন্ট্রানেটকে তাই মোবাইলে ব্যবহারের উপযোগী হতে হবে।
.
৮. অ্যানালিটিক্স
অ্যানালিটিক্স ব্যবহার করে আপনি জানতে পারেন নিউজফিডের কোন পোস্টের প্রতি কর্মীরা কেমন সাড়া দিচ্ছে। সেখানে কর্মীদের অংশগ্রহণ আগের চেয়ে বাড়ছে না কমছে, সেটাও তুলনা করতে পারবেন।
কোন সময়ে অ্যাপ ব্যবহার করা হচ্ছে, বা নির্দিষ্ট কোন কর্মী বা গ্রুপ বেশি সক্রিয় থাকছে,
সেটাও দেখা সম্ভব অ্যানালিটিক্স-এর মাধ্যমে। তাই ইন্ট্রানেটে অ্যানালিটিক্স সুবিধা থাকা প্রয়োজন।