Loading..

ম্যাগাজিন

১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

শ্রেণি কক্ষ ও পড়ার টেবিলের চেয়ে মোবাইল ও Facebook-ই প্রিয় হয়ে উঠছে ছাত্রদের !

বিজ্ঞানের বিস্ময়কর ও অত্যাধুনিক অাবিস্কারসমূহের  মধ্যে মোবাইল অন্যতম ৷এটি সারা বিশ্বকে অামাদের হাতের মুঠোয় এনে দিয়েছে ৷ মোবাইলের মাধ্যমে অামরা বিশ্বে যে কোন অঞ্চলের খবরাখবর মুহুর্তের মধ্যেই নিতে পারি ৷নিঃসন্দেহে মোবাইল অামাদের জন্য অার্শিবাদস্বরূপ ৷ কিন্তু সে অার্শিবাদ কিছু ছাত্রদের জন্য দিন দিন অভিশাপে পরিনত হচ্ছে ! মোবাইল হাতে পেয়ে ছাত্ররা পড়ার টেবিলতো ছাড়ছেই তার সাথে স্কুল ফাকি  দিয়ে মোবাইলের মাধ্যমে Facebook নিয়ে ব্যস্ত থাকতে দেখা  যাচ্ছে৷ এক দল স্কুলগামী ছাত্রদের দেখা যায় স্কুলে না গিয়ে বিভিন্ন জায়গায় মোবাইল অাড্ডায় মেতে উঠছে ৷ এমনকি তারা ক্লাশ রোমে অনব কায়দায় মোবাইল নিয়ে প্রবেশ করছে ৷ শিক্ষক কিংবা স্টাফ চেক দিয়েও তাদের কাছ থেকে মোবাইল উদ্ধার করতে পারছেন না৷ সন্ধ্যার পর পর সকল ছাত্রই পড়ার টেবিলে বসা অামাদের দেশে একটি চিরাচরিত নিয়মে পরিনত হলেও এ সময় Facebook browse করা তাদের এখন একটি বিকল্প অভ্যাসে পরিণত হয়েছে ৷ Facebook হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ৷ এর মাধ্যমে পুরানো বন্ধুদের সহজে খুজে পাওয়া ও তাদের সম্পর্কে বিস্তারীত খোজ খবর,তথ্যের কিংবা বিনোদনের অাদান প্রদান ও যোগাযোগ রাখতেই মুলত অামরা Facebook ব্যবহার করে থাকি৷ কিন্তু যারা ৮ম-দশম শ্রেণিতে অধ্যয়ণরত এবং পড়াশোনা ফাকি দিয়ে Facebook  নিয়ে ব্যস্ত থাকছে তারা কোন বন্ধুদের সাথে যোগায়োগ করছে ? তারা তো প্রতিদিন বিদ্যালয়ে গিয়েই বন্ধুদের সাথে দেখা করতে ও অালাপ করতে পারছে৷ Facebook-এ ছবি দেয়া ও  ছবিতে Like  দিয়ে সময় অপচয়ের দরকার কি ? তাছাড়াও তারা তো একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গন্ডিও পার হয় নাই ৷এদের অধিকাংশের Page এর Time line এ দেখা যায় নৈতিকতার অবক্ষয় হয় এসব কর্মকান্ডই এরা বেশিরভাগ করে থাকে ৷ তা বুঝে করুক বা না বুঝেই করুক ৷ তাছাড়াও অামাদের দেশের১৮ বছরের নিচে সবাই শিশু হিসেবে বিবেচিত হলেও ভৌগলিক এবং অাবহাওয়া জনিত কারনে তাদের মানসিক বয়স অনেক বেশি বলেই মনে হয় ৷ এবার কথা হলো ছাত্ররা এ সকল স্মার্ট মোবাইল পায় কিভাবে? 
বাংলাদেশের গ্রাম গঞ্জের প্রায় ৮০%  পরিবারেরই এক বা একাধিক সদস্য বিদেশ থাকে ৷ যদি কোন পরিবারের বড় ভাই বিদেশ থাকে সে পরিবারের ছোট ভাইয়ের মোবাইল ও টাকা পেতে কোন অসুবিধা হয় না৷ বলা মাত্রই প্রবাসি বড় ভাইয়েরা ছোটদের অাকাংখা পূরণ করতে প্রস্তুত৷ অাবার কোন পরিবারের দুই তিন জন বিদেশ থাকলে বাড়িতে থাকা স্কুলগামী ছোট ভাইটি পরিবারের হর্তা কর্তা ও বুদ্ধিমান হিসেবেই ঐ পরিবারের কাছে বিবেচিত হয়৷ তাই তাদের মোবাইল ও টাকা পেতে অার কোন অসুবিধাই হয় না৷ সম্প্রতি টিভি চ্যানেল ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্কুলগামী Facebook User দের স্কুল ছেড়ে পার্ক কিংবা প্রমোদন স্থানে ঘুরাফেরা ও অশালীন কর্ম কান্ডে জড়িত থাকার বাস্তব চিত্র ফোটে উঠছে ৷ এর প্রভাব স্কুল পরীক্ষার পাশাপাশি পাবলিক পরীক্ষাগুলোতেও পরিলক্ষিত হচ্ছে৷ গত এইচএসসি পরীক্ষায় ছেলেদের তুলনায় মেয়েরাই বেশি পাস এ ভাল ফলাফল করা এর একটি বাস্তব উদাহরণ৷ শুধু তা-ই নয় বর্তমানে শ্রেণি কক্ষে ছেলেদের তুলনায় মেয়েরাই বেশি উপস্থিত থাকছে ৷Facebook ব্যবহার ছাত্রদের একটি সামাজিক ব্যাধিতে পরিনত হয়েছে ৷ স্কুলে এসে ক্লাসে ফাকে কখনো ক্লাসেই  ছাত্ররা  Facebook ব্যবহার করছে৷ পড়ার টেবিল ছেড়ে ছাত্ররা ঘন্টার পর ঘন্টা অকারনে মোবাইলে Facebook নিয়ে সময় নষ্ট করছে ৷ অন্য দিকে গ্রামের অধিকাংশ মেয়েরা স্মার্ট মোবাইল হাতে পাওয়া কিংবা Facebook তাদের কাছে অনেকটাসহজতর হয় না৷ এতে ছেলেদের তুলনায় মেয়েরাই পড়াশোনায় অধিক মনোযোগী ও এগিয়ে যাচ্ছে ৷ মেয়েরা দিনদিন নামিদামি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমনকি চাকরি ক্ষেত্রেও ছেলেদের চেয়ে এগিয়ে যাচ্ছে৷ অামি মেয়েদের এগিয়ে যাওয়াটাকে সাধুবাদ জানাচ্ছি ৷কিন্তু মোবাইল ও Facebook এর কারনে ছেলেদের পিছিয়ে যাওয়াটাকে ত্রুটিগতভাবে পিছিয়ে পড়া হিসেবেই অাখ্যায়িত করতে হচ্ছে৷ এমতাবস্থায় মাধ্যমিক শিক্ষাস্তরের এসকল ছাত্রদের বাধা কিংবা শাসন করার কেউ নেই ৷ তাই এর প্রভাব দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে ৷পিতামাতারা ব্যর্থ হয়ে শিক্ষকদের কাছে নালিশ দেন কিন্তু শিক্ষকদের হাত পা তো শিকলে বাধা ৷ ছাত্রদের এই নতুন নেশা থেকে বিরত রাখতে এ পড়াশোনায় মনোযোগী করতে ১৮ বছরের নিচে কোন শিক্ষার্থী যেন মোবাইল হাতে না পায় এবং Facebook যাতে Use করতে না পারে এর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সরকার,সচেতন সমাজ সূধী মহল ও অভিভাবকদের সুদৃষ্টি কামনা করছি ৷
মোঃমহসিন মিয়া
সহকারি শিক্ষক, ইংরেজি
বড় গোবিন্দপুর এএমবি উচ্চ বিদ্যালয়
চান্দিনা,কুমিল্লা

আরো দেখুন

কোন তথ্য খুঁজে পাওয়া যাইনি