Loading..

ম্যাগাজিন

২৯ জানুয়ারি, ২০২৩ ১১:৫৬ অপরাহ্ণ

আওয়ামী লীগ কখনো দেশ ছেড়ে পালায় না: শেখ হাসিনা

আওয়ামী লীগ কখনো দেশ ছেড়ে পালায় না: শেখ হাসিনা

২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে আবারও নৌকায় ভোট চাইলেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। রোববার রাজশাহী ঐতিহাসিক মাদ্রাসা মাঠের জনসভায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনারা জানেন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে দেশের উন্নয়ন হয়। চলতি বছরের শেষে নির্বাচন। রাজশাহীর এই বিশাল জনসমাবেশ থেকে আপনারা আমাকে কথা দিন। অতীতের মতো আগামী নির্বাচনেও নৌকায় ভোট দিয়ে উন্নয়ন অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখবেন। আমরা কথা দিচ্ছি, ২০৪১ সালে একটি উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ দেখতে পাবেন। জনতা দুই হাত তুলে সমস্বরে চিৎকার করে শেখ হাসিনার কথায় সায় দেন। 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট বলে বেড়াচ্ছে আওয়ামী লীগ পালানোর পথ পাবে না। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই-আওয়ামী লীগ কখনো দেশ ছেড়ে পালায় না। বরং দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত বিএনপি নেতারা দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন। বিএনপির উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনারা নাকি ক্ষমতায় গিয়ে দুর্নীতির বিচার করবেন। যে দলের নেতা-নেত্রীরা দুর্নীতির দায়ে জেল খাটছে, তারা কীভাবে অন্যের দুর্নীতির বিচারের কথা মুখে আনে। তারেক রহমান নাকি দেশে ফিরে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করবে। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা এসব হুমকিকে ভয় পায় না। কারণ, আওয়ামী লীগ জনগণের ভাগ্যোন্নয়নে কাজ করে, কোনো দুর্নীতি করে না। 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোববার বিকালে রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদ্রাসা ময়দানে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত বিশাল জনসমাবেশে প্রধান অতিথির ভাষণ দেন। বিকাল ৩টা ৫৪ মিনিট থেকে ৪টা ২৫ মিনিট পর্যন্ত ৩১ মিনিটের ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বিগত ১৪ বছরে দেশে এবং রাজশাহীতে যে উন্নয়ন হয়েছে, তা তুলে ধরেন। এ সময় তিনি দেশে চলমান বিএনপি-জামায়াত জোটের আন্দোলন কর্মসূচি নিয়েও কথা বলেন। 

রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জনসমাবেশে কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা বক্তব্য দেন। সঞ্চালনা করেন রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক সংসদ-সদস্য আব্দুল ওয়াদুদ দারা এবং মহানগর সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার। সমাবেশ শুরুর আগে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তার পরিবারের সদস্য এবং বিভিন্ন সময়ে শহিদ হওয়াদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। বেলা ৩টা ১২ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী সভামঞ্চে আসেন। এ সময় ঐতিহাসিক মাদ্রাসা ময়দানের সমাবেশে উপস্থিত নেতাকর্মীরা করতালি দিয়ে তাকে স্বাগত জানান। এর আগে সকালে প্রধানমন্ত্রী সারদা পুলিশ একাডেমিতে ৩৮তম বিসিএস-এর শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপারদের সমাপনী কূচকাওয়াজে প্রধান অতিথি হিসাবে যোগ দেন। পরে রাজশাহী নগরীতে পৌঁছে তিনি ১৩১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়িত ও বাস্তবায়নাধীন ৩২টি উন্নয়ন প্রকল্পের ফলক উন্মোচন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ নামের একটি স্বাধীন ভূখণ্ড আমাদের দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু খুব অল্প সময়ের মধ্যে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের অবকাঠামোসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে পুনর্গঠনে কাজ শুরু করেন। বঙ্গবন্ধু সব সময় একটি সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখতেন। বাংলাদেশকে একটি সুখী-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করতে চেয়েছিলেন। সেই লক্ষ্যে কাজও শুরু করেছিলেন। কিন্তু স্বাধীনতার মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট দেশি-বিদেশি কুচক্রীমহল বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যা করে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দেশে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়; সে কারণে মানুষকে অনেক বছর ভুগতে হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পঁচাত্তরের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের সময় ভাগ্যক্রমে আমরা দুবোন প্রাণে বেঁচে যাই। আমি দেশে ফিরতে চাইলে ওই সময় জেনারেল জিয়ার সামরিক সরকার আমাকে ফিরতে বাধা দেয়। তবুও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দেশে এসে দলের হাল ধরেছি। আমাদের নানাভাবে হয়রানি করা হয়েছে। আমরা হাল ছেড়ে দিইনি। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে দেশ ও দেশের মানুষকে সামরিক শাসনের নাগপাশ থেকে মুক্ত করতে আন্দোলন করেছি। আমরা জনগণের রায় নিয়ে ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসি। ওই সময় দেশের অর্থনীতি ভঙ্গুর অবস্থায় ছিল। দেশে ৪০ লাখ টন খাদ্য ঘাটতি ছিল। আমরা কৃষি উৎপাদন বাড়িয়ে ঘাটতি পূরণ করি। আমরা ক্ষমতায় এসে রাজশাহীসহ সারা দেশের বন্ধ কলকারখানাগুলো চালু করি। বেকারদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করি। আমরা ওই সময় মানুষকে একটি উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখাই। সেই ধারাবাহিকতায় আজ বাংলাদেশ বিশ্বের দরবারে উন্নয়নশীল দেশ হিসাবে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে।

আরো দেখুন

কোন তথ্য খুঁজে পাওয়া যাইনি