Loading..

প্রকাশনা

২০ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০৫:৫২ অপরাহ্ণ

শিক্ষক পরিচিতি - পন্ডিত শ্রী কার্তিক চন্দ্র চক্রবর্তী

শিক্ষক পরিচিতি - পন্ডিত শ্রী কার্তিক চন্দ্র চক্রবর্তী

 

পণ্ডিত স্যার" এতদাঞ্চলের অতি পরিচিত উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল কুমারখালী এম এন হাই স্কুল। বয়সের দিক দিয়ে যেমন বর্ষিয়ান তেমন শিক্ষাদানের ক্ষেত্রে যুগান্তকারী স্বাক্ষর বহন করে আসছে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আগেই এই স্কুলের কার্যক্রম শুরু। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম অনুমোদিত এই স্কুল। স্কুল প্রতিষ্ঠার পর থেকেই পাঠদান ক্ষেত্রে যথেষ্ট সজাগ ছিলেন শিক্ষক এবং পরিচালনা পর্ষদ। এরমধ্যে ১৯৪০ সাল থেকে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার মান দ্রুতই বাড়তে থাকে। সময় কিছু অত্যান্ত মেধাসম্পন্ন শিক্ষক এর আবির্ভাব ঘটে। তার মধ্যে অনেক জ্ঞানে গুনান্বিত একজন শিক্ষকের কথা বলছি। তিনি হলেন স্বর্গীয় পণ্ডিত শ্রী কার্তিক চন্দ্র চক্রবর্তী। জন্ম-১৯১০ সালে বর্তমানে বালিয়াকান্দি উপজেলার রামদিয়া নওপাড়া গ্রামে। পিতা- স্বর্গীয় যদুনাথ চক্রবর্তী মাতা- স্বর্গীয় নমিতা চক্রবর্তী শিক্ষা- স্থানীয় একটি স্কুলে লেখাপড়ার হাতে খড়ি।১৯২৬ সালে ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করেন এবং সাংস্কৃতি কাব্যতীর্থ বিষয়ের উপর পান্ডিত্য অর্জন করেন। ঐবছরেই কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে স্মৃতি কাব্যতীর্থের উপর বিশেষ পান্ডিত্য অর্জন এর জন্য তাকে স্বর্ণ রৌপ্য পদক ভূষিত করা হয়। এছাড়াও কাঠমুন্ডু, বেনারস এবং নবদ্বীপ থেকে পাণ্ডিত্য খেতাব অর্জন করেন। শিক্ষকতা:-১৯৪০, সালে কুমারখালী এম এন স্কুলে যোগদান করেন। শিক্ষার মান উন্নয়নের পাশাপাশি স্কুলের সম্পত্তি বেদখল থেকে দখলে আনার কাজে হাত দেন।১৯৬২ সালে সমস্ত বেদখল জমি দখলমুক্ত করতে সহযোগিতা করেন এবং স্কুলের নিয়ন্ত্রণে আনেন। পাঠদান- একজন আদর্শ শিক্ষকের সমস্ত গুনাগুন তার মধ্যে বিদ্যমান ছিল। স্কুলের শিক্ষা জীবনে তার কাছ থেকে কোন ভুল কিছু শিক্ষা পায়নি। তাৎক্ষণিক কোনো সমস্যা জানা না থাকলে পরে জেনে এসে জানাতেন। যদিও আমাদের জিজ্ঞাসার মধ্যে স্যারের অজানা বিষয় ছিল না বললেই চলে। তিনি কয়েকটি বিষয়ে যথেষ্ট পারদর্শী ছিলেন। তারমধ্যে সাংস্কৃতি ছাড়াও বাংলা, গণিত এবং ইংরেজি, স্মৃতিতীর্থ ব্যাকরণ তীর্থ জ্ঞান লাভ করেন তিনি অত্যন্ত সাধারণ জীবন-যাপন করতেন। পোশাক-পরিচ্ছদের তেমন জৌলুস দেখাতেন না। পোশাকের মধ্যে গ্রীষ্মে ধুতি পাঞ্জাবি এবং শীতে সবসময়ই একটা চাদর বা কাঁদে ভাঁজ করে রাখতেন। তিনি সুমিষ্টভাষী ছিলেন। চলাফেরা খুব ধীরলয়ে করতেন। খুব স্পষ্টভাষী ছিলেন। এক কথায় বলা যায়, একজন আদর্শ শিক্ষক সাথে একজন সুশিক্ষিত আদর্শ মানুষ ছিলেন তিনি। স্যারের জ্ঞানের পরিসীমা অনেক বিস্তৃত ছিল। ১৯৪২ সালে কুন্ডুপাড়া বসবাস রত অবস্থায় শিলাইদহ গ্রামে বিবাহ করেন। বিবাহিত জীবনের ছয় ছেলে তিন মেয়ের জন্মদাতা। বর্তমানে পাঁচ ভাই তিন বোন জীবিত। দুই ভাই দুই বোন বর্তমানে ভারতে। আর্থিক অবস্থা খুব একটা সচ্ছল ছিল না।১৯৭১ সালে আর্থিক অবস্থা অত্যন্ত নাজুক হয়ে পড়ে। কোন উপায়ন্তর না পেয়ে তিনি তাঁর মূল্যবান সম্পদ স্বর্ণপদক বিক্রি করে সংসারের ব্যয় বহন করেন। শিক্ষকতা জীবনে তিনি বেশ কয়েকজন প্রধান শিক্ষকের অধীনে শিক্ষকতা করেন। ১।প্রফুল্ল সেন ২।সুবোধ বাবু ৩।ফজলে রাব্বি ৪।মহিউদ্দিন ৫।আজহার বাগ ৫।ওবায়দুর রহমান ৬।ননী গোপাল রায়৭। শাহাদত হোসেন ৮।সৈয়দ গোলাম মোস্তফা এবং১০। খলিল উজ্জামান। শিক্ষকতা জীবন-১৯৪০ থেকে১৯৮১ সাল পর্যন্ত। মৃত্যু-১৯৮২ সালে২৪ জানুয়ারি তিনি কুন্ডুপাড়াস্ত বাসগৃহে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

আরো দেখুন

কোন তথ্য খুঁজে পাওয়া যাইনি