Loading..

ম্যাগাজিন

১৮ জুলাই, ২০২২ ০৩:৪৭ অপরাহ্ণ

প্রযুক্তি যেভাবে জাদুঘরে প্রাণ ফিরিয়ে আনছে

প্রযুক্তি যেভাবে জাদুঘরে প্রাণ ফিরিয়ে আনছে

বিগত দুই দশক ধরে আধুনিক সমাজের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটা অঙ্গ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে প্রযুক্তি। বর্তমান পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে ডিজিটাল ডিভাইস, ইন্টারনেট বা কম্পিউটিং টুলসের ব্যবহার ছাড়া একটা জীবন কল্পনা করাই প্রায় অসম্ভব।

ব্যবসা, বিনোদন বা যোগাযোগ থেকে শুরু করে তথ্যের আদান-প্রদান পর্যন্ত প্রযুক্তির ওপর আমাদের নির্ভরতা দৈনন্দিন জীবনের প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই প্রভাব রাখছে। এটি আমাদের পৃথিবীকে দেখার এবং যোগাযোগ করার পদ্ধতিতে ব্যাপক পরিবর্তন এনেছে।

তারপরও এখনো অনেকে আছে, যারা মনে করেন জাদুঘর- প্রযুক্তির কোনো স্থান নেই। লেখায় জাদুঘরে প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। কীভাবে বিশ্বের বড় কিছু জাদুঘর তাদের দর্শকদের অভিজ্ঞতা উন্নত করতে উদ্ভাবনী ডিজিটাল সমাধান ব্যবহার করছে তা এসেছে লেখাটিতে।
.

# প্রাডো মিউজিয়াম: যাদুঘরে প্রযুক্তির ব্যবহার


অগমেন্টেড রিয়েলিটি (AR) এবং ভার্চুয়াল রিয়েলিটি (VR) এর মতো প্রযুক্তি বিশ্বজুড়ে অনেক প্রতিষ্ঠানেই ব্যবহৃত হচ্ছে। জাদুঘরের ভিতরে এবং বাইরে, উভয় ক্ষেত্রেই ইতিহাসকে আরো বাস্তবতার সাথে দর্শকদের সামনে তুলে ধরার জন্য এগুলি ব্যবহার করা হয়।

২০১৯ সালে মাদ্রিদের প্রাডো মিউজিয়াম তাদের প্রথম উদ্ভাবনী ৩৬০-ডিগ্রি ইমারসিভ এক্সপিরিয়েন্স প্রকল্প চালু করেছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে দর্শনার্থীরা প্রতিষ্ঠানটির সংগৃহীত শিল্পকর্ম নিদর্শনগুলিকে আগের চেয়ে আরো কাছ থেকে উপভোগ করতে পারে।

এই ভিআর অভিজ্ঞতা জাদুঘর কর্তৃপক্ষের পাশপাশি 'প্যাট্রন .', 'ফিইল', 'থ্রিইনটেক' 'ক্রিল অডিও' নামের চারটি শীর্ষস্থানীয় ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের সহযোগিতার মাধ্যমে সম্ভব হয়েছে।
.

# মানুষকে জাদুঘরে নিয়ে আসা


যদি সঠিকভাবে ব্যবহার করা হয়, তবে প্রযুক্তির মাধ্যমে সমাজে প্রয়োজনীয় অনেক বিষয়ে আলাপ আলোচনা চালু করা যায়। এবং মার্কেটিং টুল হিসেবেও প্রযুক্তি বেশ ভালো কাজ করতে পারে। কখনো কখনো একটি মনোযোগ আকর্ষক শব্দ বা বাক্য ব্যবহারের মাধ্যমেও জাদুঘরের ব্যাপারে লোকদের উৎসাহ সৃষ্টি করা যায়।

সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল মিউজিয়াম এমনই একটি প্রজেক্ট নিয়ে এসেছিল। তাদের "স্টোরি অফ দ্যা ফরেস্ট" নামের প্রদর্শনীতে দর্শকরা ঘন অরণ্যের রঙিন প্রজেকশন এবং শ্বাসরুদ্ধকর ডিসপ্লের মাধ্যমে অন্য জগতে পা রাখার সুযোগ পেয়েছিল। এবং একটি স্মার্টফোন অ্যাপের সাহায্যেই দর্শনার্থীরা আলোকিত গাছের মধ্যে লাফিয়ে চলা বিভিন্ন অ্যানিমেটেড প্রাণীগুলি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পারছিল।
.

# সায়েন্স মিউজিয়াম, লন্ডন


২০১৭ সালে লন্ডনের বিখ্যাত সায়েন্স মিউজিয়ামের দর্শকরা যুক্তরাজ্যের মহাকাশ ভ্রমণের সবচেয়ে বড় মাইলফলকটির সাথে নিজেদের সংযুক্ত করতে পেরেছিল। ভিআর ব্যবহারের মাধ্যমে ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থার প্রথম ব্রিটিশ মহাকাশচারী টিম পিক-এর মহাকাশ থেকে পৃথিবীতে ফিরে আসার ৪০০ কিলোমিটার দীর্ঘ যাত্রার অংশ হয়ে উঠেছিল দর্শকরাও

প্রদর্শনীতে ছিলো পিক-এর নিজর বর্ণিত একটি ১২ মিনিটের ভিডিও অভিজ্ঞতা। এবং একইসাথেসয়ুজ স্পেস ক্যাপসুল’-এর অভ্যন্তরের দৃশ্য উপভোগ করার সুযোগ।

যথাযথ প্রযুক্তি ব্যবহার না করে এমন একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করা এবং দর্শকদের এমন অভিজ্ঞতা দেয়ার ব্যাপারটা কল্পনা করাই কঠিন।
.

# মেট্রোপলিটন মিউজিয়াম অফ আর্ট, নিউইয়র্ক


কখনো কখনো জাদুঘর প্রতিষ্ঠানগুলি প্রযুক্তির উদ্ভাবনী ক্ষমতার চাইতে এর সহজে ব্যবহারের বিষয়টাকে বেশি গুরুত্ব দেয়। যেমন, কয়েক বছর আগে নিউ ইয়র্কের মেট্রোপলিটন মিউজিয়াম অফ আর্ট তাদের সংগ্রহ থেকে ৩৮০,০০০ এরও বেশি ছবি ডিজিটালাইজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। উদ্দেশ্য? শিল্পকে জনসাধারণের কাছে আরো সহজলভ্য করা।

যাদের পক্ষে জাদুঘর পরিদর্শন করার উপায় বা ক্ষমতা নেই, তাদের জন্য অসাধারণ সুযোগ ছিল এটি। ফলে দর্শকদের পক্ষে এখন তাদের নিজের বাড়িতে আরামে বসে জাদুঘরের সবচেয়ে বিখ্যাত নিদর্শনগুলি উপভোগ করা সম্ভব। এটি শুধুমাত্র জাদুঘরের সুনামই বৃদ্ধি করেনি, বরং জাদুঘরের নিদর্শনগুলিও আরো ব্যাপক আকারে দর্শকদের কাছে পৌঁছেছে।

সৌঃ সি বি

আরো দেখুন

কোন তথ্য খুঁজে পাওয়া যাইনি