Loading..

প্রকাশনা

১১ ডিসেম্বর, ২০২২ ০৩:১০ অপরাহ্ণ

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের দলিলপত্র

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ': 'দলিলপত্র  বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের উপর পনেরো খন্ডে রচিত একটি দালিলিক প্রকাশনা। এ দলিলপত্রাদি ইতিহাসবিদ অধ্যাপক মফিজুল্লাহ কবীর ও সাংবাদিক হাসান হাফিজুর রহমানের যৌথ নেতৃত্বে একটি প্রামাণ্যকরণ কমিটি কর্তৃক প্রণীত। প্রায় সাড়ে তিন লাখ পৃষ্ঠাব্যাপী বিপুলায়তন ও সংগৃহীত উপাত্ত থেকে নির্বাচন করে প্রামাণ্যকরণ কমিটি কর্তৃক অনুমোদনের পর কালপঞ্জি অনুসারে বিভিন্ন খন্ডে প্রকাশ করা হয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সরকারের উদ্যোগে ১৯৭৩ সালে বাংলা একাডেমীর মাধ্যমে প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধের তথ্য সংগ্রহের প্রকল্প শুরু হয়। রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শাসনামলে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে স্বাধীনতার ইতিহাস সংক্রান্ত একটি প্রকল্প প্রতিষ্ঠিত হয় এবং এর কাজ শুরু হয় ১৯৭৮ সালের জানুয়ারি থেকে। তবে প্রকল্পটি সরকারি অনুমোদন লাভ করে ১৮ জুলাই ১৯৭৮-এ বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ের গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী (নং ৫১/২/৭৮/ডেব/২৬১)। এই প্রকল্পের সদস্য সচিব হাসান হাফিজুর রহমান বাংলা একাডেমী কর্তৃক ইতোপূর্বে সংগৃহীত দলিলপত্রসমূহ স্ব-উদ্যোগে গ্রহণ করেন। রাষ্ট্রপতি এরশাদ সরকারের শাসনামলে ১৯৮২ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে খন্ডগুলির প্রকাশ শুরু হয়।

দলিল এবং তথ্য প্রামাণ্যকরণের জন্য সরকার নয় সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করেন। এর গঠনকাঠামো ছিল নিম্নরূপ: চেয়ারম্যান প্রফেসর মফিজুল্লাহ কবীর, সদস্য সচিব হাসান হাফিজুর রহমান, সদস্যবৃন্দ: প্রফেসর সালাহউদ্দীন আহমদ, প্রফেসর আনিসুজ্জামান, ড. সফর আলী আকন্দ, ড. এনামুল হক, ড. কে.এম করিম, ড. কে.এম মোহসীন ও ড. শামসুল হুদা হারুন। ইতিহাস রচনার দায়িত্বপ্রাপ্ত হলে এই কমিটি শেষ পর্যন্ত স্বাধীনতা যুদ্ধ সংক্রান্ত দলিল ও তথ্য প্রকাশকেই অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ বলে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। কিন্তু দলিলপত্র সংগ্রহের সীমা স্বাধীনতা যুদ্ধকেন্দ্রিক হওয়া সত্ত্বেও, মুক্তিযুদ্ধের পশ্চাতে বিশাল পটভূমিরও রয়েছে সমান গুরুত্ব। মুক্তিযুদ্ধকে এই পটভূমি থেকে বিচ্ছিন্ন করা যায় না। এই পটভূমির ঘটনাবলী যাকে মুক্তি সংগ্রাম বলা যায় তার অনিবার্য পরিণতি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ। অর্থাৎ মুক্তিসংগ্রামের স্বরূপ জানা ছাড়া ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধকে যথাযথভাবে ব্যাখ্যা করা অসম্ভব। এই কারণে দুখন্ডে পটভূমি সংক্রান্ত দলিলপত্র প্রকাশ করা হয়েছে। প্রধানত বিশেষ ঐতিহাসিক দৃষ্টিকোণ এবং বিষয়ভিত্তিক (themetic) ভাবে খন্ডগুলি পৃথক করা হয়েছে। যেমন, প্রথমখন্ড: পটভূমি (১৯০৫-১৯৫৮); দ্বিতীয় খন্ড: পটভূমি (১৯৫৮-১৯৭১); তৃতীয় খন্ড: মুজিবনগর: প্রশাসন; চতুর্থ খন্ড: মুজিবনগর: প্রবাসী বাঙালিদের তৎপরতা; পঞ্চম খন্ড: মুজিবনগর: বেতার মাধ্যম; ষষ্ঠ খন্ড: মুজিবনগর: গণমাধ্যম; সপ্তম খন্ড: পাকিস্তানি দলিলপত্র (সরকারি ও বেসরকারি); অষ্টম খন্ড: গণহত্যা, শরণার্থী শিবির ও প্রাথমিক ঘটনা; নবম খন্ড: সশস্ত্র সংগ্রাম (১); দশম খন্ড: সশস্ত্র সংগ্রাম (২); একাদশ খন্ড: সশস্ত্র সংগ্রাম (৩); দ্বাদশ খন্ড: বিদেশি প্রতিক্রিয়া, ভারত; ত্রয়োদশ খন্ড: বিদেশি প্রতিক্রিয়া: জাতিসংঘ ও বিদেশি রাষ্ট্র; চতুর্দশ খন্ড: বিশ্ব জনমত; পঞ্চদশ খন্ড: সাক্ষাৎকার; এবং ষোড়শ খন্ড: কালপঞ্জী, গ্রন্থপঞ্জী ও নির্ঘণ্ট। তবে পরিকল্পনায় থাকলেও ষোড়শ খন্ডটি প্রকাশিত হয় নি এবং সর্বশেষে পঞ্চদশ খন্ডটি প্রকাশিত হয় ১৯৮৫ সালে।


আরো দেখুন

কোন তথ্য খুঁজে পাওয়া যাইনি