ভার্চুয়াল স্কুল কি-তা জানার আগে ,ভার্চুয়াল কথাটির মর্মকথা জানা দরকার-
ভার্চুয়াল রিয়ালিটি (VIRTUAL REALITY)ঃ
অপ্রকৃত বাস্তবতা বা
অসৎ বাস্তবতা (VIRTUAL
REALITY) হলো প্রকৃতপক্ষে
বাস্তব নয়, কিন্তু বাস্তব ধারনা সৃষ্টি করতে সক্ষম এমন কল্পনানির্ভর বিষয় অনুভব
করার ত্রিমাত্রিক অবস্থা উপস্থাপন ।
ভার্চুয়াল রিয়ালিটি হলো সফটওয়্যার নির্মিত একটি কল্পনিক পরিবেশ যা ব্যবহারকারীর নিকট বাস্তব জগত হিসাবে বিবেচিত হবে ।
“এটি এক ধরনের কম্পিউটার-নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থা যাতে প্রতিমা নির্মাণ (Modelling) ও ছদ্মায়ন (Simulation) পদ্ধতি প্রয়োগের মাধ্যমে মানুষ কৃত্রিম
ত্রিমাত্রিক ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য পরিবেশের সাথে সংযোগ স্থাপন করতে পারে বা উপলব্ধি
করতে পারে। অপ্রকৃত বাস্তবতাতে ছদ্মায়িত পরিবেশ হুবহু বাস্তব পৃথিবীর মত হতে
পারে। এক্ষেত্রে অনেক সময় অপ্রকৃত বাস্তবতা থেকে বাস্তব অভিজ্ঞতা পাওয়া যায়।
আবার অনেক সময় ছদ্মায়িত পরিবেশ বাস্তব থেকে আলাদা হতে পারে। যেমন: অপ্রকৃত
বাস্তবতানির্ভর কম্পিউটার খেলাসমূহ।”
উইকিপিডিয়া,
মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
VIRTUAL-শব্দের অর্থ সামনে, REALITY -শব্দের অর্থ বাস্তবতা, তাহলে VIRTUAL REALITY -শব্দের অর্থ হলো সামনের বাস্তবতা
।
আবার,
VIRTUAL-এর বাংলা; ফলত বটে
কিন্তু বাহ্যত নয় এমন; দৃশ্যত অবাস্তব হলেও কার্যত কম্পিউটার দ্বারা তৈরী কোন
কিছুর অবাস্তব অনুরুপ ।
অথবা,
এমন কিছু যা অনুভবে
আছে কিন্তু বাস্তবে নেই ।
প্রাত্যহিক জীবনে ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ব্যবহারঃ
১) উন্নত বিশ্বে
ডাক্তারদের আধুনিক মানের প্রশিক্ষণ প্রদানে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহৃত হচ্ছে।
ভার্চুয়াল অপারেটিং কক্ষে ছাত্ররা কৌশলগত দক্ষতা, অপারেশন
ও রোগ সম্পর্কিত তাত্ত্বিক বিষয়াদির কার্যপ্রণালী অনুশীলন করতে সক্ষম হন।
২) ভার্চুয়াল রিয়েলিটির মাধ্যমে
ভার্চুয়ালি ড্রাইভিং শেখানো হয়। ড্রাইভিংয়ের নানা নিয়ম-কানুন খুব সহজেই এর ফলে
আয়ত্ত করা সম্ভব।
৩) উন্নত বিশ্বের
বাণিজ্যিক বিমান সংস্থা কিংবা সামরিক বাহিনী দীর্ঘদিন ধরে বিমান পরিচালনা
প্রশিক্ষণে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহার করছে। ভার্চুয়াল রিয়েলিটি কৌশল প্রয়োগের
মাধ্যমে ফ্লাইট সিমুলেশনের ক্ষেত্রে স্বল্প খরচে বিমান চালকের প্রশিক্ষণ প্রদান
করা সম্ভব হয়।
৪) বিভিন্ন ধরনের
সামরিক প্রশিক্ষণে ভার্চুয়াল রিয়েলিটিকে গুরুত্বের সাথে ব্যবহার করা হয়।
৫) ব্যবসা-বাণিজ্যে
সামরিক রিয়েলিটি ব্যবহার করে তথ্য ও যোগযোগ ব্যবস্থাকে আরও সহজ করা হয়েছে।
৬) মহাশূন্য অভিযানের
প্রতিটি পর্বেই রয়েছে নানা ধরনের ঝুঁকি। প্রস্তুতিপর্বের নানা গুরুত্বপূর্ণ
পরীক্ষা নিরীক্ষা,
নভোচারীদের কার্যক্রম, নভোযান পরিচালনা
সম্পর্কিত যাবতীয় খুঁটিনাটি বিষয়গুলো সম্পর্কে প্রশিক্ষণে তাই ভার্চুয়াল রিয়েলিটি
বিশেষ স্থান করে নিয়েছে ।
মাইকেল হাইম তার বিখ্যাত গ্রন্থ The
Metaphysics of Virtual Reality
(অপ্রকৃত বাস্তবতার অধিবিদ্যা)-নিচের সাতটি ধারনার কথা নির্দিষ্ট করেছেনঃ
১) ছদ্মায়ন (simulation)
২) মিথস্ক্রিয়া (interaction)
৩) কৃত্রিমতা (artificiality)
৪) নিমজ্জন (immersion)
৫) কৃত্রিম ত্রিমাত্রিক জগত বা দূর উপস্থিতি (telepresence)
৬) সমগ্র দেহের নিমজ্জন (full-body immersion)
৭) নেটওয়ার্ক সংযুক্তি (network
communication)
এবং, আরো অনেক ধরণের
উদ্দেশ্যে এই ভার্চুয়ালরিয়েলিটি প্রযুক্তির ব্যবহার করা হয়।ভার্চুয়াল রিয়েলিটি
প্রযুক্তির এমনিতে লাভ ও সুবিধে প্রচুর রয়েছে।
এর মধ্যে কিছু সুবিধে ও লাভ গুলো হলো :
শিক্ষা এবং ট্রেনিং এর
ক্ষেত্রে ভার্চুয়াল রিয়েলিটির মাধ্যমে প্রচুর লাভ হচ্ছে।
একটি কাল্পনিক জগতে
গিয়ে, সেই পরিবেশের অনুভব
নেওয়াটা সম্ভব।
ট্রেনিং এবং
প্রশিক্ষণের সময় আপনি সম্পূর্ণ সুরক্ষিত থাকবেন।
আধুনিক গেমিং (Gaming) এর ক্ষেত্রে অনেক
লাভজনক।
বিভিন্ন ক্ষেত্রের
পরিকল্পনা (planning) করার জন্য অনেক
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
তাহলে, এগুলি হলো ভার্চুয়াল
রিয়েলিটির কিছু লাভ এবং সুবিধা।
শিক্ষার
ক্ষেত্রে (Education)
ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ব্যবহারঃ
শিক্ষার
ক্ষেত্রে (Education) ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ব্যবহার দিন দিন
বৃদ্ধি পাচ্ছে । বিশ্ব মহামারি করোনা
ভাইরাসের
কারনে যখন শিক্ষার্থী-শিক্ষক কেউই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে পারছেন না , সেক্ষেত্রে
ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে শিক্ষা কার্যক্রম চালানোই উত্তম ।
তাই শিক্ষার নুতন ধারা, virtual
school or e-school or cyber-school- দিন
দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে । এক্ষেত্রে সরকার এর পাশা-পাশি অনেক শিক্ষানুরাগী ব্যক্তি ও
প্রতিষ্ঠান নানা উদ্যোগ গ্রহন করেছেন । শিক্ষার এই অগ্রযাত্রা নতুন আলোর পথ
দেখিয়েছে । যারা ভূমিকা রেখেছেন তাদের সবাইকে ধন্যবাদ ।
মোঃ আবতাবুল আলম
প্রভাষক(অর্থনীতি)
জনতা কলেজ
ডিমলা, নিলফামারী ।