Loading..

প্রকাশনা

২৩ অক্টোবর, ২০১৫ ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

অবসরসুবিধা পেতেই যত অসুবিধা : সদস্যসচিব নিয়োগ শিগগিরই
দেশের প্রায় ৭৫ হাজার শিক্ষককে অবসরের টাকার জন্য ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। গত সাড়ে চার মাস এই ভোগান্তি আরও বেড়েছে। কারণ, পদাধিকারবলে অবসরসুবিধা বোর্ডের চেয়ারম্যান শিক্ষাসচিব হলেও দাপ্তরিক কাজটি দেখাশোনা করেন সদস্য-সচিব। কিন্তু বিদায়ী সদস্য-সচিব শিক্ষকনেতা আসাদুল হকের মেয়াদ গত ১২ জুন শেষ হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এখন পর্যন্ত এই পদে কাউকে নিয়োগ দিতে পারেনি। দায়িত্বপালন করছেন অতিরিক্ত সচিব চৌধুরী মুফাদ আহমেদ। কোনো আবেদন নিষ্পত্তি করা যাচ্ছে না, উল্টো নতুন আবেদনের সংখ্যা বেড়েই চলছে। বিশ্বস্তসূত্রে জানা গেছে, জনপ্রশাসনমন্ত্রী তারই এলাকর একজন শিক্ষককে সদস্য-সচিব করার সুপারিশ করেন কিন্তু তারই এলাকার অপর একটি গ্রুপ শিক্ষামন্ত্রীর দপ্তরে গিয়ে তার বিরোধীতা করেন। এ অবস্থায় থেমে রয়েছে নিয়োগ। তবে, দৈনিক সমকাল গত সপ্তাহে একটি ভুল প্রতিবেদন প্রকাশ করে বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছেন। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সমকাল কতৃপক্ষকে জানানো হয় মন্ত্রী-সচিবে দ্বন্দ্বে সদস্য-সচিব নিয়োগ হচ্ছে না সমকালের এ খবর সবৈব মিথ্যা। প্রতিবেদকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবেন বলে মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়েছে। অবসরসুবিধা বোর্ডের একটি সূত্র জানায়, প্রায় ৪৭ হাজার বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী অবসরসুবিধার টাকা পেতে আবেদন করেছেন। এগুলোর প্রায় সবই অনিষ্পন্ন অবস্থায় পড়ে আছে। তাঁরা অবসরের টাকা কবে পাবেন, তা-ও নিশ্চিত করে কেউ বলতে পারছেন না। রাজধানীর নীলক্ষেত-পলাশীর মাঝামাঝি এলাকায় শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরো (ব্যানবেইস) ভবনে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী অবসরসুবিধা বোর্ডের কার্যালয় অবস্থিত। এখানে প্রতি কর্মদিবসে অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের ভিড় লেগে থাকছে। উল্লেখ্য, সারা দেশে বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীর সংখ্যা প্রায় পাঁচ লাখ। অবসরের পরপরই টাকা পাওয়ার কথা থাকলেও এ জন্য তাঁদের এখন চার বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। অবসরসুবিধার জন্য যে পরিমাণ টাকার প্রয়োজন, তা সরকার থেকে দেওয়া হয় না। ফলে দিনে দিনে এই জট আরও বাড়ছে। এর মধ্যে সদস্যসচিব না থাকায় বোর্ডের সভাও হতে পারছে না। আর বোর্ডের সভা ছাড়া কাউকে অবসরের টাকা দেওয়ার সুযোগও নেই। সর্বশেষ প্রায় পাঁচ মাস আগে সভা হয়েছিল। তবে ওই সভায় যাঁদের অবসরসুবিধার টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল, তাঁদের চেক যাতে দেওয়া সম্ভব হয় সে জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব চৌধুরী মুফাদ আহমেদকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তিনি শুধু অনুমোদিত চেক ও বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতনের বিলে সই করতে পারেন। জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ টাকার অভাবের কথা জানিয়ে বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের বলেন, এই পদের জন্য অনেক চাপ। তাই দেখেশুনে একজন যোগ্য লোককে নিয়োগ দেওয়ার চেষ্টা চলছে। এ জন্য সময় লাগছে। তবে আর দেরি করা হবে না। শিগগিরই কাউকে নিয়োগ দেওয়া হবে। এ বিষয়ে শিক্ষাসচিব নজরুল ইসলাম খান বলেন, যোগ্য কাউকে পাওয়া গেলে সঙ্গে সঙ্গে নিয়োগ দেওয়া হবে। প্রথা অনুযায়ী সরকার-সমর্থক শিক্ষক সংগঠনের নেতারাই এই পদ পান। বর্তমানে এই পদের জন্য কয়েকজন শিক্ষকনেতা জোর চেষ্টা করছেন। এর মধ্যে আগামী ১১ নভেম্বর বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্টের সদস্যসচিব শাহজাহান আলমের মেয়াদও শেষ হচ্ছে। এই পদ পেতেও কয়েকজন শিক্ষকনেতা চেষ্টা-তদবির করছেন। কল্যাণ ট্রাস্টের চেয়ে অবসরসুবিধা নিয়েই শিক্ষকদের ভোগান্তি বেশি। অনেক শিক্ষক টাকা পাওয়ার আগে মারা যাচ্ছেন। আবার এই টাকা তুলতে গিয়ে নানা অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, নিয়মানুযায়ী অবসরসুবিধার টাকার একটি অংশ নেওয়া হয় শিক্ষকদের কাছ থেকে। এ জন্য চাকরিকালীন তাঁদের মূল বেতনের ৪ শতাংশ টাকা কেটে রাখা হয়। বাকি টাকা সরকার ও চাঁদা জমার সুদ থেকে সমন্বয় করে দেওয়া হয়। গড়ে মাসে চাঁদা জমা পড়ে ১৭ কোটি টাকা। কিন্তু প্রতি মাসে গড়ে শিক্ষক-কর্মচারী অবসরে যান ৯৫০ জনের মতো। এই হিসাবে মাসে ঘাটতি পড়ছে প্রায় ৪০ কোটি টাকা। কিন্তু এই টাকার সংস্থান হচ্ছে না। নিয়মানুযায়ী বয়স ৬০ বছর অথবা চাকরির মেয়াদ ২৫ বছর পূর্ণ হলে বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীরা অবসরে যান। তবে কেউ মারা গেলেও নির্ধারিত পরিমাণ টাকা পাবেন। আবার অন্তত ১০ বছর পূর্ণ করে স্বেচ্ছায় অবসরে গেলে জমা হওয়া শুধু ৪ শতাংশ চাঁদার টাকা সুদসহ পাবেন। ২০০২ সালে অবসরসুবিধা বোর্ড প্রতিষ্ঠা হলেও কার্যকর হয় ২০০৫ সালে

আরো দেখুন

কোন তথ্য খুঁজে পাওয়া যাইনি