Loading..

খবর-দার

০৫ জুলাই, ২০২০ ০৮:৪২ অপরাহ্ণ

অনলাইন শিক্ষা যেন কোন বৈষম্য তৈরি না করে

আগামী ৭ জুলাই থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বিভাগ ও ইনস্টিটিউটে অনলাইন ক্লাস শুরু করা হবে। ঢাবির কিছু বিভাগে ইতোমধ্যে অনলাইন ক্লাস নেয়া শুরু হয়েছে। দেশের আরও অনেক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ই অনলাইন ক্লাস শুরু করতে যাচ্ছে। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আরও আগেই এ পথে হেঁটেছে। রোববার (৫ জুলাই) দৈনিক সংবাদ পত্রিকায় প্রকাশিত সম্পাদকীয়তে এ তথ্য জানা যায়। 

সম্পাদকীয়তে আরও জানা যায়, অনলাইন ক্লাস নিয়ে দেশে বিতর্ক আছে। বিতর্ক মূলত প্রস্তুতি ও সামর্থ্য নিয়ে। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইন ক্লাস নেয়ার প্রস্তুতি বা সামর্থ্য কোনটাই নেই বলে অভিযোগ রয়েছে, আবার উল্লেখযোগ্য একটি সংখ্যক শিক্ষার্থীর অনলাইনে পাঠ গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় প্রযুক্তিগত সুবিধা নেই। যাদের স্মার্টফোন বা কম্পিউটার আছে তারা ইন্টারনেটের চার্জ নিয়ে চিন্তিত। বাস্তবতা হচ্ছে, দেশের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিক্ষার্থী নিজ খরচে উচ্চশিক্ষার ব্যয় মেটায়। প্রাইভেট টিউশনি তাদের আয়ের অন্যতম উৎস। মহামারী নভেল করোনাভাইরাসের কারণে তাদের এই আয়ের উৎসেও টান পরেছে। এক জরিপে দেখা গেছে, ঢাবির একটি বিভাগের ২০ ভাগ শিক্ষার্থীরই অনলাইনে ক্লাস করার মতো ডিভাইস নেই বা ইন্টারনেটের ডেটা কেনার সামর্থ্য নেই।

দেশে ডিজিটাল বিপ্লব চলছে। অভিযোগ রয়েছে, ডিজিটাল বিপ্লব ডিজিটাল বৈষম্যের জন্ম দিয়েছে। যাদের আর্থিক সামর্থ্য নেই বা যারা প্রত্যন্ত এলাকায় বাস করেন তারা ডিজিটাল বৈষ্যমের শিকার হচ্ছেন। অনলাইন ক্লাসের মাধ্যমে এ বৈষম্য আরও তীব্র হবে বলে অনেকে আশঙ্কা করছেন। অনলাইন শিক্ষা ও পরীক্ষার নামে একশ্রেণীর প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় বাণিজ্য করছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

নভেল করোনাভাইরাসের কারণে শিক্ষাব্যবস্থা এক গভীর সংকটে পড়েছে। ক্লাস না হলে শিক্ষার্থীদের জীবন থেকে মূল্যবান সময় ঝরে যাবে। আবার অনলাইনে ক্লাস নেয়া হলে শিক্ষার্থীদের উল্লেখযোগ্য একটি অংশ বৈষম্যের শিকার হবে। আমরা বলতে চাই, গণতান্ত্রিক দেশে এমন কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত নয়, যাতে করে একজন শিক্ষার্থীও বৈষম্যের শিকার হয়। আমরা শিক্ষায় প্রযুক্তির ব্যবহারের বিরোধী নই। প্রযুক্তির ব্যবহারের আগে সব শিক্ষার্থীকে এই সুবিধার আওতায় আনতে হবে। তাদের মধ্যে ডিজিটাল ডিভাইস ইন্টারনেট সুলভ করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সব শিক্ষার্থীর কাছে ডিভাইস পৌঁছানোর উদ্যোগ নিতে পারে। এক্ষেত্রে সরকারি-বেসরকারি সহায়তা নেয়া যেতে পারে। শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে ইন্টারনেট দেয়া যায় কিনা-সেটা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করতে হবে। প্রত্যন্ত অঞ্চলে ইন্টারনেট সুবিধা সমভাবে বিস্তৃত করা জরুরি।