Loading..

শিক্ষায় অগ্রযাত্রা

২৮ নভেম্বর, ২০২২ ০৮:২০ অপরাহ্ণ

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষায় নিরন্তর অগ্রযাত (মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়)।

মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘প্রত্যয় একাত্তর’। ছবি: সংগৃহীতমজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীর স্মৃতিবিজড়িত ঐতিহাসিক সন্তোষে তৎকালীন ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৯ সালের ১২ অক্টোবর ‘মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের’ ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। শুরু হয় দেশের ১২তম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের পথচলা। 


মওলানা ভাসানী তাঁর জীবদ্দশায় সন্তোষে ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের উদ্যোগ নিলেও প্রাতিষ্ঠানিকভাবে এর কার্যক্রম শুরু করা যায়নি। মৃত্যুর পর তাঁর মাজার প্রাঙ্গণে তাঁরই নামাঙ্কিত বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হয়। ২০০১ সালের ১২ জুলাই জাতীয় সংসদে ‘মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০০১’ পাস হয়; যা টাঙ্গাইল শহর থেকে মাত্র ৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত। 

শিক্ষা কার্যক্রম

২০০৩-০৪ শিক্ষাবর্ষে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের অধীনে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজিএ দুটি বিভাগে ৮৩ জন শিক্ষার্থী এবং ৫ জন শিক্ষক নিয়ে ২০০৩ সালের ২৫ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। ৫৭.৯৫ একর (২৩.৩২ অধিগ্রহণকৃত) আয়তনের ওপর প্রতিষ্ঠিত এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬টি অনুষদের অধীনে ১৮টি বিভাগ চালু রয়েছে। সম্প্রতি ‘মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং’ বিভাগ খোলার অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫ হাজার ৩৪৭ জন শিক্ষার্থী রয়েছেন। যার মধ্যে স্নাতক/ইঞ্জিনিয়ারিং পর্যায়ে ৪ হাজার ৩৯২, স্নাতকোত্তর পর্যায়ে ৯১৪, পিএইচডিতে ১৫ ও পিজিডি-ইন-আইসিটিতে ২৬ জন অধ্যয়নরত। রয়েছেন ২৪৩ জন শিক্ষক, ২৫২ জন কর্মকর্তা ও ৩৬২ জন কর্মচারী। 

অবকাঠামো

বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে দুটি একাডেমিক ভবন, প্রশাসনিক ভবন, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার, সাতটি আবাসিক শিক্ষার্থী হল (দুটি নির্মাণাধীন), শিক্ষক ডরমিটরি, অতিথি ভবন, খেলার মাঠ, মেডিকেল সেন্টার, ব্যায়ামাগার, বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল, শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিস্তম্ভ, প্রত্যয় ’৭১ ভাস্কর্য, শহীদ মিনার, মুক্তমঞ্চ, বিজয়াঙ্গন ইত্যাদি। এ ছাড়া ক্যাম্পাসের অধিভুক্ত জায়গার ভেতরই মওলানা ভাসানীর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে নির্মিত ঐতিহাসিক দরবার হল, প্রখ্যাত সুফি সাধক পীর শাহ্ জামানের নামানুসারে পীর শাহ্ জামান দীঘি, মওলানা ভাসানীর মাজার, ভাসানী জাদুঘর, একটি মসজিদসহ আরও বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এই অধিভুক্ত জায়গা ছাড়াও সন্তোষের অদূরে রথখোলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-সম্পত্তি রয়েছে। 

সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আবহ: বিশ্ববিদ্যালয়টিতে রয়েছে নানা ধরনের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন, যার ভিত্তিতে শিক্ষার্থীরা তাঁদের মেধা মননের বিকাশ ও নেতৃত্ব বিকাশের সুযোগ পান। রয়েছে ড্র্রামাটিক ক্লাব, ডিবেটিং সোসাইটি, ফটোগ্রাফিক সোসাইটি, ধ্রুবতারা, রোটার‍্যাক্ট ক্লাব, সিআরসি ইত্যাদি সংগঠন শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে কাজ করে যাচ্ছে এবং বিশেষ বিশেষ দিনে সংগঠনগুলো বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। 

অর্জন ও সুযোগ-সুবিধা

বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে প্রায় ২০ হাজার বই, ৯৪১টি জার্নাল, সাময়িকী ও প্রায় ৩০ হাজার ই-বুক রয়েছে। মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিমধ্যে বিশ্বের স্বনামধন্য ১০টি বিশ্ববিদ্যালয় ও ৪টি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। ইতিমধ্যে লাইব্রেরি অটোমেশন, ই-বুক, ই-জার্নাল, আইসিটি সেল স্থাপন, ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স সেল (আইকিউএসি) স্থাপন, রিসার্চ সেলের মাধ্যমে শিক্ষকদের গবেষণা পরিচালনা, বিডিরেন কর্তৃক ইন্টারনেট সংযোগ প্রদান, বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য হায়ার এডুকেশন কোয়ালিটি এনহেনসমেন্ট প্রজেক্ট (হেকেপ) ইত্যাদি বাস্তবায়ন হয়েছে। ২০১৩ ও ২০১৬ সালে বিশ্ববিদ্যালয় অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে প্রথম ও দ্বিতীয় সমাবর্তনের আয়োজন করেছে।

প্রফেসর ড. মো. ফরহাদ হোসেন জানান ‘আমি এখানে যোগ দেওয়ার পর গবেষণার দিকে গুরুত্ব দিচ্ছি। শিক্ষার্থীরা যেন সেশনজটে না পড়ে, সেদিকেও লক্ষ রাখছি। বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে জ্ঞান সৃষ্টি ও বিতরণের জায়গা। শিক্ষার্থীদের মাঝে জ্ঞান বিতরণের জন্য আমাদের সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে, যাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নতি ও অগ্রগতি ত্বরান্বিত হয়। সবাই মিলে চেষ্টা করলে বিশ্ববিদ্যালয়কে আন্তর্জাতিক মানে নিয়ে যাওয়া সম্ভব।’ 

আরো দেখুন

কোন তথ্য খুঁজে পাওয়া যাইনি