Loading..

ম্যাগাজিন

০৭ ডিসেম্বর, ২০১৯ ১০:৫৯ পূর্বাহ্ণ

ইতিহাস ও ঐতিহাসিক স্থান

পুন্ড্র সভ্যতা ( Pundra Civilization)
রাজশাহী বিভাগের অন্তর্গত উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ঐতিহাসিক প্রাচীন জনপদ পুন্ড্রনগর অবস্থিত। প্রাচীন পুন্ড্র রাজ্যের রাজধানী পুন্ড্রবর্ধনই আজকের প্রসিদ্ধ বগুড়া জেলা। বগুড়া জেলার উত্তরে রয়েছে জয়পুরহাট ও গাইবান্ধা, দক্ষিনে সিরাজগঞ্জ ও নাটোর, পূর্বে জামালপুর জেলা ও যমুনা নদী এবং পশ্চিমে নওগাঁ জেলা রয়েছে।
সুলতান গিয়াসউদ্দীন বলবনের পুত্র সুলতান নাসির উদ্দী বগড়া ১২৭৯ থেকে ১২৮২ পর্যন্ত শাসন করেছিলেন এই অঞ্চল। তাই তার নাম অনুযায়ী এই অঞ্চলের বগুড়া নামকরন করা হয়। কাগজে কলমে বগুড়া জেলা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ১২৮১ তে। প্রাচীন রাজা মৌর্য, গুপ্ত, সেন ও পালদের প্রসাশনিক কেন্দ ছিল এই বগুড়া ।
মোট ১২ টি উপজেলা ও ৭ টি সাংসদীয় আসন নিয়ে গঠিত বগুড়া জেলার আয়তন ২৮৯৮.৬৮ বর্গ কিলোমিটার।
বগুড়া তে রয়েছে ছোট মাঝারি সহ বহুমাত্রিক শিল্প প্রতিষ্ঠান। এছাড়াও দেশের স্বাদ ও মানে বিখ্যাত দই পাওয়া যায় এই পুন্ড্র নগরে।
রয়েছে উডবার্ন পাবলিক লাইব্রেরী। যা ১৮৫৪ তে আসাম বাংলার লেফটেন্যান্ট জন উডবার্ন কতৃক প্রতিষ্ঠিত হয় এবং তার নামানুসের লাইব্রেরীর নামকরন করা হয়। বাংলা ইংররজী মিলিয়ে প্রায় ৫০০০০ বইয়ের সংগ্রহ রয়েছে লাইব্রেরীতে। প্রতিদিন প্রায় ৩০০ মানুষ জ্ঞান অর্জনের উদ্দেশ্যে আাসেন এই লাইব্রেরীতে।
এছাড়াও দেশের প্রথম ভোকেশনাল টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউট সহ কৃষি গবেষনার অংশ হিসেবে প্রসিদ্ধ মসলা গবেষনাগার আছে।
পর্যটকদের জন্যও রয়েছে বগুড়ায় নানা দর্শনীয় স্থান। অপরুপ সব স্থানের জন্য এই জেলার নাম অনেকে পর্যটন শহর ও বলেন।
অসংখ্য পর্যটন স্থানের মধ্যে যে কয়েকটার নাম না বললে এই পর্যটন শহরকে অপমান করা হয় সেই কয়েকটার নাম আপনাদের সামনে তুলে ধরছি।
১. এডওয়ার্ড পার্ক
২. খোকন পার্ক
৩. নবাব বাড়ি প্যালেস মিউজিয়াম
৪. ওয়ান্ডারল্যান্ড
৫. শহীদ চান্দু স্টেডিয়াম
৬. শাহনেওয়াজ শিশু বাগান
৭. সারয়াকান্দির গ্রোয়েন বাধ
৮. কালিতলা ঘাট
৯. প্রেম যমুনার ঘাট
১০. সান্তাহার সাইলো
১১. শেরপুর সাউদিয়া সিটি পার্ক
এই তো গেল শুধু পর্যটন কেন্দ্র। এছাড়া অতীত ইতিহাস ও ঐতিহাসিক স্থান ও রয়েছে অনেক। যেগুলো প্রাচীন পুন্ড্র বর্ধনকে আজকের বিখ্যাত বগুড়া জেলায় রয়পান্তরিত করার নৈপথ্যে বিষেশ অবদান রেখেছিল।
এমন উল্লেখযোগ কয়েকটা ঐতিহাসিক স্থান হল
১. মহাস্থানগড়
২. গোকুল মেধ ( বেহুলার বাসর ঘর)
৩. শীলা দেবীর ঘাট
৪. পরশুরামের প্রাসাদ
৫. বিহার ধাপ ( নরপতির ধাপ)
৬. যোগির ভবন
শুধু শিল্প কারখানা ও ঐতিহাসিক নিদর্শনেই শেষ নয় শিক্ষার ক্ষেত্রে ও বগুড়া জেলা এগিয়ে রয়েছে। উত্তরবঙ্গের প্রথম বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়সহ মেডিকেল কলেজ, মাধ্যমিক ও প্রাথমিক, পলিটেকনিক, ভিটিটিআই, পিটিআই, টিটিসি,আর্ট কলেজ এবং আরো অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে । ধীরে ধীরে শিক্ষায় ও দক্ষতায় এ জেলার মানুষজন নিজেদেরকে উচ্চাসনে অধিষ্ঠিত করছেন। ২০১৬ খ্রিঃ প্রতিবেদন অনুযায়ি শিক্ষার হার ৬৫.৫০ % ।
বগুড়া জেলার মানুষদের একটা আলাদা ভাষাতাত্বীক বৈশিষ্ট্য পরিলক্ষিত তাদের কথা বার্তায়।
এ অঞ্চলের মানুষেরা অধিকরন কার কে 'ত' বিভক্তিতে প্রয়োগ করে। যেমন ঘরে>ঘরত, বাড়ি>বাড়িত, হাটে>হাটোত, বগুড়া>বোগড়েত ।
নদীমাতৃক দেশ বাংলাদেশ। তারই এক উদাহরন বগুড়া জেলা। এই জেলার ভেতর দিয়ে এঁকেবেঁকে চলেছে যমুনা, বাঙ্গালী, করতোয়া, ইছামতি ও নাগর নদী। এই নদীগুলো হতে ছোট বড় নানা ধরনের মাছ পাওয়া যায়। অনেকেই এই মাছ আহরনের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন।
সৌন্দর্য ও সম্পদে সমৃদ্ধ বগুড়া শহরকে দ্বীখন্ডিত করে বয়ে চলেছেন এক সময়ের খরস্রোতা করতোয়া নদী।
এ জেলায় ঘুরতে আসা পর্যটকদের থাকার ও খাবার জন্য রয়েছে উত্তরবঙ্গের বিখ্যাত পাঁচ তারকা হোটেল মম ইন। বিলাসিতা ও সৌখিনতার জন্য 'মম ইন হোটেল এন্ড রিসর্ট' সারা দেশব্যাপী সুনাম অর্জন করেছে।
আপনি যদি একই সাথে ঐতিহাসিক ও দর্শনীয় স্থান দেখতে চান তাহলে চলে আসুন এই পুন্ড্র নগরে। একইসাথে দেখে যেতে পারবেন শত বৎসরের নিদর্শন ও জানতে পারবেন ইতিহাস ।
----কৃতজ্ঞতা ---Md Shahneoaj Bappi

আরো দেখুন

কোন তথ্য খুঁজে পাওয়া যাইনি